নীতি দুর্নীতি অর্থনীতি
ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে হবে
ড. আর এম দেবনাথ
প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে ধারণা করেছিলাম, কেউ না কেউ বাণিজ্যের ওপর প্রশ্ন করবেন। বাণিজ্য মানে ঘাটতি বাণিজ্য (ডেফিসিট)। কিন্তু না, এমন কোনো খবর চোখে পড়েনি। অথচ এটি আমাদের কাছে, অনেকের কাছে বেশ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, আবেগের বিষয়ও। অনেকের কাছে রাজনৈতিক ইস্যু। তারা ব্যবসা-বাণিজ্যকে রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে ফেলেন। যেভাবেই হোক না কেন, বিষয়টি আমাদের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ, বহুল চর্চিত বিষয়। সীমান্ত হত্যা সম্পর্কেও জোরালো কোনো প্রশ্ন বা উত্তর দেখলাম না। অথচ এটিও আবেগের বিষয়, ক্ষোভের বিষয়। তবে দেখলাম প্রশ্নে ও উত্তরে আছে যথারীতি তিস্তার পানির বিষয়। তিস্তা চুক্তি ঝুলে আছে অনেকদিন। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এর সমাধান চায়, এবার যে ‘ভিজিট’ প্রধানমন্ত্রী দিল্লিতে করেছেন, সেখানেও দেখলাম তিস্তা আছে। কেউ কেউ মনে করতেন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির আপত্তির কারণেই কেন্দ্রীয় সরকার এগোতে পারছে না। আবার বাংলাদেশের অনেক মানুষের ধারণা, কেন্দ্রীয় সরকার চাইলে প্রাদেশিক সরকার আবার কে? এ বিষয়টি এবার কিছুটা পরিষ্কার হয়েছে। আমাদের কাগজগুলোতে মমতার আপত্তি সম্পর্কিত একটা চিঠির খবর ছাপা হয়েছে। তিনি কেন্দ্রীয় সরকারকে তার জোর আপত্তির কথা জানিয়েছেন। তার কথা হচ্ছে, বাংলাদেশকে পানি দিলে পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাঞ্চলে খরা দেখা দেবে। সেচ-সুবিধা, এমনকি খাবার জলেরও অসুবিধা হবে। অতএব, কোনো কিছু করার আগে মমতার সঙ্গে কথা বলতে হবে। এদিকে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার বলেছে, যতটুকু যা এগিয়েছে তাতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অংশগ্রহণ ছিল।
এসব তর্ক-বিতর্কে আমাদের প্রধানমন্ত্রী জড়াননি। তিনি তিস্তা সম্পর্কে তার মতামত বিশদভাবে সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেছেন। বলেছেন, চীনের প্রস্তাব আছে, ভারতেরও আছে। দেশের কাছে যেটা গ্রহণযোগ্য হবে, তা-ই করা হবে। নিজেদের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে কিছুই করা হবে না। এ প্রসঙ্গেই তিনি কিছু বাস্তবতার কথা তুলে ধরেছেন, যা আমাদের কাছে বিবেচনার বিষয়। তিনি বলেছেন, তিস্তার পানির বিষয়টি শুধু ভাগাভাগির বিষয় নয়। মূল সমস্যা তিস্তায় পানির সরবরাহ বাড়াতে হবে। সেখানে সরবরাহ কম। এছাড়া যা বাংলাদেশে কেউ ‘লজ্জায়’ অথবা অন্য কারণে বলতে চান না, তার উল্লেখও তিনি করেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন, চীনেও পানি তুলে নেওয়া হচ্ছে। এর দ্বারা তিনি কী বোঝাতে চেয়েছেন তা মোটামুটি পরিষ্কার। বোঝা যাচ্ছে, ৫৪টি সীমান্তবর্তী নদীর সমস্যার সঙ্গে তিস্তার সমস্যা যেমন দ্বিপাক্ষিক সমস্যা, তেমনি এটির আন্তর্জাতিক/আঞ্চলিক দিকও আছে। পানির সমস্যা আমাদের ক্ষেত্রে নয় শুধু, ভারতের প্রদেশগুলোর মধ্যেও দক্ষিণাঞ্চলে সমস্যা আছে। আর আমাদের সমস্যার যে আঞ্চলিক দিক আছে, তার সঙ্গে চীন, নেপাল, ভারত ও বাংলাদেশ জড়িত। দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য দরকার আঞ্চলিক সহযোগিতা। আঞ্চলিক সহযোগিতা শুধু পানির ক্ষেত্রে নয়; বিদ্যুৎ, খনিজসম্পদ, বাণিজ্য, যোগাযোগ সর্বত্রই দরকার আঞ্চলিক সহযোগিতা-বৃহত্তর ‘কানেকটিভিটি’। এর জন্যই এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ‘সার্কের’ পাশাপাশি উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতার কথা বলছে। দৃশ্যত আমরাও সেই পথেই আছি। রেল, সড়ক, নদীপথ ও সমুদ্রপথে আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও ভারত প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিয়েছে।
আমাদের সরকার রেলের ক্ষেত্রে অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছে। ১৯৬৫ সালের পর যে রেলপথগুলো বন্ধ হয়ে গেছে, ধীরে ধীরে সেসব ‘রুট’ চালু করা হচ্ছে বলে প্রধানমন্ত্রী তার সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেছেন। শত সমালোচনার মুখেও সরকার তার আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্র সম্প্রসারিত করছে, যা প্রশংসনীয়। ত্রিপুরা থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ আসছে। নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আসবে-এ ব্যাপারে সহমত স্থাপিত হয়েছে। নেপাল-বাংলাদেশ রেল চালু হবে। তা হবে ভারতের মধ্য দিয়ে। পাশাপাশি ভারতও বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করে তাদের নিজেদের রাজ্যগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধি করছে। ভারতের পূর্বাঞ্চল আজ শান্ত। এটা বাংলাদেশের অবদান। সেখানে ভারত উন্নয়নের কাজ চালাতে পারছে। এদিকে ৭০-৭৫ বছরের সীমান্ত সমস্যা অর্থাৎ ছিটমহল সমস্যা পারস্পরিক সন্তুষ্টির মধ্যে শেষ হয়েছে। সমুদ্র সীমানা চিহ্নিত হয়েছে। এসব বিষয় আমাদের জানা এবং দুদেশের মধ্যে সম্পর্কের যে উন্নতি ধীরে ধীরে নতুন নতুন উচ্চতায় উঠছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে দুদেশের লক্ষ্য হচ্ছে-আমাদের ‘স্মার্ট বাংলাদেশ-২০৪১’ এবং ভারতের ‘বিকশিত ভারত-২০৪৭’। রয়েছে দুদেশের মধ্যে ‘সেপা’ (কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট)। দেখা যাচ্ছে, মাত্র দুদিনের সফরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আলোচ্য বিষয়ের মধ্যে ছিল : সমুদ্র অর্থনীতি, সমুদ্রসম্পদ, রেলওয়ে সংযোগ, ডিজিটাল অংশীদারত্ব, স্বাস্থ্য-ওষুধ-চিকিৎসা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও মৎস্য। মোট ১০টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর মধ্যে সাতটি সম্পূর্ণ নতুন এবং তিনটির নবায়ন। এদিকে আলোচনায় এসেছে ১৯৯৬ সালের গঙ্গার পানি চুক্তি, যার মেয়াদ ২০২৬-এ শেষ হচ্ছে। এর নবায়ন এখন সময়ের বিষয়। অবশ্যই এ চুক্তির খুঁটিনাটি উভয়পক্ষ আবার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এগোবে। দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে ভারত মহাসাগরসহ সমুদ্র ব্যবহারের নীতিমালার বিষয়ে একমত হয়েছে। সমুদ্রের ব্যবহার হবে আন্তর্জাতিক নিয়ম-কানুনের মধ্যে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনায় এসেছে, যা আমাদের এখানে বলা হচ্ছে না। তা হচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের সরবরাহের বিষয়। কয়েকটি পণ্য আমাদের দরকার, যা আমরা আমদানি করি বিভিন্ন দেশ থেকে। যেমন-চাল, গম, চিনি, পেঁয়াজ, আদা, রসুন ইত্যাদি। এসব পণ্যের আমাদের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ চাই। বেশ কিছুদিন ধরেই এসব পণ্যের কোটাভিত্তিক একটা নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহের নিশ্চয়তা আমরা চেয়ে আসছি। দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে এই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি আলোচিত হয়েছে এবং সহমত পাওয়া গেছে। এটি আমাদের ভীষণ কাজে আসবে। আমাদের মূল্যস্ফীতি এখন ১০ শতাংশের কাছাকাছি। ভোগ্যপণ্যের ঘাটতি আছে। মাঝেমাঝেই এসবের সংকট হয়। একশ্রেণির ব্যবসায়ী এর সুযোগ নিয়ে ফায়দা লুটতে চায়। আশা করা যায়-চাল, গম, চিনি, আদা, রসুন, পেঁয়াজ ইত্যাদি পণ্যের সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন থাকবে। দেখা যাচ্ছে, সিরাজগঞ্জে ভারত আমাদের জন্য একটি অভ্যন্তরীণ কনটেইনার তৈরি করে দেবে। এটা হবে তাদেরই সহায়তায়। ভারতের দুটি ‘স্পেশাল ইকোনমিক জোন’ বাংলাদেশে আছে। অবিলম্বে এ দুটি স্পেশাল ইকোনমিক জোন চালুর বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনের খবরে দেখলাম, ২০১৯ থেকে ২৪ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীদের দেখা-সাক্ষাৎ ঘটেছে ১০ বার, যা বিরল ঘটনাই বটে। একথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘ভারত সবচেয়ে বড় প্রতিবেশী এবং বিশ্বস্ত বন্ধু।’ আবার তিনি এও উল্লেখ করেছেন যে, তিনি চীনে যাচ্ছেন। চীন থেকে অনেক কিছু শেখার আছে বলেও তিনি উল্লেখ করেছেন।
এসব খবর সংবাদপত্রে দেখলাম। সীমান্ত বাণিজ্য সম্পর্কে কথা না থাকলেও ‘সীমান্ত হত্যা’ সম্পর্কে আলোচনা হয়েছে। বিষয়টি বড়ই স্পর্শকাতর। আবেগের। কোনোভাবেই সীমান্তে গুলিজনিত কারণে আমাদের কোনো নাগরিক মারা যাক, এটা কাম্য নয়। এটা গর্হিত কাজ। দেখা যাচ্ছে, সীমান্ত হত্যার বিষয়ে, এটা শূন্যে নামিয়ে আনতে দুই পক্ষই একমত হয়েছে। আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করলে তা সম্ভব হতেও পারে। তবে এক্ষেত্রে আমার একটা সুপারিশ আছে। ‘সীমান্ত হত্যা’ প্রধানত ঘটে অবৈধ অনুপ্রবেশকে কেন্দ্র করে। চোরাচালান হচ্ছে প্রধান অন্তরায়। যেমন, এ মুহূর্তে সিলেট সীমান্ত দিয়ে সমানে চিনি চোরাচালান হয়ে আসছে। পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে বহু গরু/পশু সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে আনার ফলে আমাদের খামারিদের প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। সাতক্ষীরা থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পর্যন্ত বিস্তীর্ণ সীমান্তে হরেদরে চোরাচালান হচ্ছে। সোনা চোরাচালান নিত্য ঘটনা। সাম্প্রতিককালে একজন সংসদ-সদস্য হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিষয়টি এখন ব্যাপক আলোচিত। এ চোরাচালান আজকের সমস্যা নয়। ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের পর সীমান্ত সৃষ্টির পর থেকেই এ সমস্যা দিন দিন বাড়ছে। কোনো প্রশাসনিক ব্যবস্থাই তা রোধ করতে পারছে না। এর ফাঁকেই ঘটছে নিন্দনীয় সীমান্ত হত্যার মতো ঘটনা। আমার ধারণা, বাংলাদেশ ও ভারতের বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নতুন ধারণা যোগ করতে হবে। ‘সীমান্ত বাণিজ্য’ চালু আছে। সীমান্তের অনেক জায়গায় বাজার আছে, যেখানে বাংলাদেশ ও ভারতের পণ্য বিনিময় হয়। এটা উত্তম একটা ব্যবস্থা। আমি মনে করি, এ ব্যবস্থাটিকে আরও সহজ ও সম্প্রসারিত করতে পারলে অনেক সমস্যার সমাধান হবে। দুনিয়ার অনেক দেশেই আজকাল ‘ফ্রি ট্রেড’ হচ্ছে। ভারত, ভিয়েতনাম ইত্যাদি দেশও এতে আছে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে, এমনকি ‘সার্ক’ দেশগুলোর মধ্যে ‘ফ্রি ট্রেডের’ কথা হয়েছিল একবার। বিষয়টি এগোয়নি। এই ‘ফ্রি ট্রেড’ কার কার সঙ্গে হতে পারে, তা জোর দিয়ে আবার বিবেচনা করা দরকার। এমনিতেই বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) কল্যাণে বাণিজ্য বাধা উঠে যাচ্ছে। উদার হচ্ছে বিশ্ব। আমদানি-রপ্তানি বিধি-নিষেধমুক্ত হচ্ছে। শুল্ক তুলে দিতে হচ্ছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটেও তা করা হয়েছে। যদি তাই হয়, অর্থনৈতিক সীমান্তও যদি না-ই থাকে, তাহলে ‘ফ্রি ট্রেডে’ যেতে বাধা কোথায়? এতে চোরাচালান কমে বা বন্ধ হয়। হুন্ডি ব্যবসা বন্ধ হয় বা হ্রাস পায়। সীমান্ত হত্যা বন্ধ হয়। বিষয়গুলো এখন বিবেচনায় আনা দরকার।
এবার যে কথা দিয়ে আলোচনা শুরু করেছিলাম, সেদিকে ফিরে যাই। ঘাটতি বাণিজ্য বা ডেফিসিট ট্রেড। এটা আমাদের দেশে অনেকের কাছেই সমস্যা। এই তো সেদিন (২৪.০৬.২০২৪) কাগজে দেখলাম আমাদের বাণিজ্য হয় ২১০টি দেশের সঙ্গে। ৮২টি দেশের সঙ্গে আমাদের ঘাটতি বাণিজ্য। সবচেয়ে বেশি ঘাটতি চীনের সঙ্গে, যে কথা কেউ বলতে চায় না। তাদের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি ২০২২-২৩-এ ছিল ১৭ বিলিয়ন ডলারের উপরে। আর ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি ওই বছর ছিল ৭ বিলিয়ন ডলার। সার্কের দেশগুলোর মধ্যে মালদ্বীপ, শ্রীলংকা ও নেপাল বাদে সবার সঙ্গেই আমাদের বাণিজ্য ঘাটতি। কারও সঙ্গে ঘাটতি, কারও সঙ্গে উদ্বৃত্ত-এতে সার্বিকভাবে আমাদের বাণিজ্য ঘাটতি ২০২২-২৩ সালে ছিল ১৫ বিলিয়ন ডলারের উপরে (এক বিলিয়ন সমান শতকোটি)। আমেরিকা, ইউরোপের দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত। আবার তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর কাছে আমরা ঘাটতি দেশ। তাহলে করণীয় কী? করণীয় হচ্ছে, যাদের সঙ্গে ঘাটতি তাদের বলা আমাদের পণ্য বেশি বেশি নিতে। এর জন্য চীন ও ভারত শুল্কমুক্ত সুবিধা দিয়ে রেখেছে। কিন্তু আমাদের রপ্তানিযোগ্য পণ্য কোথায়? ৫০-৫২ বছরে রপ্তানি ক্ষেত্রে আমাদের তা বিলীন হচ্ছে, পাট যায় যায়। নতুনের মধ্যে আছে এখন তৈরি পোশাক। আর কী আছে? এখন উলটো প্রশ্নও আছে। আমেরিকা যদি বলে-আমাদের সঙ্গে তোমাদের উদ্বৃত্ত, আমাদের পণ্য নিতে হবে, তাহলে কী দাঁড়াবে? আসলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য খাতিরে হয় না। প্রয়োজনে হয়। যার যেখান থেকে ইচ্ছা আমদানি করবে, যেখানে ইচ্ছা রপ্তানি করবে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা তা-ই বলছে। করণীয় কী তাহলে-খোঁজা দরকার।
ড. আর এম দেবনাথ : অর্থনীতি বিশ্লেষক; সাবেক শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়