মিঠে কড়া সংলাপ
আসুন অন্তত এ উদাহরণটি অনুসরণ করি
ড. মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন
প্রকাশ: ১৫ জুন ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
এবারের লোকসভা নির্বাচনেও ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) জয়লাভ করায় পরপর তিন দফায় নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রীর চেয়ার অলঙ্কৃত করে এক্ষেত্রে তিনি স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর রেকর্ড স্পর্শ করলেন। যদিও এবারে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় সরকার গঠনের জন্য বিজেপিকে তার মিত্র বা জোটের শরণাপন্ন হতে হয়েছে এবং এক্ষেত্রে কিছুটা কসরতও করতে হয়েছে। কারণ, বিজেপি জোটের দুটি দলকে টার্গেট করে কংগ্রেসের রাহুল গান্ধী যেভাবে ছোটাছুটি শুরু করেছিলেন, তাতে করে দল দুটিকে জোট থেকে ছুটিয়ে আনতে পারলে কংগ্রেসও হয়তো কোয়ালিশন সরকার গঠন করতে পারত; কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। কারণ, রাজনৈতিক দাবার চালে কংগ্রেস এখন অনেকটাই দুর্বল। তাদের দলে ঝানু রাজনীতিকের সংখ্যাও আগের তুলনায় অনেক কম। সুতরাং, যা ঘটার তা-ই ঘটেছে, মোটামুটি স্বাভাবিকভাবেই নরেন্দ্র মোদির বিজেপি সরকার গঠন করেছে। যাক সে কথা। আজকের লেখার মূল উদ্দেশ্য ভারতের নির্বাচন, তথা নির্বাচন কমিশন নিয়ে। সেই সুযোগে আমাদের দেশের নির্বাচন নিয়েও কিছু বলার ইচ্ছা আছে।
ভারতের সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার টিএন সেশন দেশটির নির্বাচন কমিশনকে একটি শক্ত অবস্থানে আনার ক্ষেত্রে যে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছিলেন, তা একটি ইতিহাসে পরিণত হয়েছে। তার কর্মোদ্যম, কর্মদক্ষতার কারণেই সেদেশে নির্বাচনের দিন একজন সাধারণ স্কুলশিক্ষককেও কেউ কোনোভাবে দায়িত্ব, কর্তব্যচ্যুত করতে পারে না। কোনো প্রার্থী বা দলের পক্ষেই কোনো নির্বাচনি কর্মী বা কর্মকর্তাকে প্রভাবিত করে সেখানে কোনো কিছু করা সম্ভব নয়। কারণ, নির্বাচন অনুষ্ঠানকে তারা একটি পবিত্র কর্ম ও কর্তব্য বলে মনে করেন। শত প্রলোভন ও ভয়ভীতিতেও কোনো পোলিং অফিসার, প্রিসাইডিং অফিসারকে প্রভাবিত করে কোনো প্রার্থী বা দল নির্বাচনি ফায়দা লুটতে না পারায় সেদেশের নির্বাচন নিয়ে কোনো কারচুপির অভিযোগ শোনা যায় না। নির্বাচনের সময় বা পরে কোনো প্রার্থী বা দলকেও কারচুপিসংক্রান্ত হইচই করতে শোনা যায় না। কারণ তারা জানেন, নির্বাচন কমিশন সঠিকভাবেই নির্বাচন অনুষ্ঠান করেছে। আর নির্বাচন কমিশনও সেই বিশ্বাস অর্জন করেছে। ফলে সব দলই নির্বাচনি ফলাফল মাথা পেতে মেনে নেয়। নির্বাচন শেষে একজন পরাজিত প্রার্থী বিজয়ী প্রার্থীকে অভিনন্দন জানাতেও কুণ্ঠাবোধ করেন না। এমনকি ভোট গণনার মাঝপথেও অনেকে পরাজয় স্বীকার করে নেন। আর এসবই সম্ভব হয় নির্বাচন কমিশনের বলিষ্ঠতা, সততা, নিরপেক্ষতা এবং নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের কারণে। নির্বাচন কমিশন তাদের কাজে নিরপেক্ষতা, সততা, বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখে বলেই নির্বাচনি কারচুপি নিয়ে সেখানে কোনো শোরগোল নেই। নির্বাচন কমিশনের কাউকে নিজ দল বা প্রার্থীর পক্ষে কাজে লাগানো সম্ভব হয় না বলেই নির্বাচনের পর সে দেশের পরিবেশ শান্ত থাকে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ নির্বাচনি কাজে নিয়োজিত সব সরকারি কর্মচারী-কর্মকর্তা নিরপেক্ষ থাকেন বা নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নিরপেক্ষ রাখা সম্ভব হয় বলেই সে দেশে নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। এবারের নির্বাচনেও এর ব্যত্যয় ঘটেনি। ফলস্বরূপ নির্বাচন শেষে নরেন্দ্র মোদিকে যখন তার দলের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হলো, সেই সংবর্ধনা মঞ্চে দাঁডিয়ে তাকে অত্যন্ত সহজ ও সাবলীল ভঙ্গিতে বলতে শোনা গেল, ‘ভারতীয় নির্বাচনব্যবস্থা তথা গণতন্ত্র তাদের দেশের জন্য একটি বিরাট শক্তি।’ আর এ কথাটি বলার পর তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যক্তি, দল বা মিডিয়ার পক্ষ থেকে টুঁ শব্দটিও করা হয়নি।
এক্ষেত্রে ভারতের নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে দু-একটি উদাহরণ তুলে ধরলে আরও পরিষ্কারভাবে বোঝা যাবে তারা কোন পথে এবং কীভাবে মেরুদণ্ড সোজা রেখে দায়িত্ব পালন করেন। উল্লেখ্য, এক সময় ভারতীয় নির্বাচন কমিশনকেও সরকারের লেজুড় বলে মনে করা হতো! অতঃপর ১৯৯০ সালে চন্দ্রশেখর প্রধানমন্ত্রী থাকাবস্থায় বাণিজ্যমন্ত্রী সুব্রমনিয়াম স্বামীকে টিএন সেশনের বাসায় পাঠিয়ে তাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব গ্রহণের অনুরোধ জানান। মি. সেশন যখন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়র ছাত্র, সে সময়ে মি. স্বামী সেখানকার শিক্ষক ছিলেন। তখন থেকেই তারা পরিচিত এবং কিছুটা ঘনিষ্ঠ ছিলেন। যা হোক, মি. সেশন তার প্রস্তাবে হাঁ বা না কিছুই না বলে কয়েকদিন সময় চেয়ে নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনার পর একপর্যায়ে তিনি সে সময়ের বিরোধীদলীয় নেতা রাজীব গান্ধীর বাসায় গিয়ে তার সঙ্গে পরামর্শক্রমে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। অতঃপর সেই তিনিই নির্বাচন কমিশনকে সরকারি লেজুড়বৃত্তির তকমামুক্ত করে ইতিহাস সৃষ্টি করেন।
টিএন সেশন ভারতীয় প্ল্যানিং কমিশনের সদস্য ছিলেন। অন্য কোনো পদ-পদবির প্রতি আগ্রহ ছিল না বলে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদের জন্য প্রস্তাব পাওয়ার পরও তিনি উৎসাহ দেখাননি। তারপর অনেক ভেবেচিন্তে, বুঝেশুনে তবেই তিনি সম্মতি প্রদান করেছিলেন এবং অতঃপর যা করেছিলেন তার সম্পূর্ণটাই একটি ইতিহাস। নির্বাচন কমিশনকে সম্পূর্ণ স্বাধীন করতে সরকারের কোনো ফরমায়েশ শুনতেন না বলে চন্দ্রশেখরের সরকার নতুন করে আরও দুজন নির্বাচন কমিশনার সেখানে বসিয়ে দিয়েছিলেন। সে অবস্থায় একবার তাকে বিদেশ যেতে হওয়ায় তিনি সেসব নির্বাচন কমিশনারের কাউকে দায়িত্ব না দিয়ে একজন উপনির্বাচন কমিশনারকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে বিদেশ গমন করেন। যদিও এ নিয়ে পরে অনেক হইচই, ঝুট-ঝামেলা এমনকি আদালতে মামলা পর্যন্ত হয়েছিল, কিন্তু মি. সেশন সেসব মোকাবিলা করেই ভারতীয় নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা অক্ষুণ্ন রেখেছিলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার পদে সমাসীন থাকাবস্থায় কোনো কোনো ক্ষেত্রে নির্বাচনে অনিয়ম হওয়ায় তিনি বহু রথী-মহারথীর নির্বাচনি ফলাফল বাতিল করে দিয়েছিলেন, অনেক নির্বাচন স্থগিত করে দিয়েছিলেন, যার ফলে প্রণব মুখার্জির মতো কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর মন্ত্রিত্ব পর্যন্ত বাধাগ্রস্ত হয়েছিল।
আর আমাদের দেশে এসব ক্ষেত্রে কী হয় বা হচ্ছে, সে বিষয়ে এখানে কিছুটা আলোচনা করা বোধহয় অপ্রাসঙ্গিক হবে না। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভের পর আমাদের দেশে যতগুলো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, তার কোনোটি বা কয়টি অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়েছে, তা সঠিকভাবে বলতে গেলে লোম বাছতে কম্বলের অবস্থা হবে! সুতরাং, সেদিকে না যাওয়াই ভালো। বরং স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর এক্ষেত্রে আমাদের কতদূর কী অগ্রগতি হয়েছে, সেদিকেই না হয় দৃষ্টি দেওয়া যাক। এক্ষেত্রে ২০২৪ সালের নির্বাচনের উদাহরণ টানাই যুক্তিযুক্ত। ২০২৪ সালে আমাদের দেশে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে গেল, সেই নির্বাচনে কত শতাংশ ভোটার ভোটকেন্দ্রে গিয়েছেন, কতজন সর্বনিম্ন ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীই কে বা কারা ছিলেন-এসব বিষয়সহ আনুষঙ্গিক আরও কিছু বিষয় আলোচনা করার প্রয়োজন হলেও সব বিষয়ে কথা বলা সম্ভব নয়। তবুও বিষয়টি নিয়ে যতদূর সম্ভব বলা প্রয়োজন মনে করি। অন্যথায় নির্বাচন কমিশনসহ অন্যরা কোনোদিনই ভুল ধারণা থেকে বের হয়ে আসতে পারবেন না।
এক্ষেত্রে প্রথমেই যে কথাটি উল্লখ করতে চাই তা হলো, দেশে আওয়ামী লীগের ভোটব্যাংক কত? আওয়ামী লীগের গবেষণাই বা এ বিষয়ে কী বলে? আমি একসময় আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সেলে কাজ করতাম বিধায়, সে সময়ের দলীয় সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল আমাকে আওয়ামী লীগের রিজার্ভ ভোটসংক্রান্ত একটি রিপোর্ট প্রস্তুত করে তাকে দিতে বলায় আমি একটি কার্যপত্র তৈরি করে তার হাতে দিয়েছিলাম। সেখানে আমি আওয়ামী লীগের রিজার্ভ ভোট ৩৯ শতাংশ দেখিয়েছিলাম। তাছাড়া আমার নিজ নির্বাচনি এলাকা পাবনা-৫ আসনের একটি ম্যাপ এঁকে সেখানে কোন এলাকায় জামায়াত-শিবির বা বামপন্থি-সর্বহারা ইত্যাদি শ্রেণির আওয়ামীবিরোধী ভোট বেশি, তা-ও দেখিয়ে দিয়েছিলাম এবং তার কথা অনুযায়ী পাবনার কোন শিল্পপতি বা বড় ব্যবসায়ী কোন দলের সমর্থক বা পৃষ্ঠপোষক, তা-ও উল্লেখ করেছিলাম। সে সময়ে আমি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহসম্পাদক ছিলাম, যে কমিটিতে সর্বজনাব মো. হানিফ (বর্তমান যুগ্ম সম্পাদক), ড. আবদুস সোবহান, বাহাউদ্দিন নাছিম প্রমুখ বিশিষ্ট নেতাও ছিলেন। আবদুল জলিল আমাকে দু’দফায় দলীয় সভানেত্রীর কাছে নিয়ে গিয়ে আমার কাজের ভূয়সী প্রশংসাও করেছিলেন।
আওয়ামী লীগের রিজার্ভ ভোটব্যাংক প্রসঙ্গে ফিরে আসি। আওয়ামী লীগের ভোটব্যাংকে কমপক্ষে ৩৯ শতাংশ ভোট আছে। এ অবস্থায় ২০২৪-এর নির্বাচনে সেই ৩৯ শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছে কিনা, সেটা বলাই আমার মূল উদ্দেশ্য। এবারের ভোটের দিন আমি ঢাকায় ছিলাম। সেদিন দুপুরে ঢাকার একটি পার্কে বসে শরীরে খানিকটা রোদ লাগানো অবস্থায় এক ব্যক্তিকে আমার দিকে এগিয়ে আসতে দেখে পাশে বসতে বলে একথা-সেকথায় ভোট দিয়েছেন কিনা জিজ্ঞেস করায় বললেন, ‘ভোট দিয়ে কী হবে? যার জেতার এমনিতেই তো তিনি জিতে যাবেন!’ অথচ ভদ্রলোক আপাদমস্তক একজন আওয়ামী লীগার এবং তার ভোটকেন্দ্রটিও পার্কসংলগ্ন স্কুলে অর্থাৎ পার্কের প্রাচীরসংলগ্ন। কিন্তু তার মানসিক অবস্থান ভোট দিতে যাওয়ার পক্ষে নয়, কারণ তার মতে, ‘এসব লোক পুনঃপুনঃ নির্বাচিত হওয়ায় তাদের জবাবদিহিতা নেই বললেই চলে। বারবার এসব ব্যক্তিকে নির্বাচিত করা মানেই তাদের লুটপাটের সুযোগ করে দেওয়া, এভাবে আমাদের ট্যাক্সের টাকা লুটপাট হতে দেওয়া ঠিক নয়।’
বলা বাহুল্য, সেই ব্যক্তির উষ্মা দেখে আমি মোটেও অবাক হইনি। কারণ তার মতো অনেককেই একই কথা বলতে শুনেছি। ঢাকায় বসবাসরত অনেকে যারা মফস্বলের ভোটার, আওয়ামী লীগ করেন এমন অনেক ব্যক্তিও সেদিন ঢাকা ছেড়ে ভোট দিতে যাননি। কারণ ভোট প্রদানের ক্ষেত্রে তারাও আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন।
ভোট প্রদানে আগ্রহ হারানো ব্যক্তিদের একটি খণ্ডচিত্র এখানে তুলে ধরায় কে কী মনে করবেন জানি না বা অকারণে কেউ শত্রুভাবাপন্ন হয়ে উঠবেন কিনা, তা-ও জানি না। তবে এমন একটি সঠিক তথ্য নির্বাচন কমিশনসহ ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের ক্ষমতাবান ব্যক্তিদের জানা উচিত বলেই মনে করি। কারণ, কিছু ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়ারও প্রয়োজন আছে। অন্যথায় একশ্রেণির রাজনীতিক, সরকারি আমলা, নির্বাচন কমিশনের কিছু লোক শুধু তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে দেশের মানুষকে বোকা বানানোর চেষ্টা করবেন।
এসব নিয়ে আরও অনেক কথা বলার থাকলেও লেখাটি আর দীর্ঘায়িত না করে বলতে চাই, বর্তমান অবস্থায় নির্বাচনের সময় দেশের মানুষ যেভাবে ভোটকেন্দ্রবিমুখ হয়ে পড়েছেন, এমনকি সরকারি দলের লোকেরাও অনেকেই ভোটকেন্দ্রে যাচ্ছেন না, এজন্য দায়ী কে বা কারা সে বিষয়টিও ভেবে দেখা দরকার। অন্যথায় বিরোধী দলের ভোটবর্জনের মুখে বিভিন্ন নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রগুলোতে যেখানে ভোটের খরা চলছে, সে সময়ে সরকারদলীয় রিজার্ভ ভোটের ৩৯ শতাংশ বা বাদছাদ দিয়ে ৩০ শতাংশ ভোটই বা কোথায়?
এ অবস্থায় নির্বাচন কমিশন থেকেই বা কতবার শীতের দোহাই, ধানকাটার দোহাই দিয়ে ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার যৌক্তিকতা তুলে ধরা হবে? ঘুমাতে যাওয়ার আগে এবং ঘুম থেকে জেগে ভোটারের সংখ্যাধিক্য বাড়িয়েই বা কার কী লাভ হবে? কারণ এসব করে, এসব বলে তো আমাদের নির্বাচনি ব্যবস্থাকে মজবুত ভিত্তির ওপর দাঁড় করানো যাবে না, নির্বাচনকে বিশ্বাসযোগ্য করা যাবে না। এসব বিষয়ে জনগণকে যা বলা হচ্ছে, জনগণ তো তা নিতে পারছেন না, জনগণ তা বিশ্বাসও করছেন না। কারণ জনগণ সবকিছু জানেন এবং বোঝেন।
এ অবস্থায় যে কথাটি থেকেই যাচ্ছে তা হলো, স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরও কেন এমন একটি প্রশ্ন জারি থাকবে? আমরা কবে, কখন নির্বাচনোত্তর সময়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মতো বুক ফুলিয়ে সেই সত্য কথাটি বলতে পারব, আমাদের নির্বাচনব্যবস্থা তথা গণতন্ত্র আমাদের দেশের অন্যতম একটি শক্তি?
ড. মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন : কবি, প্রাবন্ধিক, কলামিস্ট, বীর মুক্তিযোদ্ধা