পরিবেশ ও কৃষিজমি বাঁচাতে রক্ষা করুন মাটি
ড. আবুল কাসেম
প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
মৃত্তিকা পরিবেশের অন্যতম মূল অংশ ও জীবনের ভিত্তি। মৃত্তিকা ছাড়া মানুষের জীবন কল্পনা করা যায় না। আমাদের দেশের উন্নয়নের খক্ষ এই মৃত্তিকা বা মাটির উপরেই পড়ে বেশিরভাগ সময়ে। দেশে ইটভাটা, শিল্পায়ন, নগর উন্নয়নের কারণে কমছে শতভাগ আবাদযোগ্য কৃষিজমি। এ কৃষিজমির মাটির সঙ্গে পৃথিবীর সব জীবজগৎ ও উদ্ভিদের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে।
ধরে নেওয়া যায়, এসব ফসলি জমির মাটি উর্বর, যাকে বাঁচালে পরিবেশ ও দেশ বাঁচবে। পরিবেশ বাঁচলে রক্ষা পাবে জীব ও উদ্ভিদজগৎ। অনেক দেশে শুধু ভূমি আছে কিন্তু কোনো আবাদযোগ্য জমি নেই। সৌভাগ্যক্রমে বাংলাদেশে মোট ভূমির মধ্যে আবাদি জমির শতকরা পরিমাণ বিশ্বে সর্বোচ্চ (৫৫ শতাংশ)।
আমাদের খাদ্যের উৎস হলো আবাদি জমির মাটি। মাটি ফসলকে পুষ্টি সরবরাহ করে, যা আমাদের খাওয়ায়, পানিকে ফিল্টার করে আমাদের পানের যোগ্য করে দেয়, বন্যা থেকে রক্ষা করে এবং খরার বিরুদ্ধে লড়াই করে। লক্ষকোটি জীবের বাসস্থান হিসাবে কাজ করে। স্বাস্থ্যকর মাটি আমাদের অ্যান্টিবায়োটিক সরবরাহ করে। মাটি কার্বন সিঙ্ক হিসাবে কাজ করে জলবায়ু পরিবর্তনকে প্রশমিত করে।
প্রকৃতপক্ষে পৃথিবীতে সমুদ্রের পরেই মাটির স্থান, যা বনের চেয়েও বেশি কার্বন-ডাই-অক্সাইড ধারণ করে। তাছাড়া, উপরের স্তরে (০-৯ ইঞ্চি) বসবাসরত অণুজীবগুলো পচনশীল শাক-সবজিকে ৫ থেকে ৩০ দিন; মৃত পশু বা প্রাণীর দেহকে ১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে মাটিতে মিশিয়ে মাটির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি করে। অন্যদিকে অপচনশীল দ্রব্য যেমন দৈনন্দিন ব্যবহারের প্লাস্টিক ব্যাগ ১০ থেকে ২০ বছর, প্লাস্টিক বোতল ৪০০ বছর এবং গ্লাস ৪ হাজার বছর পর্যন্ত মাটিতে অবস্থান করে মাটির গুণাগুণ নষ্ট করে দেয়। ক্ষুদ্র অণুজীবগুলো গ্লাস বা প্লাস্টিকজাতীয় দ্রব্য পছন্দ করে না বা তাদের খাবার হিসাবেও নিতে পারে না।
মাটির মৃত বা জীবিত থাকাটা নির্ভর করে পানি, জৈব পদার্থ ও মৃত্তিকা কণিকার (বালি, পলি ও কাদা) অনুপাতের ওপর। এগুলোর মধ্যে কর্দম কণিকা হলো মৃত্তিকার প্রাণ। সাধারণত মরুভূমির মাটিতে কাদা কণিকার পরিমাণ ১০ শতাংশের নিচে এবং বালি কণার পরিমাণ ৮৫ শতাংশের উপরে, জৈব পদার্থের পরিমাণও তুলনামূলকভাবে কম থাকে। তাই মরুভূমির মাটি প্রায় মৃত, তাতে শস্য উৎপাদন করা খুব কঠিন। তাছাড়া দীর্ঘদিন রোদে বা ইটের জন্য মাটিকে পোড়ালে মাটি মরে যায়।
দেশে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা ও নগরায়ণের ফলে প্রচুর পাকা দালান নির্মিত হচ্ছে, তাতে বাড়ছে ইটের চাহিদা। একটি পূর্ণাঙ্গ বাড়ি তৈরিতে ২৫৬ প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১০০০ উপকরণ লাগে, যার মধ্যে ইট হলো অন্যতম। এই ইট তৈরির উপকরণ নিয়ে একটু আলোচনা করা দরকার। দেশে ২০১৩ সালের ৫৯নং আইনের আওতায় ইটের সংজ্ঞায় বলা আছে-‘ইট’ অর্থ বালি, মাটি বা অন্য কোনো উপকরণ দ্বারা ইটভাটায় পুড়িয়ে প্রস্তুতকৃত কোনো নির্মাণসামগ্রী।
একমাত্র মাটি ছাড়া বালি বা অন্য কোনো উপকরণ দিয়ে ইট তৈরি সম্ভব নয়। বালি ইট তৈরির কোনো উপকরণ হতে পারে না, কারণ বালিকে আগুনে পোড়ালে তো বালিই থেকে যাবে, জমাটও বাঁধবে না, ইট তৈরিও হবে না। তাছাড়া আরও উল্লেখ আছে অনুমতিসাপেক্ষে মজা পুকুর, খাল, বিল, খাঁড়ি, দিঘি, নদ-নদী, হাওড়-বাঁওড়, চরাঞ্চল বা পতিত জায়গার মাটি দিয়ে ইট প্রস্তুতির কথা। কিন্তু উল্লেখিত জায়গাগুলোর মাটিতে জলাবদ্ধতার কারণে তুলনামূলকভাবে জৈব পদার্থের পরিমাণ বেশি থাকায় ওইসব মাটি দিয়েও উন্নতমানের ইট তৈরি করা সম্ভব নয়। তাই শতভাগ (বৈধ/অবৈধ) ইটভাটায় উপকরণ হিসাবে আবাদযোগ্য কৃষিজমির মাটিই ব্যবহৃত হচ্ছে।
বিভিন্ন উৎস থেকে তথ্য নিয়ে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, দেশে বর্তমানে ইটভাটায় বছরে প্রায় ৩৫০০ কোটি ইট পোড়ানো হয়। এক্ষেত্রে প্রতিবছর টপ সয়েল ব্যবহারের পরিমাণ প্রায় ১৩ কোটি টন, যা ৬৫ হাজার হেক্টর কৃষিজমির উপরের স্তরের মাটির সমান। আগামী ১০ বছরে টপ সয়েলের ব্যবহার ২-৩ শতাংশ বাড়তে পারে। তাছাড়া রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, পুকুর খনন, নির্মাণসহ নানা কাজে আরও ১৫ হাজার হেক্টর আবাদযোগ্য জমিও অকৃষি খাতে চলে যাচ্ছে। এ হিসাবে বছরে মোট উর্বর জমি হারানোর পরিমাণ প্রায় ৮০ লাখ ৩০ হাজার হেক্টর। অর্থাৎ প্রতিবছরই বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১ শতাংশ হারে আবাদযোগ্য জমি কমে যাচ্ছে; অপরদিকে একই হারে বাড়ছে জনসংখ্যা।
এ হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও আবাদি জমির অবক্ষয় চলতে থাকলে ৭০ বছর পর দেশে কোনো কৃষিজমি থাকবে না। তাছাড়া দেশে ইটভাটায় বছরে প্রায় ৫৬ লাখ টন কয়লা ব্যবহৃত হয়, যার ২৫ শতাংশ জ্বালানির সরবরাহ আসে কাঠ থেকে। মাটির তৈরি কাঁচা ইট পোড়ানোর কারণে উজাড় হয়ে যাচ্ছে বৃক্ষসম্পদ। ইটভাটা থেকে নির্গত বিষাক্ত কালো ধোঁয়ায় বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ, দূষিত হচ্ছে বাতাস, কমছে গাছপালা এবং হুমকির মুখে পড়ছে জনস্বাস্থ্য। ইটভাটার কারণে পার্বত্য এলাকায় পাহাড়গুলোও এখন ঝুঁকির মুখে আছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে হুমকির মুখে পড়বে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও পরিবেশ।
অনেক উন্নয়নশীল দেশেই প্রচলিত ইটের পরিবর্তে ভবন নির্মাণে বালি, সিমেন্ট, নুড়িপাথর দিয়ে বানানো ব্লক ব্যবহার করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে ইট উৎপাদনে কৃষিজমির মাটির ব্যবহার পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। চীন ৫০ বছর আগে মাটি পোড়ানো ইট উৎপাদন নিষিদ্ধ করেছে। ভিয়েতনাম রাষ্ট্রীয়ভাবে নির্মিত ভবনে ৮০ শতাংশ ব্লক ইট ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছে।
আমাদেরও জরুরিভিত্তিতে ব্লক ইট ব্যবহারের উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত, যাতে আগামী কয়েক বছরে সরকারি/বেসরকারি স্থাপনায় ও উন্নয়ন প্রকল্পে শতভাগ পরিবেশবান্ধব ব্লক ইট ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে দেশে পরিবেশবান্ধব দুই শতাধিক ব্লক ইট তৈরির কারখানা রয়েছে। হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ (এইচবিআরসি) উদ্ভাবন করেছে পরিবেশবান্ধব নির্মাণসামগ্রী।
পরিবেশবান্ধব ব্লক ইট ব্যবহারে সুবিধা : ১. ব্লক ইট তৈরিতে কৃষিজমির উপরিভাগের মাটি ব্যবহারের পরিবর্তে নদীর তলদেশের মোটা বালু ও সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়; ২. ব্লক ইট তৈরি হয় কারখানায় আর ইট তৈরি হয় ইটভাটায়। তাতে জায়গাও কম লাগে এবং আগুনেও পোড়াতে হয় না; ৩. ব্লক ইট ব্যবহারে ভবনের নির্মাণব্যয় ২৫ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কমানো সম্ভব; ৪. ব্লক ইট সার্বিকভাবে কৃষিবান্ধব, পরিবেশবান্ধব, ভূমিকম্প ও অন্যান্য দুর্যোগসহনীয়, টেকসই, ওজনে হালকা, দীর্ঘস্থায়ী, উন্নতমানের ফিনিশ, আগুন ও লবণাক্ততা প্রতিরোধী, মূল্যসাশ্রয়ী, তাপ ও শব্দনিরোধক; ৫. বর্তমানে ৫টি ইটের বাজার মূল্য প্রায় ৬০ টাকা এবং পাঁচটি ইটের সমান ১টি ব্লক ইটের মূল্য ৩৭ টাকা; ৬. ইটভাটার চেয়ে ব্লক ইটের কারখানা খুলতে কম টাকা লাগে, ৪০-৫০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করলেই ব্লক ফ্যাক্টরি শুরু করা যায়; ৭. ব্লক ইট ব্যবহারের ক্ষেত্রে ড্রেসিংয়ের দরকার হয় না, ফলে নির্মাণকাজ দ্রুত সম্পন্ন করা যায়; ৮. ব্লক ইট ওজনে হালকা বিধায় স্থানান্তর সহজ; ৯. ব্লক ইট সাধারণ ইটের তুলনায় ওজনে হালকা হয়, ফলে ভবনের ভিত্তিতে চাপ কম পড়ে এবং মাটির ভারবহন ক্ষমতা অপেক্ষাকৃত কম হলেও নির্মাণ করা সম্ভব; ১০. ব্লক ইট দিয়ে কম পুরুত্বের দেওয়াল নির্মাণ করা যায়, ফলে ফ্লোর এরিয়া তুলনামূলকভাবে বেড়ে যায়; ১১. ব্লকের আকার বড় হয়, জোড়ার সংখ্যা কম হয়, ফলে মসলা কম লাগে; ১২. ব্লক ফাঁকা থাকায় এগুলো তাপ, শব্দ ও আর্দ্রতা নিরোধ করে; ১৩. সর্বোপরি এগুলো আবহক্রিয়ায় কম আক্রান্ত হয়, তাই এগুলোর পৃষ্ঠে প্লাস্টারের দরকার হয় না; ১৪. ব্লকের দ্বারা নির্মিত দেওয়াল সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে; ১৫. চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন আকার-আকৃতির ব্লক তৈরি করা সম্ভব।
সুপারিশ : ১. নতুন করে কোনো ইটভাটা স্থাপনের অনুমতি প্রদান না করা এবং মাটি পোড়ানো বৈধ ও অবৈধ সব ইটভাটাকে নিরুৎসাহিত করে পরিবেশবান্ধব ব্লক ইট কারখানা স্থাপনকে অগ্রাধিকার দেওয়া; ২. পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রচলিত ইটের ব্যবহার থেকে সরে এসে ধাপে ধাপে স্বল্প সময়ের মধ্যে সরকারি সব উন্নয়ন কাজে ব্লক ইট ব্যবহারের লক্ষ্য নির্ধারণ করা; ৩. ব্যাপক প্রচারের মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করা এবং ব্লক ইটের বাজার তৈরি করা; ৪. ব্লক ইট উৎপাদন উৎসাহিত করতে প্রকল্প অনুমোদনের সময় ২০ থেকে ৫০ শতাংশ বাধ্যতামূলক ব্যবহার, সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণ, কর ছাড়, সচেতনতা বৃদ্ধিসহ নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা; ৫. ব্লক ইট প্রস্তুত ও ব্যবহারের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রস্তুতকারক ও নির্মাণ শ্রমিকদের কারিগরি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা; ৬. ব্লক ইটের চাহিদা বৃদ্ধির জন্য সরকারের সব উন্নয়ন প্রকল্পে নির্দিষ্ট হারে ব্লকের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করে নির্মাণ কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও সংস্থাগুলোর ওয়ার্ক শিডিউলে বাজারদর অনুযায়ী ব্লকের দাম নির্ধারণ করে অন্তর্ভুক্তকরণ; ৭. বেসরকারি পর্যায়ে নির্মিতব্য অ্যাপার্টমেন্ট ভবন ও সীমানা প্রাচীরে নির্দিষ্ট হারে ব্লক ব্যবহারের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা; ৮. ব্লক ইট প্রস্তুতকারক এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ ও গবেষণার জন্য একটি উপযুক্ত সরকারি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করা; ৯. ব্লক ইট উৎপাদনে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ আমদানিতে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত শুল্ক অব্যাহতি এবং কারখানা স্থাপনে আর্থিক প্রণোদনা প্রদান করা; ১০. বিএসটিআই, বুয়েট বা এইচবিআরসি কর্তৃক বিভিন্ন ধরনের ব্লকের জাতীয় মান নির্ধারণ করা; ১১. ব্লককে বাজারে সহজলভ্য করা এবং ইটের সরবরাহ ও চাহিদা পর্যায়ক্রমে কমিয়ে আনা; ১২. ইটভাটার মালিকদের পরিবেশবান্ধব ব্লক ইট তৈরির কারখানা স্থাপনে উৎসাহ দেওয়া এবং সহজ শর্তে ব্যাংকঋণ দিয়ে সহায়তা প্রদান করা; ১৩. আবাদি জমিতে নতুন বাড়িঘর, রাস্তাঘাট, মেগাপ্রজেক্ট, শিল্প-কারখানা ইত্যাদি নির্মাণে মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের (এসআরডিআই) অনুমোদন নেওয়া; ১৪; প্রতিটি উপজেলায় একজন করে এসআরডিআই’র কর্মকর্তা নিয়োগের ব্যবস্থা করা, যারা ভূমি ও মৃত্তিকা সম্পদ ব্যবহার ও সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে; ১৫. জমির উপরের মাটি বিক্রি বা সরানোর ক্ষেত্রে এসআরডিআই’র কর্মকর্তাদের অনুমোদন নেওয়া; ১৬. সরকার কৃষিজমি সুরক্ষা ও ভূমি ব্যবহার আইন করার যে উদ্যোগ ২০১০ সালে নিয়েছিল, তা দ্রুত বাস্তবায়ন করা; ১৭. ব্লক ব্যবহারের সুফলগুলো বিভিন্ন মিডিয়া ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা করা।
প্রচলিত ইটের ব্যবহার নিরুৎসাহিত করতে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ২০১৯ সালের ২৪ নভেম্বর ব্লক ইট ব্যবহারের বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল। তাতে সরকারি নির্মাণকাজে ধাপে ধাপে ব্লক ইটের ব্যবহার বাড়িয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে শতভাগে উন্নীত করার বিষয়টির উল্লেখ ছিল। এ নির্দেশনা অনেকটা কাগজেই সীমাবদ্ধ রয়ে গেছে বলে জানা যায়। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সরকারি রেট শিডিউলে (পণ্যের নির্ধারিত দাম) ব্লক ইট অন্তর্ভুক্ত না থাকায় তা কম ব্যবহৃত হচ্ছে।
সবচেয়ে বড় কথা হলো, আবাদি জমির মাটি আমাদের জীবনের ভিত্তি। আবাদি জমি আগামী ৭০ বছরের মধ্যে দেশ থেকে বিলীন হয়ে যাক, তা কারও কাম্য নয়। সমতল ভূমিতে এক ইঞ্চি আবাদি মাটি তৈরি হতে কমপক্ষে ৫০০ থেকে ১০০০ বছর সময় লাগে, কাজেই একবার হারিয়ে গেলে তাকে ফিরে পাওয়া খুবই কঠিন ও অসাধ্য ব্যাপার। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য তাকে রক্ষা আমাদের সবার দায়িত্ব ও কর্তব্য। এজন্য দরকার সবার আন্তরিক সহযোগিতা, সব পক্ষের সমন্বয় ও নির্দিষ্ট পরিকল্পনা।
ড. আবুল কাসেম : অধ্যাপক, মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়