Logo
Logo
×

উপসম্পাদকীয়

খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে করণীয়

Icon

ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী

প্রকাশ: ০১ জুন ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে করণীয়

করোনা অতিমারির ভয়াবহতা, চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, মূল্যস্ফীতি, জ্বালানি সংকটে বাংলাদেশসহ সমগ্র বিশ্ব দুঃসহ ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। বৈশ্বিক খাদ্য সংকটে বিশ্বের অনেক দেশ যারপরনাই পর্যুদস্ত। উৎপাদন পরিস্থিতি বিবেচনায় এবং

চলমান সংকটের কারণে ২০২৩ সালে সারা বিশ্বে খাদ্য সংকট বা দুর্ভিক্ষ অত্যাসন্ন এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এবারই বিশ্ব সর্বোচ্চ খাদ্য সংকটের মুখোমুখি হওয়ার বিষয়ে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার ইঙ্গিত খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থাসহ সবাই একযোগে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের কারণে হতে যাওয়া এ ভয়াবহ খাদ্য সংকটের ফলে শুধু ইউক্রেন নয়; হাজার হাজার মাইল দূরবর্তী দেশগুলোর মানুষেরও মৃত্যুর আশঙ্কা প্রচার করে আসছে।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) সংশোধিত বার্ষিক পূর্বাভাস অনুযায়ী, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পাশাপাশি নানাবিধ কারণে বর্তমান বৈশ্বিক অর্থব্যবস্থা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। ফলে সংস্থাটি ২০২৩ সালে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য কমার ইঙ্গিত দিয়েছে। উপরন্তু জ্বালানি, খাদ্য ও সারের আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়া বিশ্বজুড়ে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার শঙ্কা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর ঋণ সংকট বাড়াচ্ছে

। ফলে আগামী বছর বিশ্ব বাণিজ্য আরও সংকুচিত হবে বলে মন্তব্য করেছেন ডব্লিউটিওর মহাপরিচালক এনগোজি ওকোনজো-আইওয়ালা। গত ২৩ জানুয়ারি গণমাধ্যমে প্রকাশিত জাতিসংঘের ‘দ্য গ্লোবাল রিপোর্ট অন ফুড ক্রাইসিস’ শীর্ষক প্রতিবেদন মতে, ২০২২ সালে বিশ্বের ৫৮টি দেশের ২৫৮ মিলিয়ন মানুষ তীব্র খাদ্য সংকটের মুখোমুখি হয়েছিল, যা ২০২১ সালের চেয়ে ৬৫ মিলিয়ন বেশি। এ

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গত বছর সোমালিয়া, আফগানিস্তান, বুরকিনা ফাসো, হাইতি, নাইজেরিয়া, দক্ষিণ সুদান ও ইয়েমেনের মানুষ সবচেয়ে বেশি অনাহার-মৃত্যুর সম্মুখীন হয়েছিল। এছাড়া খাদ্য সংকটে নিপতিত হতে হয়েছিল বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশকেও।

এতৎসত্ত্বেও আবহমান বাংলার আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও ঐতিহ্যের মূল চালিকাশক্তি কৃষি খাত দেশবাসীকে অত্যন্ত আশাবাদী করার প্রয়াস অব্যাহত রেখেছে। করোনার প্রকোপকালীন দেশের জিডিপিতে সর্বোচ্চ অবদান রাখা সেবা খাতসহ বিভিন্ন খাতের বিপর্যয়ের বিপরীতে একমাত্র কৃষি খাতই দেশের অর্থনীতিকে প্রাণবন্ত রাখতে সক্ষম হয়েছিল। এখনো কৃষি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলছে।

মোট দেশজ উৎপাদনের হিসাবে জিডিপিতে এখন কৃষি খাতের অবদান ১৩ শতাংশ এবং কর্মসংস্থানে ৪১ শতাংশ। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো কৃষি উৎপাদন বাড়িয়ে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ অর্থনৈতিক উন্নয়নে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাফল্যকে বিশ্বের জন্য রোল মডেল হিসাবে উপস্থাপন করছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্ব, বাংলাদেশ সরকারের কৃষিনীতি ও কৃষির প্রতি ঐকান্তিক আন্তরিকতা, কৃষক-কৃষিবিদদের প্রচেষ্টায় এ সাফল্য অর্জিত হয়েছে বলে বিজ্ঞ মহলের ধারণা।

গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়ন-কর্মসংস্থান-দারিদ্র্যবিমোচন তথা স্বনির্ভরতা অর্জনে সুদূর প্রাচীনকাল থেকেই কৃষির ভূমিকা অনস্বীকার্য। কৃষিভিত্তিক বাংলাদেশের মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের পুরোটা জুড়েই ছিল কৃষি। মুক্তির মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার অব্যবহিত পরেই কৃষি উপকরণ-গবেষণা-নতুন জাত উদ্ভাবন ও কৃষি খাতে উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে’ স্লোগান তুলে দেশে সবুজবিপ্লবের যে ডাক দিয়েছিলেন, সেই অমিয় আহ্বান এখন সমগ্র বিশ্বের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। ১৯৭২ সালের ২৬ মার্চ বেতার ও

টেলিভিশনে ভাষণদানকালে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আমাদের সমাজে চাষিরা হলেন সবচেয়ে দুঃখী ও নির্যাতিত শ্রেণি এবং তাদের অবস্থার উন্নতির জন্য আমাদের উদ্যোগের বিরাট অংশ অবশ্যই তাদের পেছনে নিয়োজিত করতে হবে।’ কৃষি খাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরের বাজেটে ৬০ শতাংশ পল্লি এলাকার উন্নয়নে ব্যয়ের ঘোষণা দেন তিনি। বঙ্গবন্ধু তার নেতৃত্বে প্রণীত দেশের প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় (১৯৭৩-৭৮) কৃষি ও পল্লি উন্নয়ন খাতে মোট উন্নয়ন বরাদ্দের ৩১ শতাংশ অর্থ বরাদ্দের মাধ্যমে এ অভিপ্রায়ের প্রতিফলন ঘটিয়েছিলেন

। দেশের আর্থিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্যবিমোচনে কৃষি উন্নয়নকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে গড়ে তুলেছিলেন বিভিন্ন গবেষণা-সম্প্রসারণ-আর্থিক প্রতিষ্ঠান। বঙ্গবন্ধু ২২ লাখেরও বেশি কৃষক পরিবারের পুনর্বাসনের দায়িত্ব নেন। তিনি ২৫ বিঘা পর্যন্ত কৃষিজমির খাজনা রহিতকরণ, জমির মালিকানার সর্বোচ্চ সীমা পরিবার প্রতি ১০০ বিঘা নির্ধারণ করে ভূমিহীন কৃষকদের মাঝে ওই জমি বিতরণ, পাকিস্তান আমলের সব কৃষিঋণ মওকুফ এবং কৃষকদের বিরুদ্ধে করা সব সার্টিফিকেট মামলা প্রত্যাহার করে দেশের কৃষি ও কৃষকদের উন্নয়নে যুগান্তকারী দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন।

এ ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের কৃষিকে বিশ্বপরিমণ্ডলে উঁচুমার্গে মর্যাদাসীন করেছেন। কৃষির আধুনিকায়ন, নতুন নতুন উদ্ভাবন এবং সার উৎপাদন-আমদানিতে সরকারি ভর্তুকি দেওয়ার ফলে দেশ কৃষিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে। সারের দাম কমানো, ১০ টাকার বিনিময়ে ব্যাংক হিসাব খোলা, সেচের পানির ভর্তুকির টাকা সরাসরি কৃষকের ব্যাংক হিসাবে জমাদান,

প্রায় ২ কোটি ১০ লাখ কৃষকের মাঝে উপকরণ সহায়তা কার্ড বিতরণ, বর্গাচাষিদের জন্য জামানতবিহীন কৃষিঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা এবং প্রায় ১ হাজার ৪০২ কোটি ৫৯ লাখ টাকা প্রণোদনা দেওয়ার মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের ফলে কৃষিতে ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত সূত্রমতে, স্বাধীনতা-পরবর্তী সময় থেকে এ পর্যন্ত দেশে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ১১১টি জাত, পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ধান-পাট-গম-তেলবীজ-সবজি ও মসলাজাতীয় শস্যের ১৯টি প্রতিকূল ও অপ্রতিকূল পরিবেশ উপযোগী উচ্চফলনশীল এবং উন্নত গুণসম্পন্ন ১১৪টি জাত, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ২১০টির অধিক ফসলের ৭০০টি প্রযুক্তি, তুলা উন্নয়ন বোর্ড ২১টি জাত, বিজেআরআই ৬৪টি জাত, বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক ইক্ষুর ৪৮টি জাত উদ্ভাবন ও উন্মুক্ত করা হয়েছে।

জিএমও প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিটি বেগুনের ৪টি জাত উদ্ভাবন ও সম্প্রসারণ করা হয়েছে এবং বিটি তুলার জাত উদ্ভাবনের কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়া দেশি ও তোষা পাটের জীবনরহস্য আবিষ্কারসহ পাঁচ শতাধিক ফসলের ক্ষতিকর ছত্রাকের জীবনরহস্য উন্মোচন, পাট ও পাটজাতীয় আঁশ ফসলের ৫৪টি উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবন-উন্মুক্তকরণের ফলে কৃষি উৎপাদন এক অভাবনীয় উচ্চতায় পৌঁছেছে। বিশ্বে প্রথমবারের মতো জিংকসমৃদ্ধ ধানের জাত উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশের কৃষি গবেষকরা।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) এবং মার্কিন কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) তথ্য অনুযায়ী, দেশের অব্যাহত উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ বিশ্বে কৃষির ১১ খাতে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে। বিশিষ্টজনরা এটিকে দেশের জন্য বিশাল প্রাপ্তি এবং খাদ্য নিরাপত্তায় মাইলফলক হিসাবে উল্লেখ করেছেন। কৃষি ও খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা ধরে রাখা, চালসহ কৃষিপণ্য,

প্রক্রিয়াজাত মাছ-মাংস রপ্তানিতে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশ একের পর এক স্বীকৃতি পাচ্ছে। দেশের জনসংখ্যার আধিক্য এবং জলবায়ুর প্রভাবে আবাদি জমির পরিমাণ কমে যাওয়াসহ বন্যা, খরা, লবণাক্ততা ও নানা প্রাকৃতিক বৈরিতা সত্ত্বেও ধারাবাহিকভাবে ধান উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ বিশ্বে টানা চারবার তৃতীয় বৃহত্তম ধান উৎপাদনকারী দেশ হিসাবে পরিগণিত হচ্ছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বাংলাদেশ প্রায় চার কোটি টন খাদ্যশস্য উৎপাদনের রেকর্ড তৈরি করেছে। শুধু উৎপাদন বৃদ্ধি নয়, হেক্টরপ্রতি ধান উৎপাদনেও অধিকাংশ দেশকে ছাড়িয়ে গেছে। একই জমিতে বছরে একাধিক ফসল চাষেও বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উদাহরণ। ধানের উৎপাদন তিনগুণ বৃদ্ধির পাশাপাশি গম দ্বিগুণ, সবজি পাঁচগুণ এবং ভুট্টার উৎপাদন বেড়েছে ১০ গুণ।

বিগত একযুগে দেশে রীতিমতো ঘটে যাওয়া সবজিবিপ্লবের ফলে সবজি ও পেঁয়াজ উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে তৃতীয়। এছাড়া বাংলাদেশ আম উৎপাদনে সপ্তম, আলু উৎপাদনে ষষ্ঠ, পেয়ারা উৎপাদনে অষ্টম, চা উৎপাদনে চতুর্থ ও পাট উৎপাদনে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। বর্তমানে দেশে ৬৫৪ জাতের সবজি চাষের মাধ্যমে বছরে ১ কোটি ৬০ লাখ টন সবজি উৎপাদিত হচ্ছে।

দেশে মাথাপিছু সবজি ভোগের পরিমাণ ৮০ গ্রাম। সবজি উৎপাদনে বিশ্বে প্রথম চীন ও দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারত। সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলো সারা বছর চাষের উপযোগী হাইব্রিড বা উচ্চফলনশীল বীজ উদ্ভাবন এবং বাজারজাতকরণের ফলে সবজি চাষে সাফল্য এসেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়ার্ল্ড ফিশের হিসাবমতে, বিশ্বের মোট ইলিশের ৮৬ শতাংশ উৎপাদিত হচ্ছে বাংলাদেশে। বর্তমানে ইলিশ উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে প্রথম। ২০০৭-২০০৮ অর্থবছরে ২ লাখ ৬০ হাজার টনের বিপরীতে ২০১৯-২০ সালে মোট ইলিশ উৎপাদন হয় ৫ লাখ ৩৩ হাজার টন। গবেষকদের মতে, ২০২০ সালে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার ইলিশ উৎপাদন হয়েছে।

এফএও-এর তথ্য অনুসারে, স্বাদুপানির মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে তৃতীয়। বিশ্বের মোট স্বাদু পানির মাছের প্রায় ১১ শতাংশ বাংলাদেশে উৎপাদন হয়। সমুদ্রজয়ের ফলে বঙ্গোপসাগর থেকে মৎস্য আহরণের ক্ষেত্র বৃদ্ধি পেয়েছে। মুক্ত জলাশয় এবং ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে ওঠা লাখ লাখ পুকুরে মাছচাষে দেশে রূপালী বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে। মাছ রপ্তানিতে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশে মোট কৃষিজ আয়ের ২৪ শতাংশের বেশি অবদান মৎস্য খাতে। এ সংস্থার মতে, ২০২২ সাল নাগাদ বিশ্বের যে চারটি দেশ মাছচাষে সাফল্য অর্জন করবে তাতে বাংলাদেশ প্রথম হবে। এরপর থাকবে থাইল্যান্ড, ভারত ও চীন।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে জার্মানির বার্লিনে অনুষ্ঠিত ১৫তম কৃষিমন্ত্রীদের সম্মেলনে বিদ্যমান খাদ্য সংকট পরিস্থিতিতে সংকটকালীন খাদ্যব্যবস্থা, জলবায়ু সহনশীল খাদ্য, জীববৈচিত্র্য রক্ষা এবং টেকসই বৈশ্বিক খাদ্যব্যবস্থা গড়ে তোলার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। ২০২২ সালের ৬ অক্টোবর যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র সফর উপলক্ষ্যে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০২৩ সালে বিশ্বের জন্য

একটি অত্যন্ত দুর্যোগময় সময় এগিয়ে আসার এবং বিশ্বে দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। সম্ভাব্য এ বৈশ্বিক মন্দা বা দুর্যোগ মোকাবিলায় দেশবাসীকে প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেছিলেন,

‘যার যে জমি আছে সবাই যেন সেখানে কিছু না কিছু উৎপাদন করি। বিদ্যুৎ-পানি-খাদ্য ব্যবহারে যেন সবাই সচেতন হই। যে কোনো ক্ষেত্রে দেশের ঝুঁকি নেই, এটুকু আমি কথা দিতে পারি। খাদ্য নিরাপত্তায় আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি। বাজেটের বাইরেও খাদ্য নিরাপত্তার জন্য আলাদা করে টাকা রাখলাম। যা যা করণীয় আমরা করছি।’

সংকট মোকাবিলায় বিশ্বের দেশগুলোর পারস্পরিক সমঝোতা-সহযোগিতা-সহমর্মিতার নতুন যোগসূত্র প্রতিষ্ঠা না পেলে অদূর ভবিষ্যতে সংকট আরও ঘনীভূত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই বাস্তবতার নিরিখে অযৌক্তিক যুদ্ধ, অবাঞ্ছিত নিষেধাজ্ঞা, অযাচিত দোষারোপ পরিহার করে বিশ্বকে সঠিক পদক্ষেপ নিতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনসহ চলমান আর্থসামাজিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উন্নত বিশ্বেরই দায় বেশি এবং তাদেরই সহনশীলতার সঙ্গে বিশ্বকে নিরাপদ-আলোকিত করার সমুদয় পন্থা উদ্ভাবন করতে হবে।

ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী : শিক্ষাবিদ; সাবেক উপাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম