Logo
Logo
×

উপসম্পাদকীয়

বাইফোকাল লেন্স

একাত্তরের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি কতদূর?

Icon

একেএম শামসুদ্দিন

প্রকাশ: ০৩ এপ্রিল ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

একাত্তরের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি কতদূর?

২৫ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত হয়ে গেল প্রথমবারের মতো জাতিসংঘ সদর দপ্তরে একাত্তরের গণহত্যার আলোকচিত্র প্রদর্শনী। প্রদর্শনীতে ১৯৭১ সালে পাকিস্তান দখলদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের দ্বারা সংঘটিত গণহত্যার ২৭টি আলোকচিত্র প্রদর্শিত হয়েছে। দেরিতে হলেও এ আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি ভালো কাজ করেছে। যদিও এ ধরনের উদ্যোগ অনেক আগেই নেওয়া উচিত ছিল। আমার তো মনে হয়, শুধুমাত্র জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সীমাবদ্ধ না রেখে, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে সমর্থনকারী দেশগুলোসহ গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেতে যেসব দেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে, সেসব দেশে এ আলোকচিত্রের উন্মুক্ত প্রদর্শনীর আয়োজন করা উচিত। তাতে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনী যে গণহত্যা চালিয়েছিল, সে সম্পর্কে সঠিক চিত্র আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মাঝে ছড়িয়ে পড়তে সাহায্য করবে। বিশ্ববাসী জানুক, একাত্তরে বাঙালিদের ওপর যে নৃশংস হত্যাকাণ্ড, খুন, ধর্ষণ করা হয়েছিল, তা ১৯১৫ সালে অটোমান তুর্কিদের হাতে আর্মেনীয়, ১৯৭৫ সালের কম্বোডিয়ার গণহত্যা, ১৯৯২ সালের বসনিয়া ও ১৯৯৪ সালে রুয়ান্ডায় তুতসি জাতিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে গণহত্যার চেয়ে কম ছিল না। এমনকি দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় চার-পাঁচ বছরের ব্যবধানে ইউরোপে ৬০ লাখ ইহুদি হত্যাকাণ্ডের চেয়েও ভয়াবহ ছিল মাত্র ৮ মাস ২০ দিনে ৩০ লাখ বাঙালিকে পরিকল্পিত হত্যাযজ্ঞের ঘটনা। অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, আমাদের কূটনৈতিক তৎপরতা এতই দুর্বল যে, ওপরে উল্লেখিত অন্যান্য সব গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি থাকলেও, ৫৩ বছর পর আজও পাকিস্তানিদের সেই বর্বরতার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আমরা আদায় করতে পারিনি।

১৯৭১ সালেই পাকিস্তান সেনাবাহিনী পরিকল্পিতভাবে বাঙালি জাতিকে ধুলোর সঙ্গে মিশিয়ে দিতে চেয়েছিল। তারা বাংলাদেশে ‘পোড়ামাটি নীতি’ গ্রহণ করেছিল। নৃশংস হত্যাকাণ্ডে, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর যে ব্যক্তি সবচেয়ে বেশি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন, সেই মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলীর ডায়েরিতেই এর প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল। বাঙালি কতজন বেঁচে রইল তা বিবেচনা না করে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ভূখণ্ড নিজেদের দখলে রাখাই ছিল তাদের মূল লক্ষ্য। পরবর্তীকালে এর প্রমাণও আমরা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার রিপোর্টে পেয়েছি। ১৯৭১ সালে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টে বলা হয়েছিল, মানবসভ্যতার ইতিহাসে যতগুলো গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে, তার বিপরীতে এত অল্প সময়ের ব্যবধানে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মানুষকে হত্যা করা হয়েছে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে। প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১১ হাজার পাঁচশতেরও বেশি বাঙালিকে হত্যা করা হয়েছে, যা গণহত্যার ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেকর্ড। ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি নিউইয়র্ক টাইমসের সাংবাদিক সিডনি এইড শানবার্গ যুদ্ধের পরপর বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল ঘুরে একটি প্রতিবেদন লিখেছিলেন, যা ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি প্রকাশিত হয়েছিল। প্রতিবেদনটির শিরোনাম ছিল, ‘Bengalis' Land a Vast Cemetery, যার বাংলা অর্থ হচ্ছে, ‘বাঙালির ভূখণ্ড এক বিশাল সমাধিক্ষেত্র’। প্রতিবেদনের শিরোনাম দেখে গণহত্যার ব্যাপকতা সম্পর্কে অনুমান করা যায়। জাতিসংঘ ‘গণহত্যা বিষয়ক সনদ’-এ যে বিবরণ রয়েছে, তার সঙ্গে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বাঙালি হত্যাকাণ্ড ও নৃশংসতার পুরোপুরি মিল রয়েছে। জাতিসংঘ সনদে বলা হয়েছে, গণহত্যা বলতে বোঝাবে কোনো জাতি বা জাতিসত্তা, বর্ণ বা ধর্মীয় গোষ্ঠীর সদস্যদের অংশবিশেষ বা পুরোপুরি ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে পরিচালিত জাতি বা গোষ্ঠীর সদস্যদের হত্যা করা, জাতি বা গোষ্ঠীর সদস্যদের গুরুতর মানসিক বা শারীরিক ক্ষতিসাধন করা, উদ্দেশ্যমূলকভাবে জাতি বা গোষ্ঠীর ওপর এমন এক জীবনযাত্রা আরোপ করা, যা সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে গোষ্ঠীর ধ্বংস ডেকে আনে এবং জাতি বা গোষ্ঠীকে জোর করে অন্য জাতি বা গোষ্ঠীতে রূপান্তর করা। সনদে আরও বলা হয়েছে, ওপরের যে কোনো একটি অপরাধ সংঘটিত হলেই তা গণহত্যা হিসাবে বিবেচিত হবে।

এখন দেখা যাক, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি জান্তা কী করেছিল। আমি আগেই বলেছি, পাকিস্তানি জান্তা পরিকল্পিতভাবেই বাঙালি নিধনে নেমেছিল। ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে যখন অসহযোগ আন্দোলন তুঙ্গে, তখন ১৬ মার্চ পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে এক প্রহসনের বৈঠক করতে ঢাকা আসেন। বৈঠক শুরু হতেই পাকিস্তানি জান্তারা বাঙালি হত্যার নীলনকশা তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। ১৭ মার্চ সন্ধ্যায় টিক্কা খান ১৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল খাদিম হোসেন রাজা ও গভর্নরের রাজনৈতিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলীকে একসঙ্গে ডেকে নিয়ে বাঙালিদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা প্রণয়ন করে পরদিন তার সঙ্গে আলোচনা করতে বলেন। ১৮ মার্চ সকালে জেনারেল খাদিম ও রাও ফরমান অভিযানের লিখিত পরিকল্পনা তৈরি করে ফেলেন। রাও ফরমান ঢাকা শহরের এবং খাদিম দেশের বাকি অংশের অভিযান পরিকল্পনা তৈরি করে পরদিন টিক্কা খানের কাছে উপস্থাপন করলে বিনা বাক্যব্যয়ে তা গ্রহণ হয়ে যায়। সামরিক অভিযানের নাম দেওয়া হয় ‘অপারেশন সার্চলাইট।’ পরিকল্পনা অনুযায়ী, ঢাকায় অবস্থিত ৫৭ পদাতিক ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার আবরার ঢাকা শহর ও শহরতলি অপারেশনের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। আর জেনারেল খাদিম ঢাকার বাইরে পুরো বাংলাদেশের হত্যাযজ্ঞের দায়িত্ব পান। এ অপারেশন অর্ডার অনুযায়ীই পরবর্তী নয় মাস দেশব্যাপী গণহত্যা পরিচালিত হয়। এ প্রসঙ্গে জেনারেল খাদিমের ‘অ্যা স্ট্রেন্জার ইন মাই ওউন কান্ট্রি, পাকিস্তান (১৯৬৯-১৯৭১) বইয়ের একটি উদ্ধৃতি উল্লেখ করা যায়, যেখানে তিনি লিখেছেন, ‘নিয়াজি বলেছিলেন, এই হারামজাদা জাতি জানে না আমি কে? আমি তাদের জাত বদলে দেব।’ নিয়াজি তার অধীন সেনাদের বাঙালি নারীদের ধর্ষণ করার নির্দেশও দিয়েছিলেন। ফলে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের সহযোগী বাহিনীর সদস্যরা দুই থেকে চার লাখ বাঙালি নারীকে ধর্ষণ করে। গবেষকদের মতে, সরকারি হিসাবে ধর্ষণের শিকার নারীর সংখ্যা ২ লাখ উল্লেখ থাকলেও সম্প্রতি এক গবেষণায় বলা হয়েছে, এ সংখ্যা হবে ৪ লাখ। গবেষণার পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে আরও বলা হয়েছে, এ হিসাবটি এসেছিল, যারা তৎকালে সরকারি পুনর্বাসন কেন্দ্রগুলোতে গিয়ে তালিকাভুক্ত হয়েছিলেন, সেই তালিকা, আর রেডক্রসের সেবাগ্রহীতার তথ্য থেকে। সে সময় অনেকেই লোকলজ্জার ভয়ে ধর্ষণের কথা চেপে গিয়েছিলেন। রেডক্রস এ সংখ্যা ৪ লাখের বেশি হতে পারে বলে মত প্রকাশ করেছে। এ ছাড়াও, সম্প্রতি পরিচালিত অন্য আরেকটি জরিপে গণহত্যা, বধ্যভূমি ও নির্যাতন কেন্দ্রের বিস্ময়কর পরিসংখ্যান উঠে এসেছে। পূর্বতন জরিপে, গণহত্যা, বধ্যভূমি, গণকবর ও নির্যাতন কেন্দ্রের সর্বোচ্চ সংখ্যা ছিল ৯০৫, চলমান জরিপে ৩৪টি জেলায় সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ২৮৬। অতএব, সহজেই অনুমান করা যায়, ৬৪ জেলার সে সংখ্যা কত গিয়ে দাঁড়াতে পারে!

এদিকে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি কেন আদায় করা যায়নি তা নিয়ে পারস্পরিক দোষারোপের আলোচনা চলছে। ২৫ মার্চ রাজধানীর ঢাকা গ্যালারিতে এডিটরস গিল্ড বাংলাদেশ নামক একটি সংগঠন আয়োজিত ‘গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও মানবাধিকার প্রশ্ন’-শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুন বলেছেন, ১৯৭৫ সাল থেকে ২৫ বছর ক্ষমতায় থাকা রাজনৈতিক দলগুলো গণহত্যাকে সামনে আনতে চায়নি। তাদের আঁতাত ছিল ঘাতকদের সঙ্গে। ওই বৈঠকে উপস্থিত জাতীয় পার্টির আইনপ্রণেতা কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কী ভূমিকা পালন করেছে প্রশ্ন তুলে বলেন, এর জন্য বর্তমান সরকার সবচেয়ে বেশি দায়ী। তারা তো সব মিলিয়ে ২০ বছর ক্ষমতায় আছেন, এ ২০ বছর ক্ষমতায় থেকেও এটি করতে পারেননি। এখন পারস্পরিক দোষারোপ করে আরও পিছিয়ে পড়ে লাভ নেই। এ কথা মেনে নিতেই হবে যে, স্বাধীনতার পর ক্ষমতাসীন সব সরকারের গাফিলতির জন্যই আমরা এ স্বীকৃতি আদায় করতে পারিনি। প্রকৃত সত্য হলো, মুক্তিযুদ্ধের গবেষক এবং ওয়ার ক্রাইম ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির প্রধান ডা. এমএ হাসান ২০০১ সালেই ইউনেসকোর কাছে বাংলাদেশের গণহত্যার স্বীকৃতি আদায়ের বিষয়টি ব্যক্তিগতভাবে প্রথম তুলেছিলেন। ২০০৪ সালে ইউনেসকোর কাছে ২৫ মার্চকে গণহত্যা প্রতিরোধ দিবস হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার আবেদন করেন। জবাবে ইউনেসকো জানিয়েছিল, স্বীকৃতি পেতে হলে সদস্য রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশকে জাতিসংঘে তা তুলে ধরতে হবে। সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সম্মতি নিয়ে তা জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে পাশ করতে হবে। ডা. এমএ হাসানের বক্তব্য অনুসারে, তিনি ২০০৯ সালে সরকারের কাছে তা তুলে ধরলেও সরকার কোনো উদ্যোগ নেয়নি। তিনি বলেছেন, ‘সরকারের বিলম্বিত উদ্যোগের কারণে ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস পালনের সুযোগ আমরা হারিয়েছি।’ অপরদিকে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির শাহরিয়ার কবির তার এক বক্তব্যে জানিয়েছেন, ‘২০০৭ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস পালনের জন্য আমরা জাতিসংঘের ইউনেসকো ও গণহত্যা ভুক্তভোগী বিভিন্ন দেশকে চিঠি লিখেছি।’ তিনি আরও জানান, ওই চিঠির ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালের মার্চে আর্মেনিয়া থেকে পালটা চিঠি দিয়ে বাংলাদেশে দিবসটি কীভাবে পালন করা হয় এবং এ সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত পাঠানোর জন্য বলা হয়েছিল। উত্তরে নির্মূল কমিটির পক্ষ থেকে তখন জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে বাংলাদেশে এখনো দিবসটি ঘোষণা হয়নি জানালে, তারা জানান, যা বাংলাদেশ জাতীয়ভাবে পালন করে না, তা আন্তর্জাতিকভাবে কেন জাতিসংঘকে পালন করতে হবে? পরে আর্মেনিয়ার প্রস্তাব অনুযায়ী ৯ ডিসেম্বর গণহত্যা দিবস হিসাবে পালন করার সিদ্ধান্ত নেয় জাতিসংঘ। জাতিসংঘ যেদিন ৯ ডিসেম্বরকে গণহত্যা দিবস ঘোষণা করে, সেদিন বাংলাদেশও উপস্থিত ছিল। কিন্তু ভেটো দেয়নি। একবারও বলেনি, গণহত্যা দিবসটি হওয়া উচিত ২৫ মার্চ। কারণ বিশ্বে কোথাও একদিনে এত বড় হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়নি। এভাবেই ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস পালনের স্বীকৃতি বাংলাদেশের হাত ছাড়া হয়ে যায়। উল্লেখ্য, এ ঘটনারও দুই বছর পর ২০১৭ সালের ১১ মার্চ, জাতীয় সংসদে ২৫ মার্চকে ‘গণহত্যা দিবস’ ঘোষণা করা হয়। ওই বছর থেকে ২৫ মার্চ রাষ্ট্রীয়ভাবে গণহত্যা দিবস পালন করে আসছে বাংলাদেশ।

২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস পালনের সুযোগ হাত ছাড়া হয়ে গেলেও, নয় মাসের গণহত্যার স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য এখন চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। সরকার আন্তরিকভাবে চেষ্টা করলে এবং সে মোতাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অত্যন্ত শক্তিশালী কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিতে পারলে একাত্তরের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অবশ্যই পাওয়া যাবে। পাকিস্তান ও চীন বাদে বাকি বিশ্বের সব দেশই বাংলাদেশের অনুকূলে সমর্থন দেবে বলে আশা করা যায়। ইতোমধ্যেই মুক্তিযুদ্ধের সময়ে পাকিস্তানকে সমর্থনকারী যুক্তরাষ্ট্রের ইতিবাচক ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ সরকারকে এখন চীনের সমর্থন আদায়ে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করতে হবে। একাত্তরে যেসব দেশ বাংলাদেশের গণহত্যার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছিল, তাদের জোরালোভাবে অনুরোধ করলে দেশগুলো তাদের পার্লামেন্টে প্রস্তাব পাশ করবে বলে আশা করা যায়। অতএব, আর সময় অপচয় না করে, সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে তাদের দক্ষতার পরিচয় দেবেন বলে আশা করি।

একেএম শামসুদ্দিন : অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম