এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের বাংলা প্রথমপত্র

ড. সনজিত পাল
প্রকাশ: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সিনিয়র শিক্ষক, সেন্ট গ্রেগরী হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ লক্ষ্মীবাজার, ঢাকা
ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯
-শামসুর রাহমান
আধুনিক বাংলা সাহিত্যে শামসুর রাহমান (১৯২৯-২০০৬) নগর জীবনের কবি বা নাগরিক কবি হিসাবে খ্যাত। ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দে ‘সাপ্তাহিক সোনার বাংলা’ পত্রিকায় কবির প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয়। আজীবন তিনি নিষ্ঠার সঙ্গে কাব্যসাধনায় নিয়োজিত ছিলেন; তিনি ছিলেন গণতন্ত্রের পক্ষে, ছিলেন সত্য, সুন্দর ও ন্যায়ের পক্ষে। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতাযুদ্ধ ও পরবর্তী সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন তার কবিতাকে করেছে অনন্য বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত। নগর জীবনের যন্ত্রণা, একাকিত্ব, পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধন ইত্যাদি তার কবিতার লক্ষণীয় বৈশিষ্ট্য। তিনি গল্প-উপন্যাস, শিশু সাহিত্য ও অনুবাদ কর্মেও উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন। ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবি শামসুর রাহমানের দেশপ্রেম, গণজাগরণ ও সংগ্রামী চেতনার কবিতা। ১৯৬৯-এ পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বাঙালি জাতির গণআন্দোলন এ কবিতায় প্রকাশ পেয়েছে। ১৯৬৯ সালে জাতিগত শোষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে এদেশের মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে প্রত্যন্ত গ্রামগঞ্জ, হাটবাজার, কলকারখানা, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঢাকার রাজপথে জড়ো হয় এবং গণআন্দোলনের মাধ্যমে তারা নিজেদের শক্তির গণজাগরণ ঘটায়। কবি এ বিচিত্র শ্রেণি-পেশার মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সংগ্রামী চেতনাকে অসাধারণ এক শিল্পভাষ্যে তুলে ধরেছেন এ কবিতায়। কবিতাটি একুশের রক্তঝরা দিনগুলোতে স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে এদেশের সংগ্রামী মানুষের আত্মাহুতির মাহাত্ম্যে প্রগাঢ়তা লাভ করেছে। দেশকে ভালোবেসে মানুষের আত্মদান ও আত্মাহুতির প্রেরণাকে কবি গভীর মমতা ও শ্রদ্ধার সঙ্গে মূর্ত করে তুলেছেন। এটি একাধারে ইতিহাসকে তুলে ধরেছে, অন্যদিকে ইতিহাসের বর্ণনার মাধ্যমে কবির দেশপ্রেমও সমুজ্জ্বল হয়ে উঠেছে।
‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতাটি পড়ার সময় যে দিকগুলো ভালো করে খেয়াল করতে হবে-
‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতায় কবি ইতিহাসের আলোকে বাঙালি জাতির সংগ্রামী চেতনার প্রতিফলন ঘটিয়েছেন। এ কবিতাটি পড়ার সময় বাঙালির জাতীয় ইতিহাসে ১৯৬৯ সালের ভূমিকা ব্যাখ্যা করতে হবে। ১৯৬৯ সালের গণআন্দোলনে বাঙালির সম্পৃক্ততা কেন প্রয়োজন হয়ে উঠেছিল তা গভীরভাবে উপলব্ধি করতে হবে। কেন পাক-সরকারের বিরুদ্ধে সাধারণ জনগণ রাস্তায় নেমেছিল, কেন শাসকগোষ্ঠী বাঙালির ওপর নির্মম নির্যাতন চালিয়েছে- এ প্রশ্নের উত্তর ইতিহাসের আলোকে আগে জানতে হবে। কবি কেন ১৯৬৯-এর আন্দোলনের মধ্যে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের ছায়া দেখেছেন? কেন কবি এ আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রতিবাদীর মুখে ভাষা শহিদ সালাম ও বরকতদের দেখেছেন? ভাষার অধিকার আর ’৬৯ আন্দোলনের মধ্যে কবি কী মিল খুঁজে পেয়েছেন? পাক-বাহিনীর নির্যাতনের মাত্রা কত ব্যাপক ও ভয়াবহ ছিল? বাঙালির মানবিকবোধ কারা ধ্বংস করেছে, কেন করেছে- তার কারণ গভীরভাবে বুঝতে হবে।
অনুধাবন প্রশ্ন
১. ‘ফুল নয়, ওরা/ শহিদের ঝলকিত রক্তের বুদবুদ, স্মৃতিগন্ধে ভরপুর’ -বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
২. ‘একুশের কৃষ্ণচূড়া আমাদের চেতনারই রং’- কেন বলা হয়েছে?
৩. ‘যে রং সন্ত্রাস আনে/ প্রাত্যহিকতায় আমাদের মনে সকাল-সন্ধায়’- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
৪. ‘এখন সে রঙে ছেয়ে গেছে পথ-ঘাট, সারা দেশ/ ঘাতকের অশুভ আস্তানা’- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
৫. ‘রাত্রি-দিন ভূলুণ্ঠিত ঘাতকের আস্তানায়, কেউ মরা, আধমরা কেউ’- ব্যাখ্যা কর।
৬. ‘দারুণ বিপ্লবে ফেটে পড়া’- ব্যাখ্যা কর।
৭. ‘চতুর্দিকে/ মানবিক বাগান, কমলবন হচ্ছে তছনছ’- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
৮. ‘আবার সালাম নামে রাজপথে’- কেন? ব্যাখ্যা কর।
৯. ‘বরকত বুক পাতে ঘাতকের থাবার সম্মুখে’- কেন? ব্যাখ্যা কর।
১০. ‘সালামের চোখ আজ আলোচিত ঢাকা’- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
১১. ‘সালামের মুখ আজ তরুণ শ্যামল পূর্ব বাংলা’- কেন বলা হয়েছে?
১২. ‘সালামের হাত থেকে নক্ষত্রের মতো/ ঝরে অবিরত অবিনাশী বর্ণমালা’- ব্যাখ্যা কর।
১৩. ‘ফোটে ফুল বাস্তবের বিশাল চত্বরে/ হৃদয়ের হরিৎ উপত্যকায়’- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
১৪. ‘সেই ফুল আমাদেরই প্রাণ’- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
১৫. ‘এখনো বীরের রক্তে দুঃখিনী মাতার অশ্রুজলে’- ব্যাখ্যা কর।
১৬. সর্বস্তরের জনসাধারণ ঢাকার রাজপথে জমায়েত হয়েছিল কেন?
১৭. ‘এ রঙের বিপরীত আছে অন্য রং’- বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
১৮. মানবিক বাগান বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
১৯. ‘ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯’ কবিতায় ‘ঘাতকের অশুভ আস্তানা’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?