
প্রিন্ট: ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০২:৫৬ পিএম

যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
আরও পড়ুন
অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। হামলার পাশাপাশি ইসরাইল গাজাতে সর্বাত্মক অবরোধও জারি রেখেছে। ফলে এই উপত্যকায় দেখা দিয়েছে তীব্র খাদ্যসংকট। এর মধ্যে সোমবার ইসরাইলি অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ বলেছেন, গাজায় গমের একটি দানাও ঢুকবে না। ইসরাইলি নির্দেশে এবার গাজায় পুরোপুরিভাবে বন্ধ হতে যাচ্ছে খাদ্য সহায়তা। আনাদুলু এজেন্সি।
স্থানীয় সরকার এবং মানবাধিকার প্রতিবেদন অনুসারে, গত ২ মার্চ থেকে গাজার সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দিয়েছে ইসরাইল। এর ফলে এই অঞ্চলে মানবিক, ত্রাণ এবং চিকিৎসা সহায়তার সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে এবং এতে করে সেখানে এক অভূতপূর্ব মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। মূলত গাজায় নতুন করে আক্রমণের অংশ হিসাবেই এই অবরোধটি আরোপ করা হয়েছে। স্মোট্রিচ বলেছেন, তিনি এখনো গাজা থেকে ইসরাইলি বন্দিদের ফিরিয়ে আনার চেয়ে হামাসকে পরাজিত করাকেই অগ্রাধিকার দেন। ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলি হামলায় এ পর্যন্ত ২১১ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস। মঙ্গলবার আল জাজিরার প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে সংবাদ মাধ্যম ডন এ তথ্য জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, একটি গণমাধ্যম তাঁবুতে সোমবার ভোরে ইসরাইলের ভয়াবহ হামলায় পর ফিলিস্তিনি সাংবাদিকদের প্রতি বিশ্বব্যাপী সমর্থনের আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি জারি করেছে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস। সেই তথ্যানুযায়ী, ওই হামলায় গুরুতর দগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া আহমেদ মনসুর গাজায় ইসরাইলের নিহত ২১১তম গণমাধ্যমকর্মী। এতে বলা হয়, আমরা আন্তর্জাতিক সাংবাদিক ফেডারেশন, আরব সাংবাদিক ফেডারেশন এবং বিশ্বের সব দেশের সব সাংবাদিক সংগঠনের প্রতি গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনি সাংবাদিক এবং গণমাধ্যমকর্মীদের বিরুদ্ধে এই পদ্ধতিগত অপরাধের নিন্দা জানাতে আহ্বান জানাচ্ছি। এদিকে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর ও গাজায় সোমবার রাতভর অভিযান চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। গাজার সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, রাতভর ইসরাইলি বাহিনীর অভিযানে ২৪ ঘণ্টায় উপত্যকাজুড়ে ৬০ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন শিশুও রয়েছে। এছাড়া স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হচ্ছে, এদিন রাতে পশ্চিম তীরজুড়ে অভিযান অব্যাহত রাখে দখলদার বাহিনী। ফিলিস্তিনিদের তাদের বাড়িঘর থেকে গ্রেফতার এবং উচ্ছেদ করা হয়। এছাড়াও তাদের পানির ট্যাংকসহ গুরুত্বপূর্ণ সব স্থাপনা বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে উপত্যকার অন্য এলাকার মতো দেইর এল-বালাহ শহরের বাসিন্দারাও আছেন আতঙ্কে। কারণ, গত ১২ ঘণ্টা ধরে ইসরাইলি বিমান হামলার কেন্দ্রবিন্দু ছিল এই এলাকা। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, দেইর এল-বালাহ শহরের পশ্চিম অংশে একটি বাড়িতে হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। প্রাথমিকভাবে এ হামলায় ১১ জনের প্রাণহানির তথ্য পাওয়া গেছে। এ হামলায় নিহতরা সবাই একই পরিবারের সদস্য বলেও জানা গেছে। আল জাজিরা বলছে, কোনো সতর্কতা ছাড়াই ওই বাড়িটিতে হামলা চালানো হয়। উল্লেখ্য, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধে মঙ্গলবার পর্যন্ত ৫০ হাজার ৮১০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ১৫ হাজার ৬৮৮ জন। তবে সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, মৃতের সংখ্যা ৬১ হাজারেরও বেশি। ধ্বংসস্তূপের নিচে নিখোঁজ হাজার হাজার মানুষকে মৃত বলে ধারণা করা হচ্ছে।