
প্রিন্ট: ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০২:৫৬ পিএম
বেইজিংয়ে আরও ৫০ শতাংশ শুল্কের হুমকি
ট্রাম্পের হুমকিতে নেই ভয় লড়াইয়ে প্রস্তুত চীন
শুল্ক কমানোর অনুরোধ জানানো দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা শিগগির

যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
আরও পড়ুন
বিশ্বজুড়ে বাজছে যুদ্ধের দামামা। এরই মধ্যে বিশ্বের দুই বৃহত্তর অর্থনীতির মধ্যকার বাণিজ্যযুদ্ধও শুরু হয়েছে পুরোদমে। যুক্তরাষ্ট্রের শুরু করা এ যুদ্ধে দমে নেই চীনও। ট্রাম্পের হুমকিতে ভয় না পেয়ে, বরং লড়াইয়ে প্রস্তুত বলেই জানিয়েছে দেশটি। যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত শুল্কের বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকারও করেছে বেইজিং। মঙ্গলবার চীনা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
বুধবার ট্রাম্পের ‘রেসিপ্রোকাল শুল্ক’র আওতায় ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপের পর চীন শুক্রবার মার্কিন পণ্যের ওপর নতুন করে ৩৪ শতাংশ শুল্কের ঘোষণা দিয়েছে। চীনের স্টেট কাউন্সিলের বরাত দিয়ে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানিয়েছে, ১০ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে নতুন এই শুল্ক। চীনের এই পালটা শুল্কেই রেগে যান ট্রাম্প। এরই পরিপ্রেক্ষিতে চীনা পণ্যের ওপর আরও ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দেন তিনি। সোমবার ট্রাম্প বলেছেন, চীন যদি যুক্তরাষ্ট্রের ওপর আরোপ করা পালটা শুল্ক মঙ্গলবারের মধ্যে না কমায় তাহলে তাদের ওপর আরও ৫০ শতাংশ শুল্কারোপ করা হবে। অচিরেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলেই সতর্ক করেছেন তিনি। হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে চীনা পণ্যে মোট ১০৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ থাকবে। তবে ট্রাম্পের এ হুমকির জবাব দিয়েছে চীনও। যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত শুল্কের বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছে দেশটি। চীনা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পালটা ব্যবস্থা নেবে তারা। মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের তথাকথিত পারস্পরিক শুল্ক আরোপ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং একপাক্ষিক দাদাগিরির উদাহরণ। চীন ইতোমধ্যেই পালটা শুল্ক আরোপ করেছে এবং মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ বিবৃতিতে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে আরও পালটা ব্যবস্থা আসতে পারে। দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেছেন, চীনের বিরুদ্ধে শুল্ক বাড়ানোর মার্কিন হুমকিটি একটি ভুলের ওপর আরেকটি ভুল। এর মধ্য দিয়ে আবারও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতারণা করার স্বভাব প্রকাশ পেয়েছে। চীন কখনোই এটা মেনে নেবে না। তিনি আরও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকে, তাহলে এর শেষ না দেখা পর্যন্ত চীনের লড়াই চলবে।
বিশ্বের দুই বড় অর্থনৈতিক দেশের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ তীব্র আকার ধারণ করতে চলেছে। তাতেই অশনি সংকেত দেখছে আন্তর্জাতিক মহল। বিশ্ব নেতার নতুন শুল্ক নীতির জেরে সারা বিশ্বে শেয়ার বাজারে পতনও নেমে এসেছে। ট্রাম্প অবশ্য শুধু চীনকে নয় অন্যান্য দেশকেও হুমকি দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি লিখেছেন, ‘যদি কোনো দেশ আমাদের শুল্ক চাপানোর ওপর পালটা শুল্ক চাপায় তাহলে একইভাবে নতুন করে অতিরিক্ত শুল্ক চাপানো হবে।’ তবে এই যুদ্ধের দামামার মধ্যেই আবার কিছুটা আশার আলোও দেখা যাচ্ছে। ৫০টির বেশি দেশ ইতোমধ্যে হোয়াইট হাউজের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনায় বসতে যোগাযোগ করেছে। ট্রাম্পও জানিয়েছেন, শুল্ক কমানোর অনুরোধ করে যেসব দেশ হোয়াইট হাউজের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে সেসব দেশের সঙ্গে দ্রুত সমঝোতা আলোচনা শুরু করা হবে। হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে বার্তা সংস্থা এএফপিকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, ‘রিসিপ্রোক্যাল ট্যারিফ’ বা পারস্পরিক শুল্ক ঘোষণা করে বিশ্বে বাণিজ্যযুদ্ধের দামামা বাজিয়ে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার দাবি, এতদিন শিথিলতার সুযোগ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে বিপুল পরিমাণ শুল্ক আরোপ করেছে প্রধান প্রধান বাণিজ্য অংশীদার দেশ বা অঞ্চল। এর ফলে সেই দেশগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে। সেই বাণিজ্য ঘাটতি শূন্যের পর্যায়ে নামিয়ে আনতে তিনি পারস্পরিক শুল্কহার ঘোষণা করেছেন।