Logo
Logo
×

দশ দিগন্ত

অর্থনীতি তছনছ করে দেওয়ার হুমকি ট্রাম্পের

শান্তি চুক্তি না মানলে খবর আছে রাশিয়ার

যতদিন সম্ভব যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত এবং শান্তি স্থগিত করতে চায় রাশিয়া

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

শান্তি চুক্তি না মানলে খবর আছে রাশিয়ার

জেদ্দা বৈঠকে গৃহীত ৩০ দিনের শান্তিচুক্তি না মানলে খবর আছে রাশিয়ার। বুধবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে উদ্দেশ করে এমন হুমকিই দিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইউক্রেন-যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পর্যায়ে বৈঠকের সিদ্ধান্তের বাইরে গেলে রুশ অর্থনীতিকে ধূলিসাৎ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। এদিন ওভাল অফিস থেকে দেওয়া হুঁশিয়ারিতে ট্রাম্প বলেন, যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাতিল করলে পরিণতি ‘খুব খারাপ’ হবে। গার্ডিয়ান।

যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে রুশ প্রতিপক্ষকে চাপ দেওয়া যাবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘হ্যাঁ আমি পারি। তবে এটার প্রয়োজন হবে বলে মনে করছি না। আমি এমন কিছু করতে পারি যা রাশিয়ার জন্য সুখকর হবে না বরং এটি রুশ অর্থনীতিকে ধ্বংস করে ফেলবে। কিন্তু আমি এমনটা চাই না। কারণ আমি শান্তিতে বিশ্বাসী।’ এর আগে মঙ্গলবার সৌদি আরবের জেদ্দায় দীর্ঘ আট ঘণ্টা বৈঠক শেষে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় কিয়েভ। তবে এখনো এ বিষয়ে মতামত দেয়নি মস্কো। এ লক্ষ্যেই বৃহস্পতিবার যুদ্ধবিরতি কার্যকরে ‘ওয়াশিংটন পরিকল্পনা’ নিয়ে মস্কো পৌঁছেছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত স্টিভ উইটকফ। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। বলেছেন, অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে রাশিয়ার কাছ থেকে বিশ্ব ‘এখনো একটি অর্থপূর্ণ প্রতিক্রিয়া শুনতে পায়নি’। তিনি আরও বলেন, রাশিয়া ‘যতদিন সম্ভব যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত এবং শান্তি স্থগিত করতে চায়। আমরা আশা করি যে মার্কিন চাপ রাশিয়াকে যুদ্ধ শেষ করতে বাধ্য করার জন্য যথেষ্ট হবে।’ 

তবে এ বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে পুতিনের শীর্ষ পররাষ্ট্রনীতি উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ। তার মতে, ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে অনেক ফাঁকফোকর রয়ে গেছে। তার মতে, যুদ্ধ থামানোর জন্য এ যুদ্ধবিরতি একটি দীর্ঘমেয়াদি নিষ্পত্তি নিশ্চিত করে না। উশাকভ বলেন, ‘৩০ দিনের একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি? এটি আমাদের কি দেয়- কিছুই না। এটি শুধু ইউক্রেনীয় আরেকবার দলভারী করার ও শক্তি বাড়ানোর সুযোগ করে দিচ্ছে।’ 

শর্তসাপেক্ষে যুদ্ধবিরতিতে রাজি পুতিন

যুদ্ধবিরতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে রাজি আছে রাশিয়া। তবে যেকোনো যুদ্ধবিরতিতে দুপক্ষের বৈরিতার মূল কারণগুলো আগে ফয়সালা করতে হবে। বৃহস্পতিবার বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে আলোচনার পর ক্রেমলিনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বলেন, আমরা শত্রুতা বন্ধের প্রস্তাবের সঙ্গে একমত। কিন্তু যুদ্ধবিরতি এমন হওয়া উচিত হবে, যাতে দীর্ঘমেয়াদি শান্তির দিকে যাওয়া যায় এবং এই সংকটের মূল কারণগুলো দূর হয়। 

চুক্তিতে রাশিয়ার দাবি

ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে চুক্তিতে বেশ কিছু দাবি এনেছে রাশিয়া। প্রথমত, কোনো অবস্থাতেই ন্যাটোর সদস্যপদ নিতে পারবে না ইউক্রেন । এ ছাড়া কিয়েভে কোনো বিদেশি সেনা মোতায়েন করা যাবে না। ক্রিমিয়াসহ ইউক্রেনের আরও যে চারটি অঞ্চল রাশিয়া দখল নিয়েছেন, সেগুলোকে রাশিয়ার ভূখণ্ড হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিতে হবে। রাশিয়ার ওপর সুইডেন ও ফিনল্যান্ডসহ যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর নজরদারি বন্ধ করতে হবে। এছাড়াও ইউক্রেনকে পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত দেশ হিসাবে থাকতে হবে। 

ইউক্রেনে ‘শান্তিরক্ষী’ মানবে না মস্কো

ন্যাটো সমর্থিত কোনো দেশের ‘শান্তিরক্ষী’ ইউক্রেনে থাকতে পারবে না। ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির বার্তা নিয়ে মার্কিন বাহক মস্কোতে পা রাখার ঠিক আগ মুহূর্তেই যুক্তরাষ্ট্র ও কিয়েভকে এ কঠিন শর্ত দিলো রাশিয়া। এমনকি এ বিষয়ে কোনো আপস হবে না বলেও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। বুধবার এক বিবৃতিতে দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘কেউ আমাদের সঙ্গে কথা বলছে না। তারা বলতে থাকে ইউক্রেন ছাড়া ইউক্রেন বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হবে না অথচ রাশিয়াকে ছাড়াই রাশিয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে তারা (পশ্চিমা গোষ্ঠী)।’ বিবিসি। 

এবারই শুধু নয়, যুদ্ধবিরতির আলোচনায় ইউক্রেনে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী না সিদ্ধান্তটি ২৫ ফেব্রুয়ারিতেই পরিষ্কার করেছিল রাশিয়া। সেসময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছিলেন ইউরোপীয় সেনাদের ইউক্রেনে থাকলে আপত্তি নেই ভ্লাদিমির পুতিনের। কিন্তু ট্রাম্পের এমন দাবিকে জোর গলায় নাকোচ করেছিল রাশিয়া।


Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম