অবৈধদের বিরুদ্ধে বাড়ছে তৎপরতা
অভিবাসীদের সাজা দিতে কারাগার বানাচ্ছেন ট্রাম্প
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
যুক্তরাষ্ট্রের অবৈধ অভিবাসীরা যেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘গলার কাঁটা’। ফলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে তৎপর ট্রাম্প। এরই মধ্যে দেশটির বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে অনথিভুক্ত হাজার হাজার অভিবাসীকে। অনেককে পাঠানো হয়েছে নিজ দেশে। এবার অনিবন্ধিত অভিবাসীকে নিয়ে বিস্ময়কর এক পরিকল্পনা করল নতুন এই প্রেসিডেন্ট। পরিকল্পনা অনুযায়ী, কিউবার গুয়ান্তানামো বে এলাকার কুখ্যাত কারাগারে ৩০,০০০ অভিবাসীকে বন্দি করা হবে। ট্রাম্প বলেছেন, তার কথায় ৩০ হাজারের মতো ‘অপরাধী অবৈধ এলিয়েনকে’ (অবৈধ অভিবাসী) আটকে রাখতে কিউবার পূর্বাঞ্চলীয় কুখ্যাত সামরিক স্থাপনায় একটি আটকশিবির নির্মাণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। এএফপি।
গুয়ান্তানামো বে কারাগার নামে পরিচিত এ স্থাপনায় ৯/১১ হামলার পর থেকে সন্দেহভাজন ‘সন্ত্রাসীদের’ বন্দি করে রাখছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন জনগণকে হুমকিতে ফেলা সবচেয়ে খারাপ অপরাধী অবৈধ এলিয়েনদের আটকে রাখতে গুয়ান্তানামোতে আমাদের ৩০ হাজার শয্যা আছে। এর আগে ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেন ট্রাম্প। নির্বাচনি প্রচারণাতেও ট্রাম্পের অভিবাসনবিরোধী এজেন্ডা দেখা গেছে। এ ছাড়াও অভিষেক অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণেই অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দেন তিনি। বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে প্রবেশ বন্ধ করে দেবেন তিনি। অবৈধ অভিবাসীদের ‘অপরাধী’ হিসাবে বর্ণনা করে ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে থাকা এমন লাখো অভিবাসীকে ফেরত পাঠানো হবে। এবার অবৈধ অভিবাসীদের গুয়ান্তানামো বেতে বন্দি করে রাখা নিয়ে ট্রাম্পের ঘোষিত পরিকল্পনায় যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হওয়া অভিবাসীবিরোধী অভিযান আরও জোরদার হবে বলে মনে করা হচ্ছে। চুরি বা সহিংসতায় জড়িত অভিবাসীদের বিচারপূর্ব আটকাদেশ নিয়ে নিজের স্বাক্ষর করা একটি বিল প্রসঙ্গে হোয়াইট হাউজে বক্তব্য দিচ্ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ সময় তিনি বলেন, গুয়ান্তানামো পরিকল্পনা ‘অভিবাসীদের অপরাধের অভিশাপ নির্মূলে আমাদের এক ধাপ এগিয়ে নেবে।’ মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ পেন্টাগনের তথ্য মতে, ২০০৩ সাল পর্যন্ত গুয়ান্তানামো বে’তে বন্দিসংখ্যা ৬৮০ জনে দাঁড়ায়। তবে কোনো কোনো প্রতিবেদনে এই সংখ্যা ৮০০ জন বলা হয়েছে। শুরু থেকেই এই কারাগারে বন্দিদের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, বিনাবিচারে দীর্ঘদিন আটকে রাখা এবং আইনজীবী বা ন্যায়বিচারের সুযোগ না দেওয়ার মতো ভয়াবহ অভিযোগ ওঠে। দীর্ঘদিন ধরে গুয়ানতানামো বে কারাগারটি বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছিল কিছু মানবাধিকার সংগঠন। মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর কঠোর সমালোচনা ও প্রতিবাদের মুখে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বন্দিদের মুক্তি দেওয়া শুরু হয়। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারসহ কয়েকটি স্থাপনায় হামলার প্রেক্ষাপটে বিশ্বজুড়ে তথাকথিত সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান শুরু করে দেশটি। এর আওতায় আফগানিস্তান, ইরাক ও আরও কয়েকটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে সেনা অভিযান চালায় তারা। অভিযানে আটক হওয়া ব্যক্তিদের ধরে এনে কুখ্যাত গুয়ান্তানামো বে কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়।