‘মানুষ’ হিসাবে স্বীকৃতি পেল তারানাকি পর্বত
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
তারানাকি পর্বত। বর্তমানে তারানাকি মাউঙ্গা নামেই বেশি পরিচিতি। তবে নিউজিল্যান্ডের এই মাউন্ট তারানাকি এখন আর শুধু একটি পর্বত নয়। সম্প্রতি আইনিভাবে ‘মানুষ’ হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে এটি। বৃহস্পতিবার এপির খবরে বলা হয়েছে, এই পর্বতকে স্থানীয় মাওরি জনগোষ্ঠী বরাবরই তাদের পূর্বপুরুষ হিসাবে ভেবে এসেছে।
নিউজিল্যান্ড সরকার একটি নতুন আইন পাস করে তারানাকিকে সম্পূর্ণ মানবিক অধিকার ও দায়িত্ব প্রদান করেছে। বিষয়টিকে ঐতিহাসিকভাবে ন্যায়বিচারের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে। নতুন আইন অনুযায়ী, তারানাকি মাউঙ্গার মানুষ সত্তার নাম দেওয়া হয়েছে ‘তে কাহুই তুপুয়া’। আইনিভাবে এখন এই পর্বত ও তার আশপাশের ভূমিকে একটি জীবন্ত ও অবিভাজ্য সত্তা হিসাবে গণ্য করা হবে। এতে পর্বতটির সংরক্ষণ, ঐতিহ্যগত ব্যবহার ও এর সুস্থতা রক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এই আইনটি মাওরি জনগণের বিরুদ্ধে উপনিবেশবাদী অন্যায়ের স্বীকৃতি হিসাবে এসেছে। নতুন আইনি অধিকার তারানাকি পর্বতটির স্বাস্থ্য ও সুস্থতা রক্ষা করতে সাহায্য করবে। এর ফলে, কেউ চাইলেই ওই অঞ্চলটির ভূমি জোর করে কিনতে পারবেন না। এ ছাড়া পর্বতটি ঘিরে মাওরিদের ঐতিহ্যগত ব্যবহারের যেসব প্রথা ছিল সেগুলো আবারও প্রবর্তন করা হবে এবং স্থানীয় জীববৈচিত্র সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া যাবে। আইনটি পাস হওয়ার সময় সংসদ সদস্যরা সর্বসম্মতভাবে ভোট দিয়েছেন। সংসদ গ্যালারিতে উপস্থিত মাওরি জনগোষ্ঠী আনন্দে ‘ওয়াইতা’ (মাওরি গান) গেয়ে মুহূর্তটি উদযাপন করেন। নিউজিল্যান্ড বিশ্বে প্রথম দেশ, যেখানে প্রকৃতিকে আইনিভাবে ব্যক্তি হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এর আগে ২০১৪ সালে তে উরেওরা নামে এক বিশাল বনভূমিকে এই মর্যাদা দেওয়া হয়েছিল। ২০১৭ সালে ওয়াঙ্গানুই নদীকেও একই স্বীকৃতি দেয় দেশটি। এবার তারানাকি পর্বতটি শুধু একটি প্রকৃতির সৃষ্টি নয়, এটি একটি জীবন্ত অস্তিত্ব হিসাবে স্বীকৃতি পেল। নিশ্চিতভাবেই এই আইন, নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। যেখানে প্রকৃতি ও মানুষের সম্পর্ক আরও গভীরভাবে স্বীকৃত হলো।