প্রথা ভেঙে জীবনসঙ্গী খুঁজছেন পাকিস্তানিরা
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ৩১ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
রক্ষণশীল প্রথা ভেঙে নিজেদের জীবনসঙ্গী নিজেরাই খুঁজছেন পাকিস্তানি তরুণ-তরুণীরা। বিয়ের বিষয়টিকে সহজ করতে সম্প্রতি লাহোরে বিবাহযোগ্য তরুণ-তরুণীদের এক সম্মেলনের আয়োজন করেছিল যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি বিয়ে ব্যবস্থাপনা অ্যাপ। এটি ‘মুজ’ অ্যাপ নামে পরিচিত। এই অ্যাপটির দাবি, তারা ইসলামি আদব-কেতা মেনেই বিয়ের আলাপ এগিয়ে নেয়। এই অ্যাপটি মুসলিমদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। এই অ্যাপটিতে ব্যবহারকারীর সম্মতি ছাড়া স্পষ্ট ছবি দেখানো হয় না এবং শুধু উভয়পক্ষের সব শর্ত মিলে গেলেই তারা দেখা-সাক্ষাৎ করতে পারেন। রয়টার্স।
অ্যাপটি তৈরির মূল উদ্দেশ্য ছিল যেন বিবাহযোগ্যরা নিজের মনের মতো করে তাদের জীবনসঙ্গী বেছে নিতে পারেন। পাশাপাশি বিবাহের বিষয়টি আরও সহজ করা। বিশেষ করে দেশটির রক্ষণশীল সমাজকে পাশ কাটিয়ে সারা জীবনের সঙ্গীকে বেছে নেওয়া। অ্যাপটির মাধ্যমে পরিচয়পর্ব শেষে ইভেন্টের মাধ্যমে সরাসরি দেখা করতে পারেন পাত্র-পাত্রীরা। নিজের পূর্ণাঙ্গ পরিচয় প্রকাশ না করে আইমেন নামে ৩১ বছরের এক নারী রয়টার্সকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে থাকা তার ভাইয়ের পরামর্শে তিনি এই অ্যাপটি ব্যবহার করা শুরু করেন। তিনি বলেন, ‘আমি টানা দুই সপ্তাহ এই অ্যাপটি ব্যবহার করি। এরপর আমি এই ইভেন্টের বিজ্ঞাপন দেখতে পাই। তখন আমি ভাবলাম, কেন আমি কিছু লোকের সঙ্গে সরাসরি পরিচিত হওয়া থেকে বিরত থাকব?’ আইমেন আরও জানান, তার মা তার সঙ্গে আসতে চেয়েছিলেন কিন্তু তিনি অসুস্থতার কারণে আসেননি। ২৭ বছর বয়সি মুয়াজ জানান, তিনি এক বছর ধরে ‘মুজ’ ব্যবহার করছেন এবং অ্যাপটির মাধ্যমে জীবনসঙ্গী খুঁজে পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী। তিনি বলেন, ‘অনেকের সঙ্গেই আমার মেলে। কিন্তু তাদের সবার আলাদা আলাদা চাহিদা আছে।’ মুয়াজ জানান, এই অ্যাপের অধিকাংশ নারী ব্যবহারকারীই শুরু থেকেই তাদের বাবা-মাকে সঙ্গে রাখার ব্যাপারে বেশি আগ্রহী। নূর-উল আইন চৌধুরী নামে আয়োজকদের একজন জানান, অনলাইনে এই ইভেন্টটি ব্যাপক সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে যে এখানে ‘হুক আপ সংস্কৃতি’ প্রসার করা হচ্ছে। তবে তিনি এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘এই আয়োজন মূলত অবিবাহিতদের একসঙ্গে বসার জন্য ছিল এবং যাতে সবাই নিরাপদে এই অনুষ্ঠান শেষ করতে পারে; সেদিকে আমাদের কড়া দৃষ্টি ছিল।’ প্রায় ২৪ কোটি মানুষের দেশ পাকিস্তানে তরুণ-তরুণীদের বিয়ের বিষয়টি বাবা-মায়েরাই সমাধা করে থাকেন। তারা নিজ নিজ সন্তানদের জন্য তাদের পছন্দসই-মানানসই সঙ্গী নির্বাচন করেন। সাধারণত, নিজ নিজ সম্প্রদায় এবং এমনকি নিজের পরিবারের বর্ধিত অংশের মধ্যেই বিয়ের রেওয়াজ প্রচলিত আছে দেশটিতে। দেশটিতে ডেটিং অ্যাপ বা বিয়ের অ্যাপগুলোকে এখনো নিষিদ্ধ বিষয় হিসাবেই ধরা হয়। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে ব্রিটেনে প্রথমবার চালু হয় মুজ। দেশটিতে উল্লেখযোগ্য মুসলিম জনসংখ্যা রয়েছে।