Logo
Logo
×

তারাঝিলমিল

বিনিয়োগকারীরা আত্মগোপনে

সংকটে অনলাইনভিত্তিক নাটক-সিনেমা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে শোবিজ অঙ্গনে। আন্দোলন ঘিরে প্রায় এক মাসের মতো বন্ধ ছিল নাটক সিনেমার সব শুটিং কার্যক্রম। অনলাইন মাধ্যমগুলো বেশ ঝুঁকিতে পড়েছে। বেকার ঘরে বসেছিলেন শিল্পীসহ সংশ্লিষ্ট সবাই।

Icon

তারা ঝিলমিল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার প্রায় এক মাস অতিবাহিত হলেও সংকট কাটেনি অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোতে। এখনো পুরোদমে শুরু হয়নি শুটিং। নির্মিত হচ্ছে না অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোর জন্য নতুন কোনো নাটক-সিনেমা। বরং অনিশ্চয়তা বেড়েছে। জানা যায়, অনলাইনভিত্তিক নাটক-সিনেমার বড় বিনিয়োগকারীরা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। যাদের অনেকেই এখন গা ঢাকা দিয়েছেন। এদিকে আবার অনেক প্রযোজকই বড় বাজেটের বিনিয়োগ থেকে সরে এসেছেন। কারণ, এ মুহূর্তে দর্শক দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে জানতেই আগ্রহী। বড় বাজেটের নাটক দিয়ে রাজনৈতিক ঘটনার ভিডিওর সঙ্গে টিকে থাকা কঠিন।

এদিকে দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বেশ কিছু বড় প্রতিষ্ঠানের ইউটিউব চ্যানেলে নাটক প্রচার করা হয়। তবে সেগুলোতে আগের মতো দর্শক নেই। ভিউ কম হওয়াতে আশাহত হচ্ছেন প্রতিষ্ঠানগুলো। ভিউ কমে যাওয়ায় আপাতত কোনো নতুন নাটকের শুটিং করছেন না প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানগুলো। বর্তমানে তারা নির্মাণের চেয়ে হাতে থাকা নাটকগুলোর মুক্তি নিয়েই চিন্তিত। এসব প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারদের দাবি, এখনো অস্থির একটা পরিবেশ চলছে। নতুন নাটক প্রকাশ করার মতো পরিস্থিতি নেই। বিজ্ঞাপন কমে গেছে। যে কারণে বেশির ভাগ শুটিংই বন্ধ। তবে কবে নাগাদ শুটিং শুরু করতে পারবেন সেটিও নিশ্চিত করে বলেননি কেউ।

অনলাইনের জন্য নিয়মিত নাটক বানান, এ রকম কয়েকজন নির্মাতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দর্শকরা এখন বিনোদনের চেয়ে রাজনীতিনির্ভর ভিডিও বেশি দেখছেন। সবচেয়ে বড় কথা, চলতি অনেক প্রজেক্টের বিনিয়োগকারীরাও আত্মগোপনে রয়েছেন। কারণ, তারা আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এ মুহূর্তে প্রযোজনাসংক্রান্ত কাজের সঙ্গে জড়িত থাকলে তাদের অর্থনৈতিক অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠবে, তদন্ত হবে, এসব ভয়েই তারা প্রযোজনা থেকে সরে থাকতে চাইছেন। জানা গেছে, অনেক সরকারি প্রতিষ্ঠানের বড় কর্মকর্তা নাটকে বিনিয়োগ করেছেন। নাম পরিচয় গোপন রেখে যারা তৎকালীন ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তারাও সরে গেছেন প্রযোজনা থেকে। ফলে অনলাইনভিত্তিক নাটক সিনেমায় মন্দাবস্থা দেখা দিয়েছে।

অনলাইন নাটক-সিনেমার এ মন্দাবস্থা কাটাতে সবাইকেই এগিয়ে আসতে হবে বলে মন্তব্য করেন সংশ্লিষ্টরা। সেক্ষেত্রে শিল্পীদের অতিরিক্ত পারিশ্রমিক নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। শিল্পীরা যদি তাদের পারিশ্রমিক কমিয়ে দেন তাহলে অনেক সাধারণ প্রযোজক সাহস করবেন নির্মাণে আসার। প্রযোজকরা জানান, একটা নাটকের ৬০ বা ৭০ শতাংশ টাকা একজন আর্টিস্টকেই পারিশ্রমিক হিসাবে দিতে হয়। শিল্পীদের পারিশ্রমিক কমাতে হবে। না হলে ইন্ডাস্ট্রি সামনে আরও বেশি বিপর্যয়ের দিকে যাবে।

এদিকে অভিনয়শিল্পীদের মধ্যে অনেকেই এখন অনলাইন প্ল্যাটফর্মের কাজ নিয়ে বেশ ব্যস্ত। ভিউ বেশি থাকায় তাদের কদর রয়েছে সর্বমহলে। এমনকি ভিউয়ের সঙ্গে তুলনা করে পারিশ্রমিকও নির্ধারণ করা হচ্ছে। কদরের তালিকায় ও ভিউয়ের দৌরাত্ম্যে এগিয়ে আছেন মোশাররফ করিম, জিয়াউল ফারুক অপূর্ব, মেহজাবিন চৌধুরী, নিলয় আলমগীর, জোভান, তৌসিফ মাহবুব, মুশফিক আর ফারহান, তানজিন তিশা, সাবিলা নূর, সাফা কবির, খায়রুল বাসার, জান্নাতুল হিমি, ইয়াশ রোহান, তাসনিয়া ফারিণ, সাদিয়া আয়মান, তটিনী, আরশ খানসহ বেশ কিছু অভিনয়শিল্পী।

এদিকে ইউটিউবে কিছু নাটক মুক্তি দেওয়া হলেও অনলাইনভিত্তিক পেইড অ্যাপ্সগুলোতে গত দেড় মাসে কোনো কন্টেন্ট মুক্তি দেওয়া হয়নি। গতকাল তাসনিয়া ফারিণ অভিনীত শর্টফিল্ম ‘একটি খোলা জানালা’ মুক্তি দেওয়া হয়। এছাড়া আজ মেহজাবিন অভিনীত ওয়েবফিল্ম ‘ফরগেট মি নট’ মুক্তির কথা রয়েছে। দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর পেইড অ্যাপসে কন্টেন্ট মুক্তির ধারাবাহিকতা ফেরানোর চেষ্টা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম