Logo
Logo
×

সুরঞ্জনা

সরাসরি ভোটে নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হোক

Icon

ইমন চৌধুরী

প্রকাশ: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

যোগ্যতায় ও নেতৃত্বে নারী তার কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখছেন পৃথিবীজুড়ে। বাংলাদেশের নারীরাও যোগ্যতায় ও নেতৃত্বে পুরুষের চেয়ে বিন্দুমাত্র পিছিয়ে নেই। তবু যেন সব বাধার দেওয়াল ভাঙা যায়নি এখনো। সমাজে নারী যেমন এগিয়ে যাচ্ছেন নিজের মেধায় ও যোগ্যতায়, একইভাবে প্রান্তিক নারীদের অনেকে আছেন এখনো নানা প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে টিকে থাকতে হয় তাদের। তাই অনেক ক্ষেত্রে আইন করে তাদের অধিকার সংরক্ষণের উদ্যোগ নিতে হয় রাষ্ট্রকে। সম্প্রতি জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন বহাল রাখা বা বাতিলের পক্ষে-বিপক্ষে চলছে নানা আলোচনা। অনেকে মনে করছেন, নারী তার যোগ্যতা ও মেধায় এগিয়েছেন অনেক। তাই আসন সংরক্ষণ নারীর যোগ্যতা ও মেধার প্রতি এক রকম অবমূল্যায়ন। তবে সংসদে নারীর প্রতিনিধিত্ব থাকাটা একবাক্যে জরুরি মনে করেন সবাই। কেবল তাই নয়, রাজনৈতিক দলগুলোর জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের কমিটিগুলোতেও নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা প্রয়োজন বলে মনে করেন নারী নেত্রীরা।

৫০টি আসন সংখ্যায় অনেক কম: ডা. ফওজিয়া মোসলেম

এ বিষয়ে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, ‘আমরা চাই সংসদে নারীর জন্য আসন থাকুক। এর প্রয়োজনীয়তা অবশ্যই আছে। তবে যেভাবে সংরক্ষিত আছে সেভাবে নয়, ভোটের মাধ্যমে নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে। সেক্ষেত্রে আমরা নির্বাচন পদ্ধতিরও পরিবর্তন চাই। বিশেষ করে দেশের জনসংখ্যার তুলনায় মাত্র ৫০টি আসন সংখ্যায় অনেক কম। এটি ৫০ থেকে ১৫০ আসনে বৃদ্ধি করতে হবে। কারণ এত বেশি জনসংখ্যার তুলনায় মাত্র ৫০টি আসন দিয়ে নারীর সমস্যা বা অধিকার প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। এ ১৫০ আসনে নারীরা সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে সংসদে বসবেন। সেক্ষেত্রে সংসদের মোট আসন সংখ্যা ৩৫০ থেকে বাড়িয়ে ৫০০ আসনে উন্নীত করা যেতে পারে। পাশাপাশি নারী সংসদ সদস্যদের কাজের পরিধিও সুনির্দিষ্ট করে দিতে হবে যাতে তারা সত্যিকারভাবে নারী এবং একইসঙ্গে সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য অবদান রাখতে পারেন।’

সংসদে নারীর প্রতিনিধিত্ব অবশ্যই থাকতে হবে: গীতা দাস

একই বিষয়ে নারীপক্ষের সভানেত্রী গীতা দাস বলেন, ‘প্রথমত আমাদের দাবি হলো রাজনৈতিক দলগুলোতে এক তৃতীয়াংশ নারী সদস্য নিশ্চিত করতে হবে। তাদের যে বিভিন্ন পর্যায়ের কার্যকরী কমিটি আছে সেখানে নারীদের এ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা খুব জরুরি। এছাড়া যে আলোচনাটা হচ্ছে সেক্ষেত্রে আমরা মনে করি, সংসদে নারীর প্রতিনিধিত্ব অবশ্যই থাকতে হবে। তবে সেটা এখন যেভাবে আছে সেভাবে নয়, এ পদ্ধতিতে পরিবর্তন এনে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নারীর প্রতিনিধিত্ব বা নারী সংসদ সদস্য নির্বাচিত করতে হবে। জনসংখ্যার তুলনায় নারীদের জন্য মাত্র ৫০টি আসন অপ্রতুল। এক্ষেত্রে আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করে প্রতি জেলায় একজন করে ৬৪ জেলার জন্য ৬৪ জন নারী সংসদ-সদস্য নিশ্চিত করা যেতে পারে এবং আগেই বলেছি তারা নির্বাচিত হবেন সরাসরি ভোটের মাধ্যমে। একইসঙ্গে তাদের কাজের সুযোগ দিতে হবে। তাদের কাজের পরিধি নিশ্চিত করতে হবে। শুধু রাখার জন্য রাখলে হবে না। তাদের কাজের সুযোগ না দিলে সুফল মিলবে না।’

নারী সদস্যদের কাজের সুযোগ দিতে হবে: শিউলি সিকদার

বাংলাদেশ নারী মুক্তি সংসদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শিউলি সিকদার বলেন, ‘আমরা বাতিল নয়, সংরক্ষিত নারী আসন রাখার পক্ষে। সেক্ষেত্রে ৫০টি আসন থাকুক সেটা আমরা চাই। তবে সেটা যেন ভোটের মাধ্যমে হয়। অর্থাৎ ভোটার সরাসরি ভোটের মাধ্যমে সংসদ-সদস্য নির্বাচন করবেন। এ আসন সংখ্যা ৫০ থেকে যদি আরও বাড়ানো যায় সেক্ষেত্রেও আমাদের আপত্তি নেই। নারী আসন ১০০ বা ১৫০ পর্যন্তও হতে পারে। তবে সবচেয়ে বেশি জরুরি বর্তমান ব্যবস্থায় আমাদের নারী সংসদ-সদস্যরা খুব বেশি কাজ করার সুযোগ পান না। এটা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তাদের এলাকা নির্দিষ্ট করে দিয়ে কাজের সুযোগ দিতে হবে। কাজ করার সুযোগ না পেলে সংখ্যা যা-ই হোক তাতে সুফল পাওয়া যাবে না। এ ব্যাপারে প্রয়োজনে বিদ্যমান আইন বা নীতি পরিবর্তন করে সংস্কার করা যেতে পারে।’

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম