ঘুম থেকে উঠে ওয়াশ রুমের আয়নায় দেখলেন মুখখানি কেমন যেন গ্রিজে মাখা। বাইরে থেকে এলেন, আয়নার সামনে দাঁড়াতেই দেখলেন মুখে তেলের রাজ্য।
মুখের তিনটি অংশ সবচেয়ে বেশি তৈলাক্ত লাগে। কপাল, চোয়াল আর নাক। এদের এক সঙ্গে ম্যাপ করলে মনে হয় ইংরেজি অ্যালফাবেট T। তাই মুখের এমন তেলতেলে হওয়ার অংশটিকে বলা হয় T zone। মুখ তেলতেলে হওয়ার প্রধান কারণ, চামড়ার মধ্য থেকে তেল জাতীয় কিছু বের হওয়া। কিন্তু সবার কি এমন ত্বক এবং ত্বক থেকে বের হওয়া তেলের খনি আছে ! সবার মুখ তো সমানভাবে তেলতেলে হয় না। এর জন্যে সরাসরি প্রথম দায়ী জেনেটিক্স। বংশাণুক্রমে আপনি এমন কিছু জীন বহন করেন, যারা অতিরিক্ত তেল উৎপাদন করতে সিগন্যাল দেয়। দ্বিতীয় কারণ হিসাবে সামনে আসে হরমোন। আপনার শরীরের কিছু হরমোন এর জন্য দায়ী।
শরীর যখন বয়ঃপ্রাপ্ত হয় এবং এর পেছনে যে হরমোনগুলো দায়ী, তা হচ্ছে-মেয়েদের ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরন, ছেলেদের টেস্টেস্টেরণ এসব উপাদান ত্বকের তেল গ্রন্থিকে স্টিমুলেটেড করে তেল বের করে। তাই দেখা যায় কিশোর-কিশোরীদের বয়ঃসন্ধিকালে মুখ সবচেয়ে বেশি তেলতেলে থাকে। এই প্রভাব বিশ থেকে ত্রিশ বছরের তরুণ তরুণীদের থাকে। বয়স বাড়লে আস্তে আস্তে সেটি কমে যায়।
তেলতেলে লাগার এই উপাদানটির নাম সিবাম। সিবাম বের হয় সিবাম গ্লান্ড থেকে। সিবাম ফ্যাট জাতীয় কিছু কেমিক্যাল এবং ওয়াক্স দিয়ে তৈরি। সিবামের কাজ স্কিনকে প্রটেক্ট করা এবং স্কিনকে শুকনো হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করা। সূর্যের আলট্রা ভায়োলেট রশ্মি থেকে রক্ষা করা থেকে বিভিন্ন জীবাণুকে চামড়ায় বসতে দেয় না সিবাম। ফলে শরীর জীবাণুর আক্রমণ থেকে সহজে রক্ষা পায়। সিবামের আরও অনেক কাজ আছে, তবে এতটুকু জানার পর নিশ্চয়ই মুখের তেল ভাব সৌন্দর্যের চোখে মন্দ লাগলেও শরীরের জন্যে যে এটি ভালো, তা কিন্তু আমরা সবাই একমত হতে পারি।