শিশুর ট্রামাডল সাপোজিটরি পয়জনিং
অধ্যাপক ডা. মাকছুদুর রহমান
প্রকাশ: ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে, শিশুদের মধ্যে নতুন ধরনের বিষক্রিয়া হচ্ছে। এটি ট্রামাডল সাপোজিটরি পয়জনিং নামে পরিচিত। এটি একই দুর্ঘটনাজনিত বিষক্রিয়া।
শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্য, জ্বর এগুলোর জন্য মলদ্বারে সঠিক ওষুধের বদলে যখন ট্রামাডল সাপোজিটরি দেওয়া হয় তখন শিশুদের এ বিষক্রিয়া হয়। এ সাপোজিটরি সাধারণত বয়স্করা ব্যথার জন্য ব্যবহার করে থাকেন। এটি ব্যবহারে শিশুদের শ্বাসকষ্ট, শ্বাস বন্ধ হওয়া, খিঁচুনি, বাচ্চার রক্তের চাপ কমে যাওয়া, হৃদস্পন্দন বেশি হওয়া প্রভৃতি উপসর্গ হতে পারে। অনেক সময় শিশুকে আইসিইউতে নেওয়া লাগতে পারে। এমনকি এতে মৃত্যুর ঝুঁকিও থাকে।
বাচ্চার যখন ২-৩ দিন পায়খানা হয় না বা জ্বর থাকে তখন অভিভাবকরা ভুলক্রমে গ্লিসারিন বা প্যারাসিটামল জাতীয় সাপোজিটরি এর বদলে ট্রামাডল সাপোজিটরি মলদ্বারে দিয়ে থাকে। ওষুধটির ডোজ অনেক বেশি থাকে বলে বিভিন্ন ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়।
এটা অভিভাবকদের অতিরিক্ত টেনশন, ওষুধগুলো একই জায়গায় একইসঙ্গে রাখা, দেখতেও প্রায় একই রকম বলে এ সাপোজিটরি অনেক সময় ভুল করেও দেওয়া হয়। অতীতে এ ওষুধগুলো সাপোজিটরি আকারে কম পাওয়া যেত বলে এ বিষক্রিয়া হতো না।
এ বিষক্রিয়া সমাজের সব শ্রেণির মধ্যে দেখা যায়। পুলিশ, চিকিৎসক, আইনজীবী, আর্থিক অসচ্ছল ও অল্প শিক্ষিত পরিবারে এ ধরনের বিষক্রিয়া বেশি হতে দেখা গেছে।
অভিভাবকদের সচেতনতা, একইসঙ্গে একই জায়গায় ওষুধগুলো না রাখা, আর ওষুধের মোড়কের রং যদি আলাদা করা হয়, তবে বাচ্চাদের এ বিষক্রিয়া কম হবে বলে আশা করা যায়।
লেখক : নবজাতক ও শিশু বিশেষজ্ঞ, বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট।