Logo
Logo
×

সুস্থ থাকুন

সরব ঘাতক নাক ডাকা

Icon

অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আজিজুর রহমান

প্রকাশ: ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সরব ঘাতক নাক ডাকা

নাক ডাকায় শুধু পাশে ঘুমিয়ে থাকা ব্যক্তির বিরক্তিরই উদ্রেক করে না, এটা রীতিমতো একটি অস্বাস্থ্যকর ও বিপজ্জনক অভ্যাস। কারও যদি মাঝে-মধ্যে হঠাৎ নাক ডাকার অভ্যাস থাকে, সেটা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু, যারা অভ্যাসবশত প্রায়ই নাক ডাকেন, তারা নানা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন। এ ধরনের অভ্যাসে ‘স্লিপ অ্যাপনিয়া’ জাতীয় সমস্যা হয়, যা মারাত্মক, এমনকি প্রাণঘাতী রূপ পর্যন্ত ধারণ করতে পারে।

তাছাড়া, নাক ডাকার বিদঘুটে আওয়াজে আপনার সঙ্গী বা সঙ্গিনীর ঘুমের ব্যাঘাত ঘটবে। অতিরিক্ত নাক ডাকার কারণে স্বামী-স্ত্রী অনেক সময় এক বিছানায় তো দূরের কথা এক রুমেও ঘুমাতে পারেন না। পশ্চিমা বিশ্বে বিবাহ বিচ্ছেদের যতগুলো কারণ রয়েছে নাক ডাকা রোগ তার মধ্যে অন্যতম। নাক ও মুখ দিয়ে স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে ও ছাড়তে না পারলে, নাক ডাকা সমস্যা শুরু হয়। নাক ডাকা বন্ধে ৫টি পরামর্শ হলো-

▶ যে কোন একপাশে কাত হয়ে ঘুমানোর অভ্যাস করুন। চিৎ হয়ে শোবার অভ্যাস ত্যাগ করুন। জিহ্বা ও গলার মাংসপেশি নাক ডাকা প্রতিরোধে কাজ করে। চিৎ হয়ে শোবার অভ্যাসে জিহ্বা ও গলার মাংসপেশিগুলো কিছুটা নেমে গিয়ে বেশ শিথিল ও সংকুচিত হয়ে পড়ায় স্বাভাবিকভাবে বাতাস চলাচলে বাধা সৃষ্টি হয়। ফলে, নাক ডাকা তীব্র হয়।

▶ মাঝে-মধ্যে নাক বন্ধ হওয়ার সমস্যা থাকলে, নাকের স্প্রে ব্যবহারে সাময়িক পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। এমনকি এভাবে সমস্যাটির সমাধানও হয়ে যেতে পারে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই স্প্রে ব্যবহার করুন।

▶ ধূমপান ও মদ্যপান থেকে দূরে থাকুন। এ দুটি নেশা আপনাকে স্বাস্থ্য-সমস্যার মারাত্মক ঝুঁকিতে ফেলবে, যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া হয়ত কখনো সম্ভব হবে না।

▶ স্থূলকায় শরীরের কারণেও অনেক সময় নাক ডাকার সমস্যা হতে পারে। তাই শরীরের ওজন স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করুন। এজন্য নিয়মিত হাঁটা, সাইক্লিং, যোগাসন, মেডিটেশন ও ব্যায়াম করা অভ্যাসে পরিণত করুন। সম্ভব হলে, সাঁতার কাটুন। কারণ, সাঁতার সর্বাঙ্গের ব্যায়াম হিসাবে বহু আগে থেকেই স্বীকৃত।

▶ নাক ডাকার অভ্যাস থাকলে একটু উঁচু বালিশ ব্যবহার করুন। এতে আপনার ঘাড়ে কম চাপ পড়বে ও গলাও কম সংকুচিত হবে এবং স্বাভাবিকভাবে বাতাস চলাচলে বাধা সৃষ্টি হবে না।

বাজারে অনেক ধরনের নাকের ড্রপ, তৈলাক্ত পদার্থ পাওয়া যায়, যা রাতের বেলা ঘুমানোর আগে ব্যবহার করা হলে নাক ডাকা কমতে পারে তবে, তার স্লিপ অ্যাপনিয়া চিকিৎসায় এগুলোর কোনো ভূমিকা নেই।

সঠিক চিকিৎসার পূর্বশত হচ্ছে রোগ নির্ণয়। বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞের পরামর্শে যারা স্লিপ অ্যাপনিয়াতে ভুগছেন তাদের সারা রাত স্লিপ সেন্টারে গিয়ে একবার পরীক্ষা করাতে হবে। স্লিপ স্টাডি বা পলিসমনোগ্রাফির মাধ্যমে ব্রেইন, হার্ট এবং শ্বাস এ তিনটির কার্যক্ষমতা বিস্তারিতভাবে জানা যায়।

লেখক : মেডিসিন ও বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ, হেলথকেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার লি., শ্যামলী, ঢাকা।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম