পর্ব : ১
আবারও ডেঙ্গু এলো তেড়ে
অধ্যাপক ডা. মো. ফয়জুল ইসলাম চৌধুরী
প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
আবারও ডেঙ্গু এলো তেড়ে
ডেঙ্গু ২০১৯ সালে অতিমারি বা মহামারি হিসাবে দেখা দেয়। এরপর প্রতি বছরেই ডেঙ্গু দেখা দিচ্ছে। এটা একটি মশাবাহিত রোগ। গত বছরের ন্যায় এ বছরও ডেঙ্গুর প্রকোপ ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। এ রোগের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লেখার প্রথম পর্ব প্রকাশ হলো আজ।
মূলত স্ত্রী এডিস মশা ডেঙ্গু ভাইরাস বহন করে। এ মশার কামড়ে রোগটি হয়। স্ত্রী এডিস মশার বৈশিষ্ট্য :
▶ গায়ে ও পায়ে সাদা-কালো ডোরা থাকে।
▶ পরিষ্কার পানিতে ডিম পাড়ে।
▶ আয়ুষ্কাল সপ্তাহ-মাস।
▶ সারা জীবনে কয়েকশ ফুট অতিক্রম করে।
▶ চলাফেরা করার সময় ভনভন আওয়াজ করে না।
▶ দিনের বেলায় কামড়ায়, রাতে সাধারণত কামড়ায় না। সূর্য ওঠার পর ২-৩ ঘণ্টা এবং সূর্য ডোবার আগে ২-৩ ঘণ্টা বেশি কামড়ায়। রাতে আলোকিত রুমেও কামড়ায়।
▶ কামড়ে ব্যথা পাওয়া যায় না।
▶ তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের নিচে চলে গেলে তার কামড়ানোর প্রবৃত্তি কমে যায়।
* পৃথিবীজুড়ে ডেঙ্গু বাড়ার কারণ
▶ জলবায়ু পরিবর্তন।
▶ দ্রুত এবং অপরিকল্পিত নগরায়ণ।
▶ অনুপযুক্তভাবে পানি জমানো।
▶ অনিয়ন্ত্রিত জনসংখ্যা বৃদ্ধি।
▶ আকাশ ভ্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় ডেঙ্গু ভাইরাসযুক্ত মশার স্থানান্তর বেড়ে যায়। এতে ডেঙ্গু মশার প্রকোপ বৃদ্ধি পায়।
* আক্রান্ত রোগী কতদিন পর্যন্ত অন্যের শরীরে ডেঙ্গু ভাইরাস ছড়াতে পারে
ডেঙ্গু ভাইরাস বহনকারী স্ত্রী এডিস মশা কামড়ানোর চার থেকে দশ দিন পর ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ দেখা দেয়। এ সময়কে সুপ্তিকাল বলে। রোগের লক্ষণ দেখা দেওয়ার পর পাঁচ দিন পর্যন্ত রোগীর রক্তে ডেঙ্গু ভাইরাস থাকে। এই পাঁচ দিনের মাঝে আক্রান্ত রোগীকে এডিস মশা কামড়ানোর পর ওই মশা অন্য কাউকে কামড়ালে সে (যাকে পরে কামড়িয়েছে) ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
* ডেঙ্গু জ্বরের সাধারণ লক্ষণ
যখন হঠাৎ জ্বর আসবে তার সঙ্গে তীব্র মাথা ব্যথা, গায়ে ব্যথা ও চোখেব্যথা থাকবে, তখন ধরে নেবেন ডেঙ্গু হয়েছে। গায়ে ব্যথার তীব্রতা এমনও হতে পারে, মনে হবে যেন কেউ আপনাকে পিটিয়েছে। এ অবস্থায় আপনি যেখানেই থাকেন না কেন অফিস, আদালত, ব্যবসা-বাণিজ্য, চলাফেরা বন্ধ করে বিশ্রামে চলে যাবেন এবং সময়ক্ষেপণ না করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন।
* ডেঙ্গু মৌসুমে জ্বর হলে আপনি কী করবেন
▶ যেখানে যে অবস্থায় থাকুন না কেন জ্বর এলে সঙ্গে সঙ্গে বিশ্রামে যাবেন।
▶ কালবিলম্ব না করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন।
▶ তরল, নরম এবং সহজপাচ্য খাবার খাবেন।
লেখক : সাবেক ইউনিট প্রধান, মেডিসিন বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।