Logo
Logo
×

সুস্থ থাকুন

খোসপাঁচড়ার চিকিৎসা ও সচেতনতা

Icon

অধ্যাপক ডা. মীর নজরুল ইসলাম

প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

খোসপাঁচড়ার চিকিৎসা ও সচেতনতা

অত্যন্ত বিব্রতকর ও বিরক্তিকর সমস্যার নাম খোসপাঁচড়া বা স্ক্যাবিস। প্রচলিত বাংলায় একে বলা হয় খুজলি বা খোসপাঁচড়া। এটি এক ধরনের সংক্রামক রোগ। শরীরের যে কোনো স্থানেই স্ক্যাবিস হতে পারে। এর সঙ্গে শীতের বা বাতাসের আর্দ্রতার সরাসরি কোনো সম্পর্কের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে দেখা গেছে, শীত এলেই এ সমস্যা ব্যাপক আকারে বেড়ে যায়।

* লক্ষণ ও সংক্রমণপ্রক্রিয়া

▶ স্ক্যাবিস বা খোসপাঁচড়া হলে প্রথমে ত্বকে রসযুক্ত ও পরে পুঁজযুক্ত বড় বড় ফুসকুড়ি হয়।

▶ ফুসকুড়িতে তীব্র চুলকানি হয় এবং চুলকাতে চুলকাতে ত্বকের ওপর ফোস্কা পড়ে যায়।

▶ নবজাতক ও শিশুদের ক্ষেত্রে ঘাড়, মাথার তালু, মুখ, হাতের তালু ও পায়ের পাতার নিচের অংশে বেশি হয়।

▶ সারাদিন অল্প চুলকালেও রাত হলে তীব্রতা অনেক বেড়ে যায়।

* যেভাবে সংক্রমিত হয়

▶ আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত কাপড়চোপড় বা তোয়ালে ব্যবহার করলে।

▶ আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে একই বিছানায় ঘুমালে।

▶ একই স্থানে বেশি মানুষ একসঙ্গে গাদাগাদি করে বসবাস করলে।

▶ আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে যে কোনো ঘনিষ্ঠ সাহচর্য এমনকি হাত মেলালেও সংক্রমণ হতে পারে।

▶ যৌনমিলনের মাধ্যমেও এটি ছড়িয়ে থাকে।

* রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা

অনেকেই খোসপাঁচড়া হলে প্রথমে নানা ধরনের জীবাণুনাশক ব্যবহার করে শরীর পরিষ্কার করার চেষ্টা করেন। এরপর নিজেরাই নানা ধরনের ওষুধ বা মলম কিনে আক্রান্ত স্থানে ব্যবহার করেন। এতে রোগ সারে না বরং ধীরে ধীরে পরিবারের সবার মধ্যেই এই রোগ ছড়িয়ে পড়ে। সেক্ষেত্রে একজন একজন করে নয়, একই সময়ে পরিবারের সবাইকে একসঙ্গে চিকিৎসা করাতে হবে।

স্ক্যাবিস নির্ণয় করতে প্রথমে রোগীর শারীরিক লক্ষণ পর্যবেক্ষণ করে আক্রান্ত ত্বক থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরপর ত্বকের সেই নমুনা মাইক্রোস্কোপের নিচে পরীক্ষা করে কীট ও এর ডিম শনাক্ত করে রোগ নির্ণয় করা হয়। রোগ নির্ণয়ের পর রোগের ধরন অনুযায়ী চিকিৎসক ব্যবস্থা নিয়ে থাকেন। তবে চিকিৎসা সফল হওয়ার পরেও এক থেকে চার সপ্তাহ পর্যন্ত চুলকানি হতে পারে।

* স্ক্যাবিস এড়াতে সচেতনতা

যেহেতু এটি সংক্রামক বা ছোঁয়াচে রোগ, তাই আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা বেশি জরুরি। এছাড়া ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা ও সাধারণ কিছু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে এ রোগ এড়িয়ে চলা সম্ভব। সেক্ষেত্রে যেসব নিয়মকানুন মেনে চলা জরুরি-

▶ অন্যের ব্যবহৃত জামাকাপড়, তোয়ালে, চিরুনি, ব্রাশ, রুমাল ইত্যাদি ব্যবহার করবেন না।

▶ পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের তোয়ালে, জামাকাপড়, বিছানার চাদর, বালিশ আলাদা রাখুন।

▶ দৈনন্দিন ব্যবহার্য জিনিস ভালোভাবে পরিষ্কার করে কড়া রোদে শুকাবেন।

▶ আক্রান্ত ত্বকে সাবান বা জীবাণুনাশক ব্যবহার করবেন না। এতে চুলকানি বাড়বে।

▶ চিকিৎসকের পরামর্শমতো ক্রিম বা লোশন ব্যবহার করুন।

▶ নিজে নিজে কোনো ওষুধ সেবন বা লোশন ব্যবহার করবেন না।

▶ আক্রান্ত ব্যক্তির সাহচর্যে এসেছেন এমন সবাই একই সময়ে একসঙ্গে চিকিৎসা নিন।

▶ কিছুদিন পরপর সম্ভব হলে বিছানার তোশক-গদি কড়া রোদে দিন।

▶ আক্রান্ত স্থানে ঘা হয়ে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হলে চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ সেবন করুন।

লেখক : অধ্যাপক, চর্ম ও যৌন রোগ বিভাগ, বারডেম ও ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ, শাহবাগ, ঢাকা, চেম্বার : ল্যাবএইড ডায়াগনস্টিকস ধানমন্ডি, ঢাকা।

 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম