দ্রুততম মানব-মানবী
ইসমাইলের পঞ্চম, শিরিনের ১৬

ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
যুক্তরাজ্য প্রবাসী ইমরানুর রহমান যে টানা পঞ্চমবার দ্রুততম মানব হচ্ছেন না, আগেই নিশ্চিত হয়েছিল। চোটজনিত কারণে তার অনুপস্থিতিতে এবার সেই মুকুট উঠল বাংলাদেশ নৌবাহিনীর মোহাম্মদ ইসমাইলের মাথায়। চার বছর পর জাতীয় অ্যাথলেটিক্সে ছেলেদের ১০০ মিটার স্প্রিন্টে প্রথম হয়েছেন তিনি। ইলেকট্রনিক বোর্ডে ইসমাইলের সময় ১০.৬১ সেকেন্ড। এ নিয়ে পঞ্চমবার দ্রুততম মানবের খেতাব জিতলেন ইসমাইল। দ্রুততম মানবী সেই শিরিন আক্তার। ইসমাইলের মতো তিনিও নৌবাহিনীর অ্যাথলেট। ১২.০১ সেকেন্ডে দৌড় শেষ করা শিরিন ১০০ মিটারে জয়ী হলেন এ নিয়ে ১৬ বার। ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে সোমবার ৪৮তম তিনদিনের জাতীয় অ্যাথলেটিক্সের প্রথমদিনের দুই প্রধান আকর্ষণ ছিলেন ইসমাইল ও শিরিন।
ফিনিশিং লাইন পার হওয়ার সময় মনে হয়েছিল, ইসমাইল ও রাকিবুল হাসান সমান্তরালে ছিলেন। রাকিবুল ফিনিশিং লাইন টাচ করে পড়ে যান। কিন্তু ইসমাইল সটান পাড়ি দেন শেষসীমা। ফটোফিনিশিংয়ে বুক এগিয়ে থাকায় ১০০ মিটার স্প্রিন্টে স্বর্ণ জেতেন ইসমাইল। ২০১৮ সালে প্রথম ১০০ মিটার স্প্রিন্টে দেশসেরা হয়েছিলেন ইসমাইল। টানা আরও তিনবার। তবে লন্ডন প্রবাসী স্প্রিন্টার ইমরানুর রহমান লড়াইয়ে অবতীর্ণ হওয়ার পর আর সেই মুকুট ধরে রাখতে পারেননি নৌবাহিনীর এই স্প্রিন্টার। সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে ২০২২-২৪ টানা তিনটি দ্রুততম মানবের খেতাব জিতে নেন ইমরানুর। এবার অবশ্য চোটের কারণে জাতীয় অ্যাথলেটিক্সে খেলতে আসেননি তিনি। এতেই বাজিমাত ইসমাইলের।
তার কথায়, ‘ইমরানুর না থাকায় অবশ্য সুবিধা পেয়েছি। তবে অন্যরাও বেশ এগিয়েছে।’ মুকুট পুনরুদ্ধারে যে কষ্ট করতে হয়েছে, তা নিজে জানালেন ইসমাইল, ‘গত সাত মাস আমি টানা পরিশ্রম করেছি খেতাব পুনরুদ্ধারের জন্য। খাবারে প্রায় দুই লাখ টাকা খরচ করেছি। ১০০ মিটারের মধ্যে শেষ ১০ মিটারে এগিয়ে আসতে আমাকে অনেক কাজ করতে হয়েছে।’ টাইমিং নিয়ে সন্তুষ্ট ইসমাইল, ‘এটাই আমার ক্যারিয়ারসেরা টাইমিং। আগের টাইমিং ছিল ১০.৬৩ সেকেন্ড। দ্রুততম মানবের খেতাব জেতার সাফল্যে নিজের স্ত্রীকেও অংশীদার করলেন ইসমাইল, ‘আড়াই মাসের সন্তানকে নিয়ে আমার স্ত্রী ও অ্যাথলেট তামান্না আক্তার সমর্থন জুগিয়ে গেছেন। এজন্য এই সাফল্যে অর্ধেক কৃতিত্ব কোচ আবদুল্লাহেল কাফির (সাবেক তারকা অ্যাথলেট এবং যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপপরিচালক) এবং অর্ধেক আমার স্ত্রীর।’
জাতীয় ও সামার অ্যাথলেটিক্সে ক্যারিয়ারে টানা ১৬ বার দ্রুততম মানবীর খেতাব জিতলেন শিরিন। শিরিনের বিকল্প এখনো উঠে আসেননি। তার টাইমিং ১২.০১ সেকেন্ড। তার সতীর্থ সুমাইয়া দেওয়ানের ১২.১৫ সেকেন্ড। .১৪ মাইক্রোসেকেন্ড পেছনে। শিরিনও কৃতিত্ব দিলেন কোচ কাফিকে, ‘আমার কোচ কাফি স্যার অনেক কষ্ট করেছেন আমার জন্য। আমি কৃতজ্ঞ তার কাছে।’ শিরিনের কথায়, ‘আমার আশা, আমি আন্তর্জাতিক আসরে স্বর্ণপদক এনে দিতে চাই দেশকে। তারপর অন্যকিছু ভাবব।’ শিরিনের প্রতিপক্ষ কি এখনো তৈরি হননি? শিরিনের উত্তর, ‘প্রতিপক্ষ তৈরি হয়নি, তা আমি বলব না। কারণ ট্র্যাকে ন্যানো ও মাইক্রোসেকেন্ডে অনেক কিছুই ঘটে যেতে পারে। তাই দৌড়ানোর সময়ে সজাগ থাকতে হয়।’