একদিনের ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেন মুশফিক

ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির গ্রুপ পর্ব থেকে বাংলাদেশ বিদায় নেওয়ার পর দলের দুই সিনিয়র ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহর অবসরের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। একাধিক সাবেক আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারও কোনো রাখঢাক না করে, দলে এই দুজনের প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়েছে বলে রায় দেন। বিসিবি ইতোমধ্যে জানায় যে, তারা তাদের সঙ্গে কথা বলবেন। এরই মাঝে বুধবার রাতে সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে একদিনের ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার ঘোষণা দিলেন মুশফিক। টি ২০ থেকে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে অবসর নিয়েছিলেন তিনি। রইল বাকি শুধু টেস্ট। ক্রিকেটের আদি ফরম্যাটে খেলা চালিয়ে যাবেন ৩৭ বছর বয়সি এই উইকেটকিপার ব্যাটার। মুশফিক লিখেছেন, ‘আজকে থেকে ওয়ানডে সংস্করণ থেকে অবসরের ঘোষণা দিচ্ছি আমি।’ এছাড়া ঘরোয়া ক্রিকেটেও তিনি খেলে যাবেন।
কাল অবসরের ঘোষণায় মুশফিক লেখেন, ‘সবকিছুর জন্য আলহামদুলিল্লাহ। বৈশ্বিক পর্যায়ে আমাদের অর্জন হয়তো সীমিত, তবে একটি ব্যাপার ছিল নিশ্চিত, প্রতিবার দেশের জন্য যখন মাঠে নেমেছি, নিবেদন ও সততা দিয়ে নিজের শতভাগের বেশি দিয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘গত সপ্তাহ (চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি) আমার জন্য খুবই চ্যালেঞ্জিং ছিল। আমিও বুঝতে পেরেছি এটাই আমার নিয়তি।’ ওয়ানডে থেকে মুশফিকের বিদায়ে শেষ হলো বাংলাদেশ ক্রিকেটের একটি অধ্যায়ের। সেখানে গৌরব, অর্জন, প্রাপ্তি যেমন আছে, তেমনি আছে কিছু ব্যর্থতা আর হতাশার ছোঁয়াও। সবাইকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন তিনি। মুশফিক লিখেছেন, ‘সবশেষে, আমি গভীর কৃতজ্ঞতা জানাই আমার পরিবার, বন্ধু এবং আমার ভক্তদের, যাদের জন্য আমি গত ১৯ বছর ধরে ক্রিকেট খেলে এসেছি।’ এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে প্রথম ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে প্রথম বলেই আউট হন মুশফিক। পরের ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বিদায় নেন দুই রানে। এই ম্যাচে তার আউট হওয়ার ধরনে অনেক সমালোচনার জন্ম দেয়। টানা দুই ম্যাচে হেরে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে বিদায় নেয় বাংলাদেশ। দলের ব্যর্থতার দায় পড়ে মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহর ওপর। এই টুর্নামেন্টে দলের সবচেয়ে দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের দিকে তাকিয়ে ছিল বাংলাদেশ দলও। মুশফিক বিদায় নিলেও ওয়ানডে নিয়ে এখনো নিজের ভবিষ্যতের সিদ্ধান্ত জানাননি মাহমুদউল্লাহ। সম্প্রতি মুশফিকের পারফরম্যান্স নিয়ে সমালোচনা চলছিলই। সবশেষ ১৪ ইনিংসে তার ফিফটি মাত্র একটিতে। এর সাতটিতেই আউট হয়েছেন দুই অঙ্ক ছোঁয়ার আগে। ২০০৬ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারারেতে ওয়ানডে অভিষেক হয়েছিল মুশফিকের। তার আগের বছর লর্ডসে টেস্ট অভিষেক হয় তার। ২৭৪ ওয়ানডেতে ২৫৬ ইনিংসে ৩৬.৪২ গড়ে মুশফিক করেছেন ৭৭৯৫ রান। ৪২ বার রয়েছেন নটআউট। নয় সেঞ্চুরির সঙ্গে রয়েছে ৪৯টি হাফ সেঞ্চুরি। সর্বোচ্চ রানের ইনিংস ১৪৪। ওয়ানডেতে উইকেটকিপার হিসাবে ৫৬টি স্টাম্পিং করেছেন। ক্যাচ নিয়েছেন ২৪৩টি। এই সংস্করণে দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি ৩৭ ম্যাচে। সবচেয়ে উজ্জ্বল অধ্যায় ২০১২ এশিয়া কাপের ফাইনালে খেলা। ক্যারিয়ারে তার অবিস্মরণীয় কিছু ইনিংস রয়েছে। তবে দেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসাবে ১০০ টেস্ট খেলার মাইলফলক পূরণ করতে আর ছয়টি টেস্ট খেলতে হবে তাকে।