প্রাক-বাজেট আলোচনা
করবৈষম্য কমিয়ে আনা হবে বাজেটে: এনবিআর চেয়ারম্যান

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৬ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে করবৈষম্য কমিয়ে আনার চেষ্টা থাকবে। বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশে করের বৈষম্য থাকবে না। যেসব শিল্প কম হারে কর দিচ্ছে, তারা সারাজীবন তা করতে পারে না। হ্রাসকৃত কর হারের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া হবে। বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে রাজস্ব ভবনে প্রাক-বাজেট আলোচনায় এ কথা জানান জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান। এদিন আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশ (অ্যামচেম), ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ চেম্বার, ওমেন চেম্বার, বেজা, বেপজাসহ ১০টির বেশি ব্যবসায়ী সংগঠন ও সরকারি সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করে এনবিআর।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আগামী বাজেটে যারা কম হারে কর দেন, তাদের ওপরও করের বোঝা বাড়বে। কেননা এনবিআর যে পরিমাণ কর আদায় করে, তার সমপরিমাণ কর অব্যাহতি দিয়ে থাকে। এ অব্যাহতি সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে চাই। এনবিআরের টার্গেট হচ্ছে, যেসব খাত দীর্ঘদিন ধরে কর অব্যাহতি পেয়ে আসছে, তাদের কর অব্যাহতির যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ করা। এ বিষয়ে এনবিআরের ওপর চাপ আছে। ইতোমধ্যে কিছু খাতে অব্যাহতি কমিয়ে আনা হয়েছে। আগামী বাজেটে আরও কিছু খাতে অব্যাহতি সুবিধা প্রত্যাহার করা হবে। তিনি আরও বলেন, বৈষম্যহীন বাংলাদেশে করবৈষম্য থাকবে না। কেউ ব্যবসা করে সর্বোচ্চ হারে কর দেবে, আর কেউ ব্যবসা করে হ্রাসকৃত হারে কর দেবে, তা হতে পারে না। কোনো শিল্পের কর অব্যাহতির প্রয়োজন হলে সেটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য দেওয়া হবে। এটা অনির্দিষ্টকালের জন্য চলতে পারে না। আগামী বাজেটে যেসব শিল্প হ্রাসকৃত হারে কর দেয়, তাদের করহার বাড়বে। বাজেটে করবৈষম্য কমানোর প্রতিফলন থাকবে।
বিভিন্ন সেবার বিপরীতে রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র (পিএসআর) দেখানোর বাধ্যবাধকতা থাকায় গ্রাহক কমছে-ব্যবসায়ীদের এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, বর্তমানে অনলাইনে সহজেই রিটার্ন জমা দেওয়া যায়। তারপরও কিছু ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা থাকতে পারে। সেটা আমরা বিবেচনায় নেব। আগে টিআইএন থাকলেও অনেকে আয়কর রিটার্ন দিত না। তাদের মূলত করের আওতায় আনতে পিএসআর চালু করা হয়েছিল। এখন যেসব ক্ষেত্রে রিটার্ন জমার প্রয়োজন নেই, সেসব ক্ষেত্রে বাধ্যবাধকতা উঠিয়ে দেওয়া হবে।
এনবিআর চেয়ারম্যান আক্ষেপ করে বলেন, দেশে এক কোটির অধিক মানুষের কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) থাকলেও আয়কর বিবরণী দেন মাত্র ৪০ শতাংশের মতো। তবে যাদের টিআইএন আছে এবং করযোগ্য আয় রয়েছে, তারা রিটার্ন না দিলে ঘুমাতে পারবেন না। কারণ কর কর্মকর্তারা তাদের নোটিশ করবেন, রিটার্ন দেওয়ার জন্য বলবেন। যারা টিআইএন নিয়েছেন তাদের করের আওতায় আনতে এনবিআর কর্মকর্তারা নানাভাবে তাগিদ দেবেন।