Logo
Logo
×

দ্বিতীয় সংস্করণ

নির্বাচনের দাবিতে রাজপথে আন্দোলন করতে হতে পারে: সালাহউদ্দিন

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বর্তমান সরকারকে ‘সঠিক পথে নিয়ে আসতে’ রাস্তায় আন্দোলন করতে হতে পারে। এজন্য কিছু উদ্যোগ নেবে বিএনপি। একটা নির্বাচন আয়োজন করতে কী পরিমাণ সময় লাগে আমরা জানি। গত ৪০-৪৫ বছর ধরেই এই প্রক্রিয়ায় আছি। তাই যেই তারিখে গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে, সেই তারিখে নির্বাচন দিয়ে আরেকটা ইতিহাস তৈরি করুন। তিনি ফ্যাসিবাদী দল হিসাবে আওয়ামী লীগের বিচার প্রসঙ্গেও কথা বলেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের বিচারের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নেয়নি। সংগঠন হিসাবে বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে একটা সংশোধনী আনার কথা ছিল। কিন্তু সেখান থেকে সরকার সরে গেল। এখন যদি কোনো উপদেষ্টা বলেন যে, আমরা আওয়ামী লীগের বিচার চাই। তো বিচার চাওয়ার বিষয়ে আপনারা (উপদেষ্টা) কিছু করলেন না।

বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান : গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ দাবি জানান।

আওয়ামী লীগের বিচার প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমরা বিভিন্নভাবে বিচ্ছিন্নভাবে কথা বলছি। কালকেও দেখলাম যে, আওয়ামী লীগ এ দেশে নির্বাচন করতে পারবে না, করতে দেওয়া হবে না, নিষিদ্ধ করা হবে। এ বিষয়ে আমরা পরিষ্কার বলেছি, এটা বাংলাদেশের জনগণ নির্ধারণ করবে। যেই দল ফ্যাসিবাদী চরিত্রে দেশে গণহত্যা চালিয়েছে, মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য যে দল দায়ী, যে দলের নির্ধারিত সরকার দায়ী, শেখ হাসিনা অনির্বাচিত হয়ে প্রধানমন্ত্রিত্ব করেছেন, তার সিদ্ধান্তে, আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে এই দেশে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। সুতরাং ব্যক্তির সঙ্গে সেই সংগঠনের বিচার করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘সংগঠন হিসাবে আওয়ামী লীগের বিচার আমরা দাবি করছি, এ দেশের জনগণ দাবি করছে। ফ্যাসিবাদী শক্তি, গণতন্ত্র হত্যাকারী, গণহত্যাকারী মানবতাবিরোধী অপরাধী যারা, তাদের এবং সেই সংগঠনের বিচার হোক। বিচারের মাধ্যমে নির্ধারিত হোক, তা হলে জনগণ মেনে নেবে।’ এ সময় সংবিধানের মৌলিক সংশোধনের বিষয় তুলে ধরে ‘স্বাধীনতার সঙ্গে অন্যকিছু সমকক্ষ করা ঠিক হবে না’ বলেও মন্তব্য করেন সালাহউদ্দিন আহমেদ।

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা বলেন, আমরাও সংস্কার চাই। তবে স্বল্পমেয়াদি জরুরি সংস্কারগুলো নির্ধারণ করতে হবে। এজন্য জুলাই-আগস্ট যৌক্তিক সময়। এটা শুধু আমাদের দাবি নয়, অন্যান্য দল এবং সাধারণ মানুষেরও দাবি। তিনি বলেন, নির্বাচন দিতে কেন বিলম্ব হচ্ছে? সেটা জনগণকে জানাতে হবে। সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট পাওয়ার পর ১৫ দিন পার হয়ে গেছে; এখনো রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করেননি। আমি আশা করব, দ্রুত আলোচনা করে একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দিন হিসাবে ৫ আগস্ট সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ায় একটি স্মরণীয় দিন। এই দিনটিকে আরও স্মরণীয় করে রাখতে ৫ আগস্ট জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেওয়া যেতে পারে।

প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য তুলে ধরে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা মাঝে-মধ্যে বলেন যে, আমরা বেশি বেশি করে যেন সমালোচনা করি যাতে সরকার সঠিক পথে থাকে। এই সরকারের একটি ভালো গুণ আছে, তা হচ্ছে মাঝে-মধ্যে ভুল সিদ্ধান্ত নিলেও সমালোচনার মুখে সেই ভুলগুলো শুধরায়, গোঁ ধরে বসে থাকে না। যখন ভুল শুধরায় তখনই মনে করতে হবে এই সরকার জনগণের সরকার।’

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সঠিক রাস্তায় রাখতে সমালোচনায় গুরুত্বারোপ করে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যদি এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সফল হতে দিতে চাই, তাহলে সরকারকে গাইড করার জন্য, পরিচালনা করার জন্য আমাদের যথেষ্ট সমালোচনা করতে হবে। এমনকি আমাদের সড়কে আন্দোলনও করতে হতে পারে সরকারকে সঠিক রাস্তায় নিয়ে আসার জন্য।’

এসময় গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসাবে পাহারা দিয়েছিল রাজনৈতিক দলগুলো। কেউ এটা ভাববেন না যে, এই আন্দোলন ১০ থেকে ১৫ দিনে হয়ে সফল হয়েছে। এটা ঠিক নয়, বিগত ১৬ বছরের আন্দোলনের মাধ্যমে জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থান সফল হয়েছে।

দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, গত ৫ মাসে সরকার কোনো দক্ষতার পরিচয় দিতে পারেনি। বর্তমান সময়ে যেভাবে আন্দোলন হচ্ছে এগুলো বন্ধ না হলে পরিস্থিতি এলোমেলো হয়ে যেতে পারে। সংকট মোকাবিলায় নির্বাচিত সরকারের বিকল্প নেই। তাই আমি বলব ন্যূনতম সংস্কার শেষে দ্রুত নির্বাচন দিন।

আলোচনা সভায় বিজেএর সভাপতি পার্থ সারথি দাসের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন, বাসসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ, জাতীয় প্রেস ক্লাবেব সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভূঁইয়া, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক খুরশিদ আলম, যুগান্তরের নগর সম্পাদক মিজান মালিক, সিনিয়র সাংবাদিক শামীমুল হক, বাছির জামাল, গণঅধিকার পরিষদের আবু হানিফ প্রমুখ।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম