কোটা বাতিলের আন্দোলন
আপিল বিভাগের রায় নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া
মাহাদী হাসান
প্রকাশ: ১১ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
কোটাবিরোধী আন্দোলনে অচল ঢাকা, বুধবারের ছবি
সরকারি চাকরিতে কোটা বহালে হাইকোর্টের রায়ের ওপর স্থিতাবস্থা দিয়েছেন আপিল বিভাগ। কিছু পর্যবেক্ষণ, নির্দেশনাসহ এ আদেশ দেওয়া হয়। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগ বুধবার এ আদেশ দেন। এই রায় নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনরতরা কোটা বাতিল ও কিছু ক্ষেত্রে সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। অন্যদিকে ছাত্রলীগ মনে করে এই রায়ে শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতিফলন ঘটেছে।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায়ের ওপর এক মাসের স্থিতাবস্থা দিয়েছেন। স্থায়ী কোনো সমাধান আমরা দেখিনি। আমরা চাই সরকারের নির্বাহী বিভাগ একটি কমিশন গঠন করে কোটার যৌক্তিক সংস্করণ করুক। আমরা বলেছি সর্বোচ্চ পাঁচ শতাংশ পর্যন্ত কোটা থাকতে পারে। দাবি মেনে নেওয়া না পর্যন্ত সারা দেশে আন্দোলন চলবে। আন্দোলনরত অন্যান্য সমন্বয়করাও অযৌক্তিক এবং বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম মাত্রায় এনে সংসদে আইন পাশ করে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের কথা বলেন। এদিকে আপিল বিভাগের রায় ঘোষণার পর আজও ব্লকেড কর্মসূচি পালন করবেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ কর্মসূচির ব্যাপারে বলেন, বৃহস্পতিবার (আজ) বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে দেশের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে শিক্ষার্থীরা বাংলা ব্লকেড অব্যাহত রাখবে। বিকাল সাড়ে তিনটা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার থেকে আমরা আমাদের ব্লকেড কর্মসূচি শুরু করব। আমরা নির্বাহী বিভাগকে বলতে চাই অতিদ্রুত আমাদের দাবি মেনে নিন। যাতে আমরা পড়ার টেবিলে ফিরে যেতে পারি।
ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসাইন যুগান্তরকে বলেন, বিচার বিভাগের পর্যবেক্ষণকে আমরা স্বাগত জানাই। এটির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের যে যৌক্তিক প্রত্যাশা সেটিরও একটি প্রতিফলন ঘটেছে। বিদ্যমান সমস্যার একটি যৌক্তিক সমাধান জানানোর জন্য সব পক্ষকে আমরা ধৈর্য ধরার আহ্বান জানাব। কারণ এ বিষয়টি সমাধান করার জন্য বিচার বিভাগ, সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনই আন্তরিক। যে কারণে জনদুর্ভোগ তৈরি করে সে ধরনের কর্মসূচি ঘোষণা না করে সবাই যেন শান্তিপূর্ণ উপায়ে তাদের দাবি উপস্থাপন করে। মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন বলেন, উচ্চ আদালতের প্রতি আমাদের আস্থা রয়েছে। আমাদের প্রত্যাশা অবশ্যই বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার উচ্চ আদালতের আপিল বিভাগে ন্যায়বিচার পাবে। আমরা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে চূড়ান্ত রায়ের জন্য অপেক্ষা করছি। আদালতে আইনি প্রক্রিয়া চালানোর পাশাপাশি কোটা পুনর্বহালসহ সাত দফা দাবিতে রাজপথে নিয়মিত কর্মসূচি ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কোটা বাতিল আন্দোলনের নামে যারা সুপ্রিমকোর্টের গেটে গিয়ে হাইকোর্টকে ভুয়া বলে স্লোগান দিয়েছে তাদের বিচারের দাবি জানাচ্ছি।