Logo
Logo
×

সালতামামি

বছরজুড়ে আলোচিত

চাঁদপুরের ‘বালুখেকো’ সেলিম খান

Icon

মির্জা জাকির, চাঁদপুর

প্রকাশ: ০১ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদী থেকে ফ্রি স্টাইলে বালু উত্তোলনকারী (বালুখেকো) সেলিম খান ছিলেন বছরজুড়ে আলোচিত। চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত জমির দামও অস্বাভাবিক ধরায় তিনি দেশজুড়ে আলোচিত হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি অধিগ্রহণের নামে বিপুল পরিমাণ সরকারি অর্থ হাতিয়ে নিতে সেলিম খানের অপকৌশল ঠেকিয়েও চাঁদপুরের সাবেক জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ সারা দেশে আলোচিত হয়েছেন।

চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত ভূমি সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর মৌজা নির্ধারণ করা হয়। এরপর ৬২ একর ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু করতে গিয়ে দেখা যায়-ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সেলিম খান, তার ছেলে-মেয়েসহ অন্য জমি মালিকরা অস্বাভাবিক উচ্চমূল্যে দলিল তৈরি করেছেন। এর ফলে ওই জমি অধিগ্রহণে সরকারের ব্যয় অস্বাভাবিক বাড়ে। জমির অস্বাভাবিক দাম দেখে তৎকালীন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে সরকারের বিশাল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা। অর্থাৎ উচ্চদামের দলিলগুলো বিবেচনায় নিয়ে প্রাক্কলন তৈরি করলে সরকারের ৩৫৯ কোটি ১৬ লাখ টাকা ক্ষতি হতো। শুধু তাই নয়, সেখানকার মৌজামূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধিতে সাধারণ জনগণ ভূমি হস্তান্তরসহ নানা বিষয়ে সমস্যার সম্মুখীনও হতো। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ, জায়গা নির্ধারণ নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের মধ্যে পক্ষে-বিপক্ষে দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে রূপ নেয়। সেলিম খানকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ থেকে আজীবনের জন্য অব্যাহতি প্রদান করে জেলা আওয়ামী লীগ।

এদিকে, নদী রক্ষা কমিশন চাঁদপুরের পদ্মা মেঘনা নদীতে বালু উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। অপরদিকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম খানের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান আদালত। চলতি বছরের ১ আগস্ট সেলিম খানের বিরুদ্ধে দুদকের সহকারী পরিচালক আতাউর রহমান মামলা করেন। ৩৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে দুদক মামলা করে। মামলার অভিযোগে বলা হয়- সেলিম খান অবৈধ উপায়ে ৩৪ কোটি ৫৩ লাখ ৮১ হাজার ১১৯ টাকার সম্পদ অর্জন করে নিজের ভোগদখলে রেখেছেন। এছাড়া তিনি ৬৬ লাখ ৯৯ হাজার ৪৭৭ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত ভূমি অধিগ্রহণের জন্য সেলিম খানের ইউনিয়নের মেঘনাপাড়ের এলাকা নির্ধারণ করা হয়। ৬২ একর ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু করতে গিয়ে দেখা যায়, সেলিম খান ও ছেলে-মেয়েসহ জমির অন্য মালিকরা অস্বাভাবিক মূল্যে দলিল তৈরি করেছেন। ফলে ওই জমি অধিগ্রহণে সরকারের ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৫৫৩ কোটি টাকা। জমির অস্বাভাবিক মূল্য নিয়ে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) তদন্তে সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থ লোপাট করার পরিকল্পনা ধরা পড়ে। পরে ভূমি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো প্রতিবেদনে বিষয়গুলো উল্লেখ করেন ডিসি, যা নিয়ে সারা দেশে তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম