বেঁচে থাকতে খাবারের বিকল্প নেই। আর সুস্থ থাকতেও খাবার আপনার শরীরের একমাত্র চালিকাশক্তি। তবে এ খাবারের কারণেই অনেকে অসুস্থ হয়ে পরে। আর এ অসুস্থতা থেকেই নানা রোগবালাইয়ের আক্রমণ এমনকি আপনাকে ঠেলে দিতে পারে মৃত্যু মুখে নয় তো বা মুঠো ভর্তি ওষুধের দিকে। তবে এই খাবার যদি আপনি সঠিকভাবে খান তবে তাই হতে পারে আপনার শরীরের জন্য এক ধরনের ওষুধ। তাই জানতে হবে খাবারের বিষয়ে সঠিকভাবে। পরিমিত খাদ্যাভ্যাস আর সঠিক পুষ্টি আপনাকে রাখতে পারে সব সময় সুস্থ আর রোগবালাই থেকে মুক্ত।
খাবারের বেলাতে মুখরোচক খাবারের দিকেই নজর থাকে সবার আগে। তেল চর্বি ভরপুর খাবারই যেন থাকা চাই খাবার তালিকায় সবার আগে। খেতে সুস্বাদু হলেও কাজের বেলাতে ঠিক হয় তার উলটো। এতে করে শরীরের কলেস্টেরলের মাত্রা যেমন বৃদ্ধি পায় তেমনি আবার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার সূত্রপাত ঘটে এখান থেকে। পরবর্তিতে বুক জ্বালাপোড়া, পেটের নানা সমস্যার সৃষ্টি হয়। এছাড়া বাইরের খাবার ও একই রকমভাবে কাজ করে শরীরে। একই তেল, ফ্রিজে তুলে রাখা খাবার পরবর্তিতে পরিবেশনের কারণে খাবারে থাকা ভিটামিন, মিনারেল যেমন-হারিয়ে যায় তেমনি খাবারের স্বাদের মাঝেও আসে তারতম্য। তাই বাইরের তেলে ভাজাপোড়া খাবার বাদ দিতে হবে বছরের শুরু থেকেই। খাবার তালিকায় আনতে হবে কিঞ্চিৎ পরিবর্তন। অনেকেই সকালের নাস্তা না করেই ছুটেন অফিসে কিংবা কাজের খাতিরে নিজ নিজ দপ্তরের দিকে। এতে করে শরীর তার পর্যাপ্ত শক্তি পায় না। ঠিক দুপুর নাগাদ হালকা নাশতায় থাকে ভাজাপোড়া। এতে করেই বাঁধে যত বিপত্তি। তাই কোনোভাবেই সকালের নাশতা বাদ দেওয়া যাবে না খাবার তালিকা থেকে। সকালের নাশতাতে রাখতে পারেন ডিম, কলা অথবা মৌসুমি নানা ফল থেকে শুরু করে রুটি কিংবা এক গ্লাস দুধ। এতে করে আপনার দিনের শুরুটাই হবে ভরপুর শক্তির সঙ্গে। যাতে করে মেজাজও থাকবে ফুরফুরে। দুপুরের খাবার তালিকায় ভরপেট না খেয়ে কিছুটা খালি রাখার চেষ্টা করুন পেট। যাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আছে তারা খাবার আধা ঘণ্টা আগে অল্প পানি পান করুন, আর খাবার খাওয়ার আধা ঘণ্টা পর পানি পান করুন। এতে করে খাবার সঠিকভাবে পরিপাক হবে। খাবার সময় নিয়ে চিবিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করুন।
একটু আগেভাগেই সেরে নিন রাতের খাবার। খুব ভারী খাবার যেমন মাংস অথবা মাছ এড়িয়ে চলুন। এ জাতীয় খাবার হজম থেকেও অনেকটা সময়ের প্রয়োজন হয়। খাবার তালিকায় সবুজ শাকসবজি রাখুন। মৌসুমের ফলে থাকে নানা ধরনের ঔষধি গুণ। তাই খাবারের তালিকাতে রাখুন মৌসুমের একটি বা দুটি ফল। ঘরের সব সদস্যদের মৌসুমি ফল ক্ষেত্রে উৎসাহী করুন। বছরের শুরুর এ সময়ে শীতের প্রকপ বাড়ে আবার কিছুটা কমেও আসে। তাই বাতাসে আর্দ্রতার মাত্রাও থাকে অনেকেটা বেশি। তাই শরীর খুব দ্রুত ডিহাইড্রেড হয়ে পরে। তাই দিনে অন্তত আট থেকে নয় গ্লাস পানি পানের অভ্যাস করুন। যেহেতু এ সময়ে ঠাণ্ডা সর্দির সমস্যা কম বেশি সবারই থাকে। সেই ক্ষেত্রে লেবু আর আদার রস খাওয়ার অভ্যাস করুন। আদার রস পেটের জন্য অনেক বেশি উপকারী। আর লেবুতে থাকা ভিটামিন সি আপনার রোগবালাই দূর করতে সাহায্য করবে। যাদের জ্বর কিংবা ঠান্ডার সমস্যা এখন সবচেয়ে বেশি তারা কুসুম গরম পানিতে আদার রস আর সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে পান করতে পারেন। অন্যদিকে শীতের এ সময়ে কুসুম গরম পানি পানের অভ্যাস করুন। এতে করে আপনার শরীরের কাজ করার ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের কথা মাথায় রেখে প্রতিদিনের খাবার তালিকাতে অল্প অল্প করে পরিবর্তন আনুন। এতে করে আপনার পরিবারের প্রতিটি সদস্যসহ আপনিও থাকতে পারবেন বছরের শুরু থেকে সুস্থতার সঙ্গে।