সরকার উৎখাতে চক্রান্তের সংবাদ
আদালতে সাংবাদিকদের হেনস্তা সালমানের আইনজীবীদের
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সরকার উৎখাতে চক্রান্তের সংবাদ প্রকাশের জের ধরে ঢাকার আদালতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের আইনজীবীদের বিরুদ্ধে একাধিক জাতীয় সংবাদপত্রের সাংবাদিককে হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার সকালে বিভিন্ন থানার মামলায় গ্রেফতার ও রিমান্ড শুনানির জন্য সালমান এফ রহমান, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম, ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের এমডি দিলীপ কুমার আগারওয়াল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতসহ বেশ কয়েকজন আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। বেলা ১০টার দিকে তাদের হাজতখানা থেকে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এমএ আজহারুল ইসলামের আদালতে তোলা হয়। এর সঙ্গে সঙ্গেই কাঠগড়ায় সালমান এফ রহমানসহ আসামিদের তাদের আইনজীবীরা ঘিরে ধরেন। আগের মতোই সালমান এফ রহমানসহ সব আসামি তাদের আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলতে থাকেন। এরপর বিচারক ১০টা ১২ মিনিটে এজলাসে ওঠেন। এরপর আদালতে শুনানি চলাকালে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় প্রথমে কালের কণ্ঠ, পরে প্রথম আলো ও সর্বশেষ কালবেলায় কর্মরত সাংবাদিককে হেনস্তা করে এজলাস থেকে বের করে দেন সালমান এফ রহমানের আইনজীবীরা। এ সময় সাংবাদিকরা কেন এজলাস কক্ষে আছে এই বলে উত্তেজিত হয়ে পড়েন তারা। এরপর ছবি ও ভিডিও করার অভিযোগ তুলে হেনস্তার চেষ্টা করে এজলাস কক্ষে বিশৃঙ্খলা করেন আইনজীবীরা।
এর আগে গত ২৭ জানুয়ারি আদালতে এসে সরকারের বিপক্ষে বেক্সিমকো শ্রমিকদের মাঠে নামতে ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বার্তানুসারে সবাইকে ‘প্রস্তুত’ থাকতে তার আইনজীবীদের নির্দেশনা দেন সালমান এফ রহমান। ওই কারাগার থেকে টিস্যু পেপারে লিখে আইনজীবীর মাধ্যমে ‘গোপন বার্তা’ও পাঠান সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এরপর আদালতে আসামিদের নিয়ে যাওয়া আসার সময় কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আইনজীবীদের মাধ্যমে সাংবাদিকদের টার্গেটে রেখে হেনস্তা করার চেষ্টা করেন আওয়ামী লীগের সাবেক এই প্রভাবশালী মন্ত্রীরা।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে আদালত প্রাঙ্গণে সাংবাদিকতা করে আসছি। দুদিন আগে সাংবাদিকরা সালমান এফ রহমানসহ বেশ কয়েক আসামির আইনজীবীদের মাধ্যমে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার উৎখাতের বার্তা প্রদানের নিউজ করে। এর প্রেক্ষিতে বুধবার সব সাংবাদিককে নজরে রাখে আওয়ামী লীগের আইনজীবীরা। ‘এজলাস কক্ষে সাংবাদিক রয়েছে কেন’ প্রশ্ন তোলাসহ ছবি ও ভিডিও করার মিথ্যা অভিযোগ তুলে আদালত প্রাঙ্গণ অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। সাংবাদিকদের হেনস্তা করছেন তারা।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, সাংবাদিকরা এখানে তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করবেন। আইনজীবীরা কেন বাধা দেবে। তবে সামনের দিনগুলোতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কেউ যেন এ ধরনের আচরণ না করতে পারে বিষয়টি দেখব।
এ বিষয়ে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি খোরশেদ মিয়া আলম বলেন, ঘটনাটি খুবই নিন্দনীয়। যেসব আইনজীবী হেনস্তা করেছে, তাদের নাম দিলে আমরা ঢাকা আইনজীবী সমিতি থেকে ন্যায়বিচার করব। আইনানুগভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য যা যা করার দরকার আমরা প্রতিকার করব। কোন কোন আইনজীবী এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের নাম দিয়ে আমাদের সহায়তা করুন।