অর্থ আত্মসাতে অভিযুক্তরা রাজস্ব বিভাগেই বহাল
আদালতের নির্দেশনার ব্যত্যয়
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ২৬ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) রাজস্ব আত্মসাতের অভিযোগে একসময় বরখাস্ত ও চাকরিচ্যুত হয়েছিলেন ১৫ অনুমতি পরিদর্শক। মামলা করে সাত বছর পর তারা চাকরি ফেরত পান। কিন্তু শর্ত ছিল-এদের অর্থ বা রাজস্বসংশ্লিষ্টতা রয়েছে-এমন কোনো বিভাগ বা পদে পদায়ন করা যাবে না। অথচ চাকরি ফিরে পাওয়ার পর কিছুদিন না যেতেই উপরস্থ কর্মকর্তা ও পরবর্তী মেয়রকে ম্যানেজ করে তারা আবার রাজস্বসংশ্লিষ্ট বিভাগে পদায়ন বাগিয়ে নেন। আর এসব শাখায় নতুন করে গড়ে তোলেন সিন্ডিকেট। এই ১৫ কর্মকর্তার মধ্যে অধিকাংশই অবসরে চলে যান। কেউ কেউ মারাও গেছেন। যে কয়জন এখনো আছেন তারাই ‘সিন্ডিকেট বাণিজ্য’ করছেন বলে সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অভিযোগ করেছেন।
অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন-এএইচ এম শাহীন চৌধুরী, উপকর কর্মকর্তা (কর), সার্কেল-৩; নাসির উদ্দিন চৌধুরী, কর কর্মকর্তা (কর), সার্কেল-৫; দিদারুল আলম, উপকর কর্মকর্তা (লাইসেন্স), সার্কেল-৭; জয়নুল আবেদীন চৌধুরী জুনু, অনুমতিপত্র পরিদর্শক, সার্কেল-২; একেএম সালাউদ্দীন, কর কর্মকর্তা (লাইসেন্স), সার্কেল-৫। নাজিম উদ্দীন নামে স্বাস্থ্য বিভাগের এক কর্মচারী সার্কেল-৮ এ উপকর কর্মকর্তা হিসাবে চাকরি করছেন। তার বিরুদ্ধেও রাজস্ব আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। জানা গেছে, ১৯৮৮ সালে উল্লিখিত কর্মকর্তারা এক হাজার টাকা বেতনে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে কর আদায়কারী/করণিক হিসাবে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ পান। পরবর্তী সময়ে তারা পদোন্নতি লাভ করেন। অভিযোগ ওঠে, ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত এসব কর্মকর্তা গ্রাহকের কাছ থেকে নেওয়া বিপুল অংকের রাজস্ব করপোরেশনে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। তদন্ত কমিটি গঠন ও প্রতিবেদন পাওয়ার পর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ১৫ কর্মকর্তাকে একযোগে বরখাস্ত করা হয়। পরে পাঠানো হয় বাধ্যতামূলক অবসরে। সূত্র জানায়, বরখাস্ত হওয়া ও বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো কর্মকর্তারা উচ্চ আদালতে মামলা করেন। সাত বছর পর ২০০৮ সালে আদালত তাদের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার আদেশ দেন। তবে তাদের রাজস্ব আহরণ সংশ্লিষ্টতা রয়েছে এমন কোনো পদে পদায়ন না দেওয়ার নির্দেশনা দেন আদালত। প্রাথমিকভাবে তাদের রাজস্ব সংশ্লিষ্ট বিভাগে পদায়ন করা না হলেও পরে মেয়র ও কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে সবাই অর্থসংশ্লিষ্ট বিভাগে পদ নিয়েছেন। এর মধ্যে একেএম সালাউদ্দীনকে পরিচ্ছন্ন বিভাগে পদায়ন করা হলেও পরে তিনি রাজস্ব বিভাগে বদলি নেন। অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের বিষয়ে তদন্ত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে। চসিকের উপসচিব মো. আবুল হাশেম যুগান্তরকে বলেন, বিষয়গুলো অনেক আগের। অনেক কর্মকর্তা অবসরে চলে গেছেন। আদালতের নির্দেশনার ব্যত্যয় ঘটিয়ে কোনো কর্মকর্তা চাকরি অনিয়ম নথি দেখে ব্যবস্থা নিতে হবে।