Logo
Logo
×

অল্পকথা

সাত কলেজ সমস্যার সমাধান কী

Icon

ড. আবদুস সাত্তার মোল্লা

প্রকাশ: ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

গত ১২ ডিসেম্বর যুগান্তরের উপসম্পাদকীয় কলামে প্রকাশিত ‘কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীতকরণ নয়’ শীর্ষক নিবন্ধে আমি উল্লেখ করেছিলাম, ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম ইত্যাদি সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সদা সম্প্রসারমান কলেজ শিক্ষার ভার বইতে না পারার কারণেই ১৯৯২ সালে ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে একটি নতুন এফিলিয়েটিং বিশ্ববিদ্যালয়ের সৃষ্টি হয়।

গত দশকে সরকারের উচ্চ মহলের ভুল সিদ্ধান্তে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন টাকার লোভে ঢাকার সাতটি কলেজকে পুনরায় অধিভুক্ত করে কলেজগুলোর কাগজপত্র/নথি ইত্যাদি গাজীপুর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এনে অধিভুক্তি কার্যকর করতে বহু সময় অপচয় হয়। সবচেয়ে খারাপ যে ঘটনাটা ঘটে তা হচ্ছে, কলেজগুলোতে আবার সেশনজট ফিরে আসে এবং শিক্ষার্থীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাতটি কলেজের দায়িত্ব ফিরিয়ে দিয়েছে, যা খুবই বুদ্ধিমানের কাজ এবং সঠিক সিদ্ধান্ত বলে মনে করি। ধন্যবাদ জানাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে। এখন ঢাকার সাতটি কলেজের শিক্ষার্থীরা তাদের জন্য একটি নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে আন্দোলন করছেন এবং নতুন বিশ্ববিদ্যালয় সৃষ্টির জন্য ঘণ্টা বেঁধে দিয়েছেন। ‘পোলার বুদ্ধি গলায়’ বলে একটি প্রবচন আছে। ২৪ বা ৪৮ ঘণ্টায় কি কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা যায়? হ্যাঁ, ‘বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে কোচিং সেন্টারের মতো একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় হয়তো স্থাপন করা যাবে। ঐতিহ্যবাহী বড় সরকারি কলেজগুলো তো তা চাইতে পারে না। তাহলে সমাধানের উপায় কী?

সমস্যা সমাধানের আশু উপায়

উপায় তো উল্লেখিত নিবন্ধেই লিখেছিলাম। ‘কলেজ সমস্যার সমাধানের উপায়’ এবং ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যকর আঞ্চলিক কেন্দ্র’ উপ-শিরোনামের আওতায় ছিল সে আলোচনা। অতি সত্বর এই কলেজগুলো আবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে ফেরত দিয়ে ঢাকা অঞ্চলের মাধ্যমে দেখভাল করার সুযোগ দেওয়াকেই কর্তব্য বলে মনে করি। আরও লিখেছিলাম, ‘এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার নিজের শিক্ষার্থীদের ওপর সুবিচার করতে পারবে।’ ওই নিবন্ধে লিখেছিলাম, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আঞ্চলিক কেন্দ্র, বিশেষত আগের বৃহৎ চারটি বিভাগে একেকটি আঞ্চলিক কেন্দ্র বা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যকর শাখা উদ্ভূত সমস্যার সমাধান করতে পারে।

এই মুহূর্তেই সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ সিদ্ধান্ত দিতে পারে যে, ঢাকার সাতটি কলেজের দায়িত্ব জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু গাজীপুরে অবস্থিত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল কেন্দ্রীয় প্রশাসন এই দায়িত্ব নিলেও দায়িত্বটি গাজীপুর থেকে পালন করা হবে না। এর দায়িত্ব নেবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ঢাকায় অবস্থিত আঞ্চলিক কেন্দ্র।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ঢাকায় অবস্থিত আঞ্চলিক কেন্দ্র জরুরি সভা আহ্বান করে একটি শক্তিশালী কমিটি গঠন করতে পারে। এই কমিটিতে প্রশাসক, একাডেমিক এবং বিশেষত শিক্ষা বিশেষজ্ঞ থাকতে হবে। এই কমিটি স্বয়ং বা নবগঠিত প্রশাসনিক কাঠামো ঢাকার সাতটি কলেজ পরিচালনার দায়িত্ব নিতে পারে। একটি নতুন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বিরাট প্রতিষ্ঠান সময় নিয়ে, চিন্তাভাবনা করে পরে সৃষ্টি করা যাবে এবং প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ-১৯৭৩-এর মতো আইনের মাধ্যমে সম্পূর্ণ স্বশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ও স্থাপন করা যেতে পারে। তবে আমার চিন্তায় উপরোল্লিখিত পন্থাই হঠাৎ সৃষ্ট সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধান দিতে পারে।

ড. আবদুস সাত্তার মোল্লা : অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক (বিসিএস সাধারণ শিক্ষা)

asmolla@ymail.com

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম