Logo
Logo
×

অল্পকথা

কবে বন্ধ হবে পলিথিনের ব্যবহার?

Icon

সৈয়দা ফারিভা আখতার

প্রকাশ: ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

পলিথিন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অংশ হলেও এটি পরিবেশের বড় শত্রু। এ কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ পলিথিনের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। আমাদের দেশেও পলিথিন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে তা কতটুকু কার্যকর হচ্ছে? পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫-এর বিধান অনুযায়ী বাংলাদেশে ২০০২ সালের ১ মার্চ সরকার পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। কিন্তু তারপরও পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ হয়নি।

পলিথিন একটি প্লাস্টিক পণ্য। এটি প্রাকৃতিক পরিবেশে পচে বা গলে না। এটি মাটিতে বা জলে পড়ে থাকে, যার ফলে বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি হয়। এটি মাটির উর্বরতা কমিয়ে দেয় এবং কৃষিকাজে ব্যাপক সমস্যা সৃষ্টি করে। পলিথিনের ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদানগুলো মাটির প্রাকৃতিক গঠন পরিবর্তন করে। এর ফলে কৃষিজমিতে ফলন কমে যায়। আবার অনেক সময় পলিথিন নদী, খাল, সাগর এবং অন্যান্য জলাশয়ে জলজ প্রাণীর জন্য খুব বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। এ কারণে সামুদ্রিক প্রাণীর মৃত্যুহার ব্যাপকভাবে বাড়ছে। এমনকি ইকোসিস্টেমেরও ভারসাম্য দিন দিন নষ্ট হচ্ছে।

পলিথিনের কারণে যে শুধু মাটি ও পানিই দূষিত হচ্ছে তা নয়, বায়ুদূষণের ক্ষেত্রেও ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলছে এটি। অনেক সময় দেখা যায় রাস্তার আশপাশে পড়ে থাকা পলিথিন বা গৃহস্থালীর রান্নার কাজে অব্যবহৃত পলিথিনগুলো পুড়িয়ে ফেলা হয়। এর ফলে বিষাক্ত গ্যাস তৈরি হয়। এই গ্যাস বাতাসের সঙ্গে মিশে বায়ুদূষণ ঘটায়। আবার কিছু জায়গায় দেখা যায় পলিথিনের খোলসগুলো খোলা অবস্থায় পড়ে থাকে, যার ফলে শহরের সৌন্দর্য নষ্ট হয়।

পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে শুধু আইনই যথেষ্ট নয়, এর জন্য সামাজিক সচেতনতা এবং জনসাধারণের সক্রিয় অংশগ্রহণও প্রয়োজন। পলিথিন ব্যাগের পরিবর্তে কাগজের ব্যাগ, কাপড়ের ব্যাগ, জুট বা থ্রেড ব্যাগ অথবা বায়োডিগ্রেডেবল ব্যাগের ব্যবহার বাড়াতে হবে। কারণ এ ব্যাগগুলো পচনশীল, যা প্রকৃতিতে সহজেই মিশে যায় এবং বিভিন্ন ধরনের পরিবেশ দূষণ থেকেও বাঁচায়। এছাড়াও ব্যবসায়ীদের পলিথিন ব্যাগ ব্যবহারের পরিবর্তে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণে উৎসাহিত করতে হবে। বিশেষ করে খাদ্য, ই-কমার্স বা ছোট ছোট ব্যবসায় যাদের পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার একটি প্রচলিত অভ্যাস হয়ে গেছে, তাদেরকে বিকল্প প্যাকেজিং ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। এমনকি পলিথিন ব্যাগ সংগ্রহ করার জন্য উন্নত বর্জ্য ব্যবস্থাপনাও গড়ে তুলতে হবে। স্কুল, কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পলিথিনের ক্ষতিকর দিক এবং পরিবেশের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে শিক্ষা প্রদান করতে হবে, যাতে একটি নিরাপদ, পরিচ্ছন্ন ও সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করা যায়। পলিথিনমুক্ত পরিবেশই হোক ভবিষ্যৎ জীবন রক্ষার পথ।

সৈয়দা ফারিভা আখতার : শিক্ষার্থী, রাজশাহী কলেজ

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম