পাটশিল্পের সুদিন কি ফিরবে?
আল সাকিব হোসেন
প্রকাশ: ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সোনালি আঁশখ্যাত পাট একসময় এদেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি থাকলেও বর্তমানে পাট চাষ করে চাষিরা ভুগছেন চরম হতাশায়। নেই আগের মতো দাম। কমেছে চাষ। কলকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। তৈরি হচ্ছে না সুতাসহ পাটের বিভিন্ন জিনিসপত্র।
পাট একটি পচনশীল বস্তু। পাট থেকে বিভিন্ন সুতা, হস্তশিল্প, ব্যাগ, দড়ি, পাত্র ইত্যাদি তৈরি করা হতো। অতীতে পাটের তৈরি বিভিন্ন জিনিস রপ্তানি করা হতো বিদেশে। একসময় পাটের তৈরি জিনিসের চাহিদা ছিল ব্যাপক। আর কৃষকরা ভালো দাম পওয়ায় পাট চাষ করতেন হাসিমুখে।
পাটশিল্প ব্রিটিশ ও পাকিস্তানি আমলে দেশের একক বৃহত্তম শিল্প ছিল। এদেশে পাটশিল্পের সূচনা ঘটে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে এবং পরবর্তী সময়ে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও এর আশপাশেই গড়ে ওঠে। ঢাকা, খুলনা ও চট্টগ্রাম-প্রধানত এ তিনটি অঞ্চলে ছড়িয়ে আছে এদেশের পাটকলগুলো।
বিশ্ববাজারে পাটের সামগ্রীর চাহিদা থাকলেও পাটকলগুলো বন্ধ থাকায় বাংলাদেশে পাটচাষ দিন দিন কমে যাচ্ছে। এতে করে পাটশিল্পে ধস নামতে শুরু করেছে। ফলে বিপাকে পড়েছেন পাট শ্রমিকরা। অধিকাংশ শ্রমিক চাকরি হারিয়ে বেকার হয়ে পড়েছেন। অথচ সোনালি আঁশখ্যাত পাটের এ বেহাল দশা হওয়ার কথাই ছিল না।
পাট ও পাটজাত দ্রব্য একসময় ছিল দেশের প্রধান রপ্তানিপণ্য। এ শিল্পের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয়ও আছে। সুতরাং সরকারের উচিত পাটশিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া। পাটকলগুলো চালু করা। পাট চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা। বাজারে কৃষকরা যাতে ন্যায্য দাম পায়, সে ব্যবস্থা করা। দেশেও পাটের তৈরি বিভিন্ন জিনিস বাজারজাত করার ব্যবস্থা করা। পলিথিনের পরিবর্তে পাটের তৈরি পলিজুট ব্যাগ ব্যবহার করা। এছাড়াও প্লাস্টিকের ব্যবহার কমিয়ে পাটের তৈরি বিভিন্ন জিনিসের ব্যবহার বাড়ানো। পাটের বাজার আবারও যাতে সম্প্রসারিত হয়, সেজন্য কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া এবং বাইরের দেশের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়ে পাটের পণ্য রপ্তানির ব্যবস্থা জোরদার করা।
আল সাকিব হোসেন : শিক্ষার্থী, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ, রাজশাহী কলেজ