Logo
Logo
×

সাহিত্য সাময়িকী

দ্য সেভেন ডেথস অভ ইভিলিন হার্ডক্যাসল

Icon

প্রকাশ: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

থ্রিলারের এ বহুল প্রচার ও প্রসারের যুগেও, কিছু মণিমুক্তা থেকে যায় পাঠকদের চোখের আড়ালে। এর পেছনে কারণ বহুবিধ। সেদিকে না গিয়ে আসুন আপনাদের দিই এমনই এক ‘হিডেন জেম’-এর খোঁজ। ব্রিটিশ লেখক স্টুয়ার্ট টার্টনের ডেব্যু নোভেল ‘দ্য সেভেন ডেথস অভ ইভিলিন হার্ডক্যাসল’, এর বাংলা অনুবাদ প্রকাশিত হয়েছে পেপার ভয়েজার প্রকাশনী থেকে সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টির অনুবাদে। কাহিনীটা এরকম : রাত ঠিক এগারোটা বাজে খুন হয়ে যাবে ইভিলিন হার্ডক্যাসেল। হাতে আছে আট দিন, আর এ প্রতিটা দিন শুরু হবে আটজন ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তির শরীরে থেকে। খুনির নাম বলা মাত্র মিলবে মুক্তি; না হলে আমৃত্যু আটকে থাকতে হবে অন্তহীন চক্রে, এ ব্ল্যাকহিথ ম্যানরে। এইডেন বিশপ খুনিকে খুঁজে বের করতে না পারা অবধি প্রতি দিন মারা যাবে ইভিলিন হার্ডক্যাসেল। সমস্যা হলো, প্রতিটা দিন এইডেনের শুরু হচ্ছে নতুন কোনোও অতিথির শরীরে, আগের দিনের স্মৃতি সঙ্গী করে। এদিকে আবার পিছু নিয়েছে আততায়ী, একে একে খুন করে চলছে এইডেনের শরীরগুলোকে। সময় ফুরিয়ে আসছে, তবে কি এই অনন্ত চক্রে বন্দি থাকতে হবে এইডেনকে? ইভিলিনের মৃত্যু কি অমোঘ?

পাঠানুভূতি : বইয়ের জনরা যখন মার্ডার-মিস্ট্রি, খুন তো হতেই হবে! এদিকে খুন হওয়া থামানটাই লক্ষ্য আমাদের প্রোটাগনিস্ট এইডেন বিশপের। এখানেই জনরা ভেঙে ফ্যান্টাসির আদলে চমৎকার সময়-চক্র বা টাইম লুপ টেনে আনেন লেখক। এইডেন বিশপ আট দিন ধরে আটজন ভিন্ন ভিন্ন অতিথির দেহে ভর করে সমাধান করার চেষ্টা করবে ইভিলিন হার্ডক্যাসেলের খুনের। নায়ক যেমন হতে হয়, এইডেন তেমনই। সহানুভূতিশীল, ন্যায়নিষ্ঠ। খুনের সমাধান করাকে নিজের ধ্যান-জ্ঞান বানায় সে। কিন্তু, যখন জানতে পারে তার মতোই আরও দুইজন খুঁজছে খুনিকে আর এ চক্র থেকে মুক্তি পাবে তাদের মধ্যে যে কোনো একজন মাত্র, তখন মোরাল ডিলেমায় আক্রান্ত হয় সে। ইভিলিন হার্ডক্যাসেলের চরিত্র থেকে শুরু করে প্রতিটা পার্শ্বচরিত্র এ বইয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সেসঙ্গে ক্যারেক্টারগুলোর ডেভেলপমেন্ট পাঠকের চোখে আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। কারণ, প্রতিটা ঘটনা বা চরিত্র সে বারংবার দেখছে ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রের চোখ দিয়ে। আর এ ভিন্ন চরিত্রগুলো, যাদের শরীরে আসলে আছে আমাদের নায়ক এইডেন বিশপ, স্ব স্ব মহিমায় প্রোজ্জ্বল। সবার আছে দোষ-গুণ, আছে ইভিলিনের সঙ্গে সম্পর্কের ভিন্ন মাত্রা। এগুলোকে কাজে লাগিয়েই খুঁজতে হবে খুনিকে। খুনি কিন্তু দূরে নেই এইডেনের। আছে খুব কাছেই। সে জেনে গিয়েছে এইডেনের শরীরে একই দিন বার বার কাটানোর গোপন খবর। এখন তার লক্ষ্য এইডেনের হোস্টদের হত্যা করা। না থাকবে বাঁশ, না বাজবে বাঁশি। কাজেই এইডেনকে যে কেবল ইভিলিনের খুনিকে চিহ্নিত করা, তা নয়; বেঘোরে নিজে মরে যাওয়া থেকে বাঁচাটাও জরুরি বটে। সব মিলিয়ে দারুণ এ মাইন্ড-টুইস্টিং থ্রিলার বইটা পড়লে আপনি নিজেই বলতে ও মানতে বাধ্য হবেন- গড়পড়তা থ্রিলারের ভিড়ে ‘সেভেন ডেথ অভ ইভিলিন হার্ডক্যাসেল’ যেন ভিন্নতার এক পরশ দিয়ে যায়।

মেহেদী হাসান

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম