বছরের শেষদিনের অস্তগামী সূর্যের সঙ্গে সব দুঃখ মুছে ফেলে প্রত্যেক মানুষই চায় আগামী দিন নতুন করে বাঁচতে। পেছনের সব ব্যর্থতা ভুলে তারা সফল হওয়ার জন্য প্রার্থনা করে। এজন্য নতুন বছরকে বরণ করে নিতে পুরো বিশ্ব সেজে ওঠে এক অন্যরকম উৎসবের রঙে। বছরের শেষদিনে রাত ১২টা ১ মিনিটে শুরু হয় থার্টিফার্স্ট নাইট উদযাপন। নানা রঙের আলোকসজ্জা আর আতশবাজির মধ্য দিয়ে নতুন বছরকে উদযাপন করা হয়।
একসময় আমাদের দেশে এসব আনন্দ উৎসব মূলত রাজধানীতে সীমাবদ্ধ থাকলেও বর্তমানে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও এমন আয়োজন চোখে পড়ে। নতুন দিনের সূর্যকে বরণ করে নিতে কোনো কমতি থাকে না উৎসবপ্রিয় মানুষের। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বর্ষবরণ উৎসবে যোগ হয়েছে নতুন কিছু আয়োজন। উচ্চৈঃস্বরে গানবাজনা বাজানো, আতশবাজি ফোটানো এবং ফানুস উড়ানো যার অন্যতম। এ আয়োজন কিছু মানুষের বিনোদনের খোরাক জোগালেও অনেক সময় ডেকে আনে বিপদ।
গভীর রাতে আতশবাজি ও মাইকের আওয়াজ সাধারণ মানুষের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়, বিশেষ করে পরিবারের শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থ বক্তির ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। থার্টিফার্স্ট নাইট উদযাপন নিয়ে প্রতিবছরই প্রশাসন নানা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। কিন্তু বাস্তবে তা মানা হয় না। এছাড়া শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা-২০০৬ আইনে বলা আছে, আবাসিক, বাণিজ্যিক ও শিল্প এলাকায় সর্বোচ্চ পাঁচ ঘণ্টা এবং রাত ১০টার পর কোনোভাবেই উচ্চশব্দের কোনো অনুষ্ঠান করা যাবে না। কিন্তু এসব আইনের তেমন কোনো প্রয়োগ চোখে পড়ে না। তাছাড়া অনেক সময় থার্টিফার্স্টের উৎসবে উড়ানো ফানুস থেকে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। উড়ন্ত ফানুস বাসার ছাদে থাকা কাপড়, বৈদ্যুতিক তার এবং গাছে থাকা পাখির বাসায় পড়ে আগুন লেগে যায়, যা গত কয়েক বছরে দেখা গেছে।
কাজেই থার্টিফার্স্ট উদযাপনের আনন্দ যেন কারও বিষাদের কারণ না হয়, সেদিকে আমাদের বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে। পাশাপাশি প্রশাসনকে এসব ব্যাপারে আরও বেশি দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।
রিয়াদ হোসেন
শিক্ষার্থী, সরকারি বিএল কলেজ, খুলনা