
প্রিন্ট: ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ১২:২৯ এএম
নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য অস্পষ্ট: মির্জা ফখরুল

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৭ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

ছবি: সংগৃহীত
ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে-প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এমন বক্তব্যকে ‘অস্পষ্ট’ বলে অভিহিত করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। অবিলম্বে নির্বাচনের ‘স্পষ্ট’ রোডম্যাপের দাবি জানিয়েছেন তিনি। বুধবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ দাবি জানান। এ দিন সকাল সাড়ে ৯টায় বিএনপির মহাসচিব কয়েক হাজার নেতাকর্মী নিয়ে জিয়াউর রহমানের সমাধিস্থলে যান। সেখানে প্রয়াত নেতার কবরে ফুল দিয়ে দোয়া পাঠ করেন। মহান স্বাধীনতা দিবস ও পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন অধ্যাপক ইউনূস। ভাষণে তিনি বলেন, এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। তার এই ভাষণের প্রতিক্রিয়ায় মির্জা ফখরুল বলেন, এটা অত্যন্ত অস্পষ্ট কথা। ডিসেম্বর থেকে জুন-৬ মাস। এটা কোনো রোডম্যাপ দেওয়া হয়নি। আমরা বারবার বলে আসছি, স্পষ্ট রোডম্যাপ ও দ্রুত নির্বাচন। তা না হলে যে সংকটগুলো সৃষ্টি হচ্ছে এই সংকটগুলো কাটবে না।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নির্বাচনের কথা বলছে না। বিএনপি জাতির স্বার্থে, জাতিকে রক্ষা করার স্বার্থে, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার স্বার্থেই নির্বাচনের কথা বলছে, নির্বাচিত পার্লামেন্ট এবং সরকারের কথা বলছে। আমরা আশা করব, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অতি দ্রুত ন্যূনতম সংস্কারগুলো করে অর্থাৎ যেগুলো নির্বাচনের জন্য প্রয়োজন তা সম্পন্ন করে নির্বাচনের ঘোষণা দেবেন।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, আমি অত্যন্ত হতাশ হয়েছি। মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টা যে বক্তব্য রেখেছেন, সেই বক্তব্যে তিনি নির্বাচনের রোডম্যাপের কথা বলেননি। আমরা হতাশ হয়েছি যে, তার বক্তব্যের মধ্যে তিনি স্বাধীনতার ঘোষক শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নাম একবারও উচ্চারণ করেননি। অথচ এটাই ছিল ইতিহাস।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, আজকের এই দিনে আমাদের দল, চেয়ারপারসন দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ও আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আমরা গোটা জাতিকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি, অভিনন্দন জানাচ্ছি এবং প্রত্যাশা করছি অতি শিগগিরই আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত গণতন্ত্র ফিরে পাব। তিনি আরও বলেন, এই স্বাধীনতার জন্য আমাদের লাখ লাখ মানুষ প্রাণ দিয়েছেন, আমাদের অসংখ্য মা-বোন সম্ভ্রম হারিয়েছেন।
দুর্ভাগ্যের কথা তখন যে লক্ষ্য ও আশা-আকাক্সক্ষাকে সামনে নিয়ে, যে চেতনাকে ধারণ করে আমরা যুদ্ধ করেছিলাম, একটা মুক্ত স্বাধীন-সার্বভৌম গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ আমরা এখন পর্যন্ত পুরোপুরি অর্জন করতে সক্ষম হইনি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু, উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক প্রমুখ।
পরে প্রয়াত নেতার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন নেতারা। এছাড়া মহানগর বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মুক্তিযোদ্ধা দল, মহিলা দল, ছাত্রদলসহ বিভিন্ন অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকেও আলাদা আলাদাভাবে নেতাকর্মীরা পুষ্পস্তবক অপর্ণ করে শ্রদ্ধা জানান। জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা জানানোর আগে মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে বীর শহিদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানান।