যমুনা ফিউচার পার্কে কেনাকাটা
ঈদের আগেই যেন ক্রেতার ঈদ আনন্দ

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

ফাইল ছবি
যে কোনো উৎসব আয়োজনে পছন্দের পণ্য পেতে ক্রেতার পছন্দের শীর্ষে দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ শপিংমল যমুনা ফিউচার পার্ক। সুবিশাল পরিসরে একই ছাদের নিচে মিলছে সব নামিদামি ব্র্যান্ড। সঙ্গে শপিংমলের ভেতর ও বাইরের আলোকসজ্জাও ক্রেতাদের নজর কাড়ছে। এখানেই শেষ নয়। পোশাক কেনাকাটার সঙ্গে ঘোরাঘুরি নতুন মাত্রা যোগ করেছে। বন্ধু-বান্ধব নিয়ে আসছেন সব বয়সি মানুষ। মা-বাবার হাত ধরে আসছে পরিবারের ছোট সদস্যও। বাহারি ডিজাইনের পোশাকের সঙ্গে কিনছে রং-বেরংয়ের খেলনা। শপিংমলের যে কোনো আউটলেট থেকে সর্বনিম্ন দুই হাজার টাকার পণ্য কিনলেই থাকছে কোটি টাকার ঈদ উপহার জেতার সুযোগ। এছাড়া দিনভর কেনাকাটা শেষে একই ভবনে লোভনীয় মজাদার ইফতার ও ডিনারে মাতছেন সবাই। সব মিলিয়ে যমুনা ফিউচার পার্কে কেনাকাটা করতে আসা সবাই ঈদের আগেই যেন ঈদ আনন্দ উপভোগ করছেন।
পছন্দের পণ্য কিনতে সর্ববৃহৎ শপিংমলে সকাল থেকেই সব শ্রেণির ক্রেতারা ভিড় করছেন। এক শোরুম থেকে আরেক শোরুম ঘুরে কিনছেন হাল ফ্যাশনের বৈচিত্র্যময় পোশাক। পোশাক কেনা শেষ করে ক্রেতারা যাচ্ছেন জুতার শোরুমে। সেখান থেকে গহনার দোকানে। এছাড়া কসমেটিকস, ক্রোকারিজ, পারফিউমসহ সব ধরনের পণ্য থাকায় ঈদ ঘিরে জমজমাট যমুনা ফিউচার পার্ক। সঙ্গে মোবাইল ও ইলেকট্রনিক্সের শোরুমগুলোতেও ঈদ ঘিরে বিক্রি বেড়েছে। এতে খুশি বিক্রেতারা। পাশাপাশি দেশের শীর্ষস্থানীয় ফ্যাশন ব্র্যান্ড হুর ও মেট্রো ফ্যাশনে ছিল ক্রেতার ভিড়। এবারের ঈদ ঘিরে প্রতিষ্ঠান দুটি ইন্দো-ওয়েস্টার্ন ও কাশ্মীরিসহ ১৫-২০ ধরনের কালেকশন এনেছে। তাই নতুন ডিজাইন ও উন্নতমানের পোশাক পেয়ে খুশি ক্রেতা। শুক্রবার ছুটির দিনে ইনফিনিটি, কে-ক্রাফট, অঞ্জনস, আড়ং, জিন্স অ্যান্ড কোম্পানি, টুয়েলভ, রেড, জেন্টল পার্ক, টিনস ক্লাব, প্লাস পয়েন্ট, কান্ট্রি বয়, রেঞ্জ, লা রিভ, আর্টিসান, টপ টেন পোশাকের ব্র্যান্ড ও শপগুলোতে প্রচুর ক্রেতা সমাগম লক্ষ্য করা গেছে।
ছুটির দিন সকাল থেকে বিকাল নাগাদ লোকে লোকারণ্য ছিল শপিংমলের আশপাশের এলাকা। ইফতারের আগেই বিভিন্ন আউটলেটে বিক্রয়কর্মীদের বাড়তি ব্যস্ততা ছিল চোখে পড়ার মতো। সন্ধ্যায় অনেকে শপিংমলের ফুডকোর্টে ইফতার সেরে আবার কেনাকাটায় মেতে ওঠেন। ইফতারের পর ফের ঢল নামে আস্থার শপিংমল যমুনা ফিউচার পার্কে। রাতে ফুডকোর্টে চলে বাহারি আইটেমের ডিনার।
এদিকে যমুনা ফিউচার পার্কে ঈদ কেনাকাটায় আকর্ষণীয় ক্যাম্পেইনের আয়োজন করেছে স্বনামধন্য শিল্পগোষ্ঠী যমুনা গ্রুপ। ঈদ ঘিরে ক্রেতাদের যমুনা ফিউচার পার্কে কেনাকাটা করে কোটি টাকার উপহার জেতার সুযোগ করে দিয়েছে। আর এ অফারের আওতায় শপিংমলের যে কোনো শোরুম থেকে সর্বনিম্ন ২০০০ টাকার কেনাকাটা করলেই থাকছে টিভি, ফ্রিজ, ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক পণ্যসহ নানা আকর্ষণীয় উপহার জেতার সুযোগ। এই ক্যাম্পেইন চলবে চাঁদরাত পর্যন্ত। ক্রেতারা যাতে সহজে উপহার পেতে পারেন সেজন্য শপিংমলের সেন্টার কোর্টে গিফটের আলাদা বুথ করা হয়েছে। পণ্য ক্রয়ের রসিদ নিয়ে সেখানে থাকা কিউআর কোড দিয়ে তথ্য দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতা উপহার জিতলে বুথ থেকে সংগ্রহ করতে পারছেন। এতে ক্রেতাদের ঈদ আনন্দে যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা।
রাজধানীর গুলশান-১ থেকে যমুনা ফিউচার পার্কে এসেছেন হাসান ও লায়লা দম্পতি। সঙ্গে এসেছে তাদের একমাত্র মেয়ে ইনায়া (২ বছর)। হাসান যুগান্তরকে বলেন, যমুনা ফিউচার পার্ক আমাদের পছন্দের শীর্ষে। প্রতিবছর ঈদে এখান থেকে কেনাকাটা না করলে হয় না। এবারও মেয়েকে নিয়ে এসেছি। প্রবেশ গেট থেকে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে আলোকসজ্জা দেখে চোখ জুড়িয়ে গেছে। তাই ড্রাইভারকে প্রবেশ গেট থেকে বিদায় দিয়ে হেঁটে শপিংমলে এসেছি। আলোকসজ্জা দেখে আমার ছোট মেয়েটা অনেক আনন্দ পেয়েছে। মলের বাইরে সুবিশাল জায়গাজুড়ে দৌড়-ঝাঁপ করেছে। এরপর একই ছাদের নিচে সব ব্র্যান্ড থাকায় কেনাকাটা করতে ভোগান্তি পেতে হয়নি। ইফতার শেষে প্রয়োজনীয় কেনাকাটা শেষ করে ডিনার করে বাড়ি ফিরছি। এই পুরোটা সময় পরিবার মিলে অনেক আনন্দ করেছি। এটা যেন ঈদের আগেই আমাদের ঈদ আনন্দ। এমন চমকপ্রদ আয়োজনের জন্য যমুনা কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই।
শপিংমলে দেশের শীর্ষস্থানীয় মেট্রো ফ্যাশনে কথা হয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী মিথিলার সঙ্গে। তিনি যুগান্তরকে বলেন, ৯ বন্ধু নিয়ে ঈদ কেনাকাটা করতে এসেছি। প্রধান উপলক্ষ্য ছিল বন্ধুরা মিলে একসঙ্গে ইফতার করব। সঙ্গে কেনাকাটা। ইফতার শেষে সব বন্ধুর কেনাকাটা শেষ করে এখন আমি কেনাকাটা করছি। মেট্রো ফ্যাশনে সব হাল ফ্যাশনের পোশাক তোলা হয়েছে। সবগুলো পছন্দ হয়েছে। এর মধ্যে একটি নিয়েছি। আরও দুইটা থ্রি-পিস পছন্দ করে রেখেছি। আরেকদিন এসে কিনব।
দেশের শীর্ষস্থানীয় ফ্যাশন ব্র্যান্ড হুরের শোরুমে গিয়ে কথা হয় নেহারিকা ভাবনার সঙ্গে। তিনি যুগান্তরকে জানান, পরিবারের সবাইকে নিয়ে ঈদ কেনাকাটা করতে এসেছি। কেনাকাটার সঙ্গে পরিবারের সবাই আউটিং করছি। ছোট ভাইবোনরা ফিউচার ওয়ার্ল্ডে বিভিন্ন রাইড উপভোগ করেছে। বড়রা ইফতারে পছন্দের খাবার উপভোগ করেছে। পুরো শপিংমল ঘুরছি। সঙ্গে হোলসেল ক্লাবে গিয়ে নানা ধরনের পণ্য কিনে এখন বাড়ি ফিরছি। সব মিলে এটা একটা ঈদ কেনাকাটা নয়, পরিবারের মিলনমেলা। এটা যমুনা ফিউচার পার্ক ছাড়া অন্য কোথাও সম্ভব নয়।