গাইনি বিশেষজ্ঞ টিএ চৌধুরী আর নেই

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১০ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

উপমহাদেশের প্রখ্যাত স্ত্রীরোগ বিশেজ্ঞ (গাইনোকোলজি এবং অবসটেট্রিক্স) অধ্যাপক ডা. এএইচএম তৌহিদুল আনোয়ার চৌধুরী (টিএ চৌধুরী) ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি...রাজিউন)। রোববার দুপুরে ৮৭ বছর বয়সে তিনি নিজ বাড়িতে মারা যান বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও জাতীয় অধ্যাপক ডা. একে আজাদ খান। দীর্ঘদিন অধ্যাপক ডা. টিএ চৌধুরী হৃদরোগসহ বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন।
অধ্যাপক টিএ চৌধুরী ১৯৩৭ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক নিবাস নোয়াখালীর সেনবাগে। তিনি ১৯৬০ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন এবং রেকর্ড নম্বরসহ প্রথম স্থান অধিকার করেন। পরে তিনি লাহোরের কিং অ্যাডওয়ার্ড কলেজে ভর্তি হন। প্রথমবর্ষ পড়ার পর সরকারি বৃত্তি নিয়ে ইংল্যান্ডের রয়েল কলেজ অব সার্জনস অব এডিনবার্গ যান এবং সেখানে থেকে এফআরসিএস সম্পন্ন করেন। ১৯৬৫ সালে তিনি রয়েল কলেজ অব অবসটেট্রিশিয়ান অ্যান্ড গাইনোকোলজিস্ট থেকে এমআরসিওজি পাস করেন। দেশে ফিরে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে চাকরির মাধ্যমে তার কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। সেখানে তিনি ৬ বছর ছিলেন। এরপর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে বদলি হন। ১৯৮০’র দশকে চৌধুরী তৎকালীন আইপিজিএমে (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) যোগ দেন এবং ১৯৮৭ সালে এর পরিচালক হিসাবে নিয়োগ পান। ১৯৯৪ সালে তিনি সরকারি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। সর্বশেষ তিনি বারডেম হাসপাতালে স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। টিএ চৌধুরী অবস অ্যান্ড গাইনোকোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশ’র প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব ও পরে সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। এছাড়া তিনি এশিয়া অ্যান্ড ওশেনিয়া ফেডারেশন অব অবস অ্যান্ড গাইনোকোলজির ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং সাউথ এশিয়া ফেডারেশন অব অবস অ্যান্ড গাইনোকোলজির প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি দীর্ঘ মেয়াদে বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস এর সভাপতি ছিলেন। তিনি ‘বাংলাদেশ পেরিনেটাল সোসাইটি’ এবং ‘ফার্টিলিটি অ্যান্ড স্টেরিলিটি বাংলাদেশ’র প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
ছাত্রজীবনে চৌধুরী এমবিবিএস পরীক্ষায় প্রথমস্থান অর্জন করায় এটিসিও গোল্ড মেডেল পেয়েছিলেন। নেপালে স্নাতকোত্তর চিকিৎসক বাড়াতে কাজ করায় নেপালের রাজা তাকে সে দেশের সর্বোচ্চ পুরস্কার গোর্খা দক্ষিণ বাহু গোল্ড মেডেল প্রদান করেন। ২০১৭ সালে চিকিৎসা শাস্ত্রের গাইনোকোলজি এবং অবসটেট্রিক্সে অনন্য অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান করে।