ভাটারায় মব তৈরি করে দুই বিদেশি নাগরিককে মারধর

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৫ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

রাজধানীর ভাটারায় ছিনতাইকারী সন্দেহে দুই বিদেশি নাগরিককে মারধর করা হয়েছেন। এ সময় তাদের সঙ্গে থাকা এক বাংলাদেশিকেও মারধর করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে যমুনা ফিউচার পার্কের সামনের সড়কে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন মোহাম্মদ আহমদ (৭৪) ও তার নাতি মো. মেহেদী (১৮)। এ ঘটনায় আহত বাংলাদেশি ড্রাইভারের খোঁজ মেলেনি।
আহত দুজন ইরানের নাগরিক জানিয়ে ভাটারা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুজন হক বলেন, দাদা-নাতি বেড়ানোর জন্য এ দেশে এসেছেন। গতকাল তারা ডলার ভাঙানোর জন্য একটি মানি এক্সচেঞ্জের সামনে যান। সেখানে প্রতিষ্ঠানটির সামনে দাঁড়ানো এক লোকের সঙ্গে কথা বলেন তারা। ডলারের দর বা অন্য কোনো বিষয়ে তাদের মতানৈক্য হয়। পরে বিদেশিরা আতঙ্কিত হয়ে গাড়ি নিয়ে দ্রুত স্থান ত্যাগের চেষ্টা চালান। এ সময় একটা ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। উপস্থিত লোকজন ধরে নেন, তারা কৌশলে টাকা ছিনতাই করে পালিয়ে যাচ্ছেন। এক্ষেত্রে স্কোপালোমিন বা শয়তানের নিঃশ্বাস নামে পরিচিত রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়েছে বলেও কেউ কেউ বলাবলি করেন। তখন লোকজন ধাওয়া করে গাড়ি আটকে বিদেশিদের মারধর করেন। তাদের বাংলাদেশি গাড়িচালকও মারধরের শিকার হন। পরে তিনি ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। এর আগে পুলিশ জানায়, দুপুরে ৯৯৯ নম্বরে কল করে একজন বলেন, বৈদেশিক মুদ্রা এক্সচেঞ্জের নামে বাংলাদেশিদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে বিদেশিরা। এ নিয়ে ব্যাপক ঝামেলা চলছে। প্রতারকদের আটকে রাখা হয়েছে। পুলিশের সহায়তা দরকার। এরপর ৯৯৯ এর মাধ্যমে বিষয়টি জেনে ভাটারা থানা পুলিশ দল ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে দেখা যায়, কয়েকশ লোক ঘিরে ধরে বিদেশিসহ তিনজনকে মারধর করছে। ভাঙচুর করা হয়েছে তাদের বহনকারী গাড়ি। পুলিশ যাওয়ার পর লোকজন ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পরে গুরুতর আহত দুজনকে উদ্ধার করে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এদিকে প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেও ঘটনার সূত্রপাত সম্পর্কে জানা যায়নি। ঘটনাস্থলে পাশের ফুটপাতের ভ্রাম্যমাণ দোকানি ফাইজুল বলেন, যোহরের পর দেখলাম একটা গাড়ি আটকে দুজন বিদেশিকে মারধর করা হচ্ছে। তাদের ঘিরে ভিড় জমেছিল। গাড়িও ভাঙচুর করা হয়। সবাই বলছিল তারা ছিনতাই করতে এসে ধরা পড়েছে। পরে শুনলাম গাড়ি রিকশার ওপর তুলে দেওয়ায় এ ঘটনা। পাশের আরেকটি দোকানের কয়েকজন কর্মচারী জানান, বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালিয়ে আসছিলেন তারা। সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা রিকশা, গাড়ি ও অপেক্ষমাণ যাত্রীদের চাপা দেয় তারা, এজন্য তাদের মারধর করা হয়েছে হয়তো।