দেশব্যাপী ২৫ ক্যাডারের পূর্ণদিবস কর্মবিরতি

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৩ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

ফেসবুকে আন্তঃক্যাডার নিয়ে পোস্ট দেওয়ায় প্রশাসন ছাড়া ২৫ ক্যাডারের (আদার্স) ১৩ জন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। তাদের কৈফিয়ত তলব করে নোটিশ করা ও আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়াসহ বেশ কিছু ধাপ উপেক্ষা করে সরাসরি বরখাস্ত করা হয়েছে। ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তারা এ ধরনের সিদ্ধান্তকে প্রশাসন ক্যাডারের একপেশে আচরণ বলে অভিহিত করেছেন। কোনো ধরনের শর্ত ছাড়া বরখাস্তকৃতদের বরখাস্ত আদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে ২৫টি ক্যাডার সংগঠন আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ। সংগঠনের ডাকে রোববার দেশব্যাপী পূর্ণদিবস কর্মবিরিত পালন করা হয়েছে। কর্মবিরতির অংশ হিসাবে বিভিন্ন দপ্তরের সামনে কালো ব্যাজ পরে ব্যানার নিয়ে কর্মকর্তাদের অবস্থানও নিতে দেখা গেছে।
কর্মকর্তাদের সংখ্যার দিক দিয়ে বড় ক্যাডার সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার। রোববার বেলা ১১টায় শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা অবস্থান কর্মবিরতিতে অংশ নেন। এতে শিক্ষা ক্যাডারের শীর্ষ পদের কর্মকর্তা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক মুহাম্মদ আজাদ খানও অংশ নেন। অধ্যাপক মুহাম্মদ আজাদ খান এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ২৫ ক্যাডারের কিছু বিষয় নিয়ে সম্মিলিতভাবে এখানে দাঁড়িয়েছি। পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালিত হচ্ছে। শিক্ষা ক্যাডার অন্যান্য ক্যাডারের সঙ্গে এ কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করছে।
শিক্ষা ক্যাডারের একজন সদস্য হিসেবে এ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার কথা জানিয়ে ডিজি বলেন, এ অধিদপ্তরে যারা কর্মরত তারা সবাই এবং দেশে শিক্ষা ক্যাডারের সব অফিস-দপ্তরে এই কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। তারা বেশ কিছু বৈষম্যের শিকার এবং এর মধ্যে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য অন্যতম। ক্যাডার সদস্যদের অনেকেই মামলা বা হয়রানির শিকার, এগুলো নিয়ে যেন একটি সুন্দর সমাধান আসে সেজন্যই এ কর্মবিরতি হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এই কর্মসূচিতে অংশ নেন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সংগঠন বিসিএস জেনারেল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (মাধ্যমিক) খান মইনুদ্দিন আল মাহমুদ। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, তারা ২৫ ক্যাডারের দাবির বিষয় নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলছেন। তার কাছে মনে হয়েছে তারাও বেশ আন্তরিক। তারাও চান এর সমাধান হোক। আলোচনা চলমান। তিনি আশা করেন এর সমাধান হবে।
এর আগে, গতকাল আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি ফেসবুকে লেখালেখির মতো তুচ্ছ কারণে ২৫ ক্যাডারের ১৩ জন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একই ধরনের কাজ প্রশাসন ক্যাডারের সদস্যরা করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। বৈষম্যপূর্ণ রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে প্রশাসন ক্যাডার ২৫ ক্যাডারের কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করতে এমন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
প্রশাসন ক্যাডারের পক্ষপাতমূলক আচরণ ও বিভিন্ন ক্যাডার কর্মকর্তাদের সাময়িক বরখাস্তের প্রতিবাদে এবং আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনের দাবিতে রোববার পরিষদভুক্ত সব ক্যাডার পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা শনিবার দেওয়া হয়। এর অংশ হিসাবে রোববার কর্মবিরতি পালন করেছে। কর্মসূচির অংশ হিসাবে সাড়ে ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টার মধ্যে স্বাস্থ্য, তথ্য, মৎস্য, প্রাণিসম্পদ, প্রকৌশলীসহ সব ক্যাডারের কর্মকর্তারা নিজ নিজ অফিসের সামনে ব্যানারসহ কালো ব্যাজ ধারণ করে কর্মবিরতি পালন করেন। তাদের এ দাবির সঙ্গে কর্মবিতি কর্মসূচিতে ২৫ ক্যাডারের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তারাও অংশ নেন।