অমর একুশে বইমেলা ২০২৫
বিক্রি বেড়েছে তবে ধুম নেই

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
-67be3625c9d28.jpg)
ছবি: সংগৃহীত
অমর একুশে বইমেলায় চলছে শেষ সময়ের বেচাকেনা। অন্যান্য বছর এই সময়টাতে বই বিক্রির ধুম দেখা যেত। সেটি এবার দেখা যাচ্ছে না। তবে গত কয়েকদিনের তুলনায় মঙ্গলবার বিক্রি বেড়েছে বলে জানিয়েছেন প্রকাশকরা। তারা আশা করছেন আর যেকটি দিন বাকি আছে বই বিক্রি ভালো হবে। তবে এই সময়ে এসেও বিকাল বা সন্ধ্যার সময় অনেক স্টলে কোনো ক্রেতা নেই এমন দৃশ্যও চোখে পড়ে।
অবসর প্রকাশনীর ব্যবস্থাপক মাসুদ রানা যুগান্তরকে বলেন, গত কয়েকদিনের তুলনায় মঙ্গলবার মেলায় বই বিক্রি বেড়েছে। যদিও সেটি খুব আশার সঞ্চার করার মতো নয়।
এদিন বাংলা একাডেমি পরিচালিত গুণিজন স্মৃতি পুরস্কার-২০২৫ ঘোষণা করা হয়েছে। চিত্তরঞ্জন সাহা, মুনীর চৌধুরী, রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই ও শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কারপ্রাপ্তদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়। ২০২৪ সালে প্রকাশিত বিষয় ও গুণমানসম্মত সর্বাধিক সংখ্যক বই প্রকাশের জন্য কথাপ্রকাশকে চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার-২০২৫ প্রদান করা হয়। ২০২৪ সালে প্রকাশিত বইয়ের মধ্য থেকে গুণমান ও শৈল্পিক বিচারে সেরা বইয়ের জন্য প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান পাঠক সমাবেশ (প্লেটো : জীবন ও দর্শন-আমিনুল ইসলাম ভূইয়া), ঐতিহ্য (ভাষাশহিদ আবুল বরকত : নেপথ্য-কথা-বদরুদ্দোজা হারুন) এবং কথাপ্রকাশকে (গোরস্তানের পদ্য : স্মৃতি ও জীবনস্বপ্ন-সিরাজ সালেকীন) মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার ২০২৫ প্রদান করা হয়।
২০২৪ সালে গুণমান বিচারে সর্বাধিক সংখ্যক শিশুতোষ বই প্রকাশের জন্য প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান কাকাতুয়াকে রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার ২০২৫ প্রদান করা হয়েছে। নান্দনিক অঙ্গসজ্জায় সেরা প্রতিষ্ঠান হিসাবে মাকতাবাতুল ইসলাম; গ্রন্থিক প্রকাশন ও বাতিঘরকে কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার ২০২৫ প্রদান করা হয়েছে।
বিকালে বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘গণ-অভ্যুত্থান, গ্রাফিতি এবং অপরাপর ভিস্যুয়াল কালচার’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মুনেম ওয়াসিফ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন তাসলিমা আখতার ও কামার আহমাদ সাইমন। সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম।
আলোচকদ্বয় বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে দেওয়ালে আঁকা গ্রাফিতি ও চিত্রগুলো শুধু ক্ষমতার কেন্দ্রকেই নয়, বরং শিল্পের প্রতিষ্ঠিত সংজ্ঞা ও ভাষাকেও চ্যালেঞ্জ করেছে। মানুষের সহজাত ভাষা, চিন্তা ও সমষ্টিগত আবেগকে ধারণ করে এসব গ্রাফিতি হয়ে উঠেছে অভ্যুত্থানের অন্যতম শক্তিশালী প্রকাশ-মাধ্যম।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে দেওয়ালে কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যেসব গ্রাফিতি ও চিত্র প্রকাশিত হয়েছে, সেগুলোর শিল্পগত ও নান্দনিক বৈশিষ্ট্যের পাশাপাশি আরও নানামাত্রিক আলোচনা হতে পারে। এগুলোকে যদি যথার্থ স্থানে এবং মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করা যায়, তাহলে এর যে ব্যাখ্যাগত সম্ভাবনা দাঁড়াবে সেটা হবে অসীম ও অসামান্য।
লেখক বলছি মঞ্চে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন-কবি ও সম্পাদক শওকত হোসেন ও কবি শামীমা চৌধুরী। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন মতিন বৈরাগী, শহীদুল্লাহ ফরায়জী, সুহিতা সুলতানা, শওকত হোসেন, কামাল মুস্তাফা ও মীর তারিকুল ইসলাম। এদিন ছিল শায়লা আহমেদের পরিচালনায় ‘নজরুল আবৃত্তি সংসদ’ ও রবিউল আল রবির পরিচালনায় ‘নটনন্দন’র পরিবেশনা।
সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী রোজী আক্তার শেফালী, অন্তর সরকার, মনীন্দ্র দাস, ফকির আবুল হাশেম, শাহ আলম দেওয়ান, দেলোয়ার হোসেন বয়াতি, শিপ্রা ঘোষ, সনৎ কুমার বিশ্বাস, লুৎফর রহমান, রবিউল ইসলাম, মিন্টু বাউল, বিজন চন্দ্র রায় ও আবদুল আউয়াল।