Logo
Logo
×

শেষ পাতা

বিএনপি নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা নোমান আর নেই

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন ও চট্টগ্রাম ব্যুরো

প্রকাশ: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

বিএনপি নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা নোমান আর নেই

বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল্লাহ আল নোমান (৮০) আর নেই। মঙ্গলবার সকাল ৬টায় রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি ... রাজিউন)। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন তিনি। স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন নোমান। সকালে তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। অনেকে তার ধানমন্ডির বাসায় ছুটে যান। পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসাবে মঙ্গলবার চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসাবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল তার। মৃত্যুর পর এ সমাবেশ স্থগিত করা হয়েছে।

আবদুল্লাহ আল নোমানের মৃত্যুতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারাও শোক প্রকাশ করেন।

আবদুল্লাহ আল নোমান মঙ্গলবার ভোরে ধানমন্ডির বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে দ্রুত স্কয়ার হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুসহ সিনিয়র নেতারা সেখানে যান।

দুপুরে সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় তার প্রথম জানাজা হয়। বাদ আসর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দ্বিতীয় জানাজা হয়। এতে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের হাজারো নেতাকর্মী অংশ নেন। জানাজায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নেন। বিএনপির সমমনা রাজনৈতিক দলের নেতারাও জানাজায় শরিক হন। দলীয় সূত্র জানায়, আগামী শুক্রবার বাদ জুমা চট্টগ্রাম নগরীর জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ ও বাদ আসর রাউজান উপজেলার গহিরা হাইস্কুল মাঠে জানাজা শেষে রাউজানের গহিরা পারিবারিক কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হবে। তার মৃত্যুতে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে তিন দিনব্যাপী শোক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

শোকবার্তায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, মরহুম আবদুল্লাহ আল নোমান একজন দেশপ্রেমিক রাজনীতিবিদ হিসাবে দেশের সব ক্রান্তিকালে জনগণের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেন। তিনি তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং শোকার্ত পরিবার, গুণগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

১৯৪৫ সালে চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার গহিরা গ্রামে জন্ম নেন আবদুল্লাহ আল নোমান। এক সময় বাম রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন তিনি। ষাটের দশকের শুরুতে হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে তিনি ছাত্র ইউনিয়নে যোগ দেন। পরে মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর হাত ধরে নোমান যোগ দেন শ্রমিক রাজনীতিতে। ১৯৭০ সালে ন্যাপের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। যুদ্ধ শেষে ন্যাপের রাজনীতিতে তার পথচলা। ১৯৮১ সালে যোগ দেন বিএনপিতে। চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১ ও ২০০১ সালে চট্টগ্রাম-৯ আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। খালেদা জিয়ার দুই সরকারের আমলে মৎস্য ও পশুসম্পদ, শ্রম ও কর্মসংস্থান, বন ও পরিবেশ এবং খাদ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

আবদুল্লাহ আল নোমানের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন ও সদস্য সচিব কাদের গনি চৌধুরী, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মাওলানা আ ন ম শামসুল ইসলাম।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম