Logo
Logo
×

শেষ পাতা

মোহাম্মদপুরে যৌথবাহিনীর অভিযান

গোলাগুলিতে ‘ঠোঁটে ল’ গ্রুপের ২ সদস্য নিহত

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

গোলাগুলিতে ‘ঠোঁটে ল’ গ্রুপের ২ সদস্য নিহত

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে যৌথবাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলিতে দুই সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। বুধবার রাতে চাঁদ উদ্যান এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহতরা হলো জুম্মন (২৬) ও মিরাজ (২৫)। এরা দুজনই এলাকায় ভয়ংকর কিশোর গ্যাং ‘ঠোঁটে ল’ গ্রুপের সদস্য। বৃহস্পতিবার আইএসপিআর গোলাগুলির ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছে, ঘটনাস্থল থেকে ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরা হচ্ছে-হোসেন (২৩), মিরাজ (২৫), আল আমিন (২৪), মমিনুল (২০) ও মেহেদী (১৭)। বেশ কিছুদিন ধরে মোহাম্মদপুরসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অস্ত্র ঠেকিয়ে ছিনতাই, প্রকাশ্য দিবালোকে পথচারীদের কুপিয়ে সবকিছু ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা বাড়ছিল। এ নিয়ে গণমাধ্যমে একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হয়। এর পরই যৌথবাহিনী অভিযানে নামে। জনগণের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।

আইএসপিআর জানায়, চাঁদ উদ্যান এলাকায় ছিনতাইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে এমন তথ্যে যৌথবাহিনীর একটি টিম ঘটনাস্থলে অভিযানে যায়। এ সময় যৌথবাহিনীর সদস্যরা একটি গলির দুই পাশ ঘেরাও করলে সন্ত্রাসীরা একটি একতলা ভবনের ছাদ থেকে আভিযানিক দলটির ওপর অতর্কিত গুলি চালায়। আভিযানিক দলটিও আত্মরক্ষার্থে তৎক্ষণাৎ পালটা ব্যবস্থা গ্রহণ করে। পরে তল্লাশি চালিয়ে ছাদের ওপর থেকে দুজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। তাদের কাছ থেকে একটি পিস্তল, চার রাউন্ড গুলি এবং একটি চাপাতি উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের মোহাম্মদপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

স্থানীয়রা বলছেন, নিহতরা চাঁদ উদ্যান এলাকার ভয়ংকর কিশোর গ্যাং ‘ঠোঁটে ল’ গ্রুপের সদস্য। আটক পাঁচজনই কিশোর গ্যাং ‘লাল’ ও ‘ডায়মন্ড’ গ্রুপের সদস্য। যৌথবাহিনীর অভিযানের সময় চাঁদ উদ্যান, লাউতলা, বসিলা ৪০ ফিট, সাতমসজিদ হাউজিং ও সোনা মিয়ার টেক এলাকার কিশোর গ্যাং গ্রুপগুলো যৌথবাহিনীর সদস্যদের চারপাশ থেকে ঘিরে হামলা চালানোর চেষ্টা করে। এ সময় ‘ঠোঁটে ল’ গ্রুপের প্রধান দ্বীন ইসলাম ওরফে দিলা, ‘ফাডা আলামিনে’র নেতৃত্বে যৌথবাহিনীর ওপর হামলা চালায় ও গুলিবর্ষণ করে। অভিযানে দুজন নিহত হলেও দিলা ও ফাডা আলামিনসহ অনেকে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা জানান, এলাকায় কয়েকটি কিশোর গ্যাং গ্রুপ গড়ে উঠেছে। তারা দিনের আলো কিংবা রাতের আঁধারে পথচারীদের ওপর হামলা করে সব ছিনিয়ে নেয়। প্রতিদিনই ১৫-২০ জনের একটি গ্রুপের মহড় চলে। তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। মুখ খুললেই তার পরিবারের ওপর নেমে আসে ভয়াবহ নৃশংসতা।

ওই বাড়িটি দেখভালের দায়িত্বে থাকা বকুল বেগম জানান, রাত সাড়ে বারোটার দিকে দেখি বাড়ির চালের ওপর দৌড়াদৌড়ির শব্দ। ওই সময় বাড়ির চারদিকে সেনাবাহিনী ঘেরাও করে ফেলে। তখন আমাদের সবাইকে বাসার ভেতরে ঢুকে দরজা, লাইট বন্ধ করে দিতে বলে। শুনতে পাই যে, সেনাবাহিনী বলছে আপনারা অস্ত্র ফেলে দিয়ে দ্রুত আত্মসমর্পণ করেন। এভাবে প্রায় ২ ঘণ্টার মতো সেনাবাহিনী তাদের অনেক অনুরোধ করে। একপর্যায়ে আমরা গুলির শব্দ শুনতে পাই। পরে রাত প্রায় দুইটা-আড়াইটার দিকে আমাদের বাসার চালের ওপর থেকে দুজনের মরদেহ নামানো হয়। তিনি বলেন, আমি ৭ বছর ধরে এ বাড়ির ম্যানেজারের কাজ করছি। যারা মারা গেছে তাদের চিনি না। পাশেই ৫ নম্বর রোডের বাসিন্দা শাহাবুদ্দিন জানান, যারা মারা গেছে তারা সবাই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। বিকালেও ছুরি, চাপাতি নিয়ে রাস্তায় মহড়া দিয়ে গেছে। আতঙ্কে এ এলাকার লোকজন সন্ধ্যার পর চলাচল করতে পারে না।

তেজগাঁও বিভাগ মোহাম্মদপুর জোনের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) জুয়েল রানা জানান, যৌথবাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলিতে নিহতদের মরদেহ শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে আসা হয়েছে। তাদের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এছাড়া যাদের ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

পল্লবীতে অভিযানে গ্রেফতার ৫ : এদিকে ডিএমপি জানিয়েছে, একই রাতে পল্লবীতে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে দেশীয় অস্ত্রসহ ডাকাতদলের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে যৌথবাহিনী। এরা হলো-সাকিব (১৮), মো. ইয়াছিন (১৯), মো. শিমুল (২০), মো. সুজন (১৯) ও রাব্বী হাসান জয় (২০)। তাদের কাছ থেকে দুটি ছুরি, দুটি চাপাতি ও একটি রামদা উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানায়, এরা বালুর ঘাট বারনটেক এলাকার মামা ভাগিনা ভ্যারাইটিজ স্টোরের সামনে কয়েকজন দুষ্কৃতকারী ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এ সময় ৭-৮ জন দৌড়ে পালিয়ে যায়।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম