চূড়ান্ত হিসাবে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি (মোট দেশজ উৎপাদন) কমে দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ২২ শতাংশে। একই সময়ে প্রাথমিক হিসাবে এ হার ছিল ৫ দশমিক ৮২ শতাংশ। এর আগে ২০২২-২৩ অর্থবছরে চূড়ান্ত হিসাবে প্রবৃদ্ধির এ হার ছিল ৫ দশমিক ৭৮ শতাংশ। ২০২১-২২ অর্থবছরে ছিল ৭ দশমিক ১০ শতাংশ। এদিকে মাথাপিছু আয় কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭৩৮ ডলারে। প্রাথমিক হিসাবে এ আয় ছিল ২ হাজার ৭৮৪ ডলার। সেই সঙ্গে কমেছে বিনিয়োগ ও সঞ্চয়ও। সোমবার প্রকাশিত বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

বিবিএস বলছে, সাময়িক হিসাবের তুলনায় চূড়ান্ত হিসাবে জিডিপির প্রবৃদ্ধি কমার প্রধান কারণ হচ্ছে রপ্তানি আয়ের সংশোধিত হিসাবের প্রেক্ষিতে শিল্প উৎপাদনের নিম্নগতি।

বিবিএসের হিসাব মতে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে চলতি মূল্যে জিডিপির আকার হয়েছে ৫০ হাজার ২৭ বিলিয়ন টাকা বা ৪৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২২-২৩ অর্থবছরের চূড়ান্ত হিসাবে এটি ছিল ৪৪ হাজার ৯০৮ বিলিয়ন টাকা বা ৪৫২ বিলিয়ন ডলার। প্রতিবেদন পর্যালোচলা করে দেখা যায়, কৃষি খাতে চূড়ান্ত হিসাবে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ দশমিক ৩০ শতাংশ, যা সাময়িক হিসাবে ছিল ৩ দশমিক ২১ শতাংশ। এছাড়া ২০২২-২৩ অর্থবছরের চূড়ান্ত হিসাবে প্রবৃদ্ধি ছিল ৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ। এ হিসাবে কৃষি খাতে প্রবৃদ্ধি কমেছে। এছাড়া শিল্প খাতে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের চূড়ান্ত হিসাবে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ দশমিক ৫১ শতাংশ, যা সাময়িক হিসাবে ছিল ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ। এছাড়া ২০২২-২৩ অর্থবছরের চূড়ান্ত হিসাবে প্রবৃদ্ধি ছিল ৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ। সেবা খাতে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ০৯ শতাংশ, যা সাময়িক হিসাবে ছিল ৫ দশমিক ৮০ শতাংশ। এছাড়া ২০২২-২৩ অর্থবছরের চূড়ান্ত হিসাবে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল ৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ। দেখা যাচ্ছে সব খাতেই জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমেছে। এদিকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় কমে হয়েছে ৩ লাখ ৪ হাজার ১০২ টাকা, বা ২ হাজার ৭৩৮ মার্কিন ডলার। একই সময়ের প্রাথমিক হিসাবে এই আয় ছিল ৩ লাখ ৬ হাজার ১৪৪ টাকা বা ২ হাজার ৭৮৪ ডলার। ২০২২-২৩ অর্থবছরের চূড়ান্ত হিসাবে মাথাপিছু আয় ছিল ২ লাখ ৭৩ হাজার ৩৬০ টাকা বা ২ হাজার ৭৪৯ মার্কিন ডলার।

বিবিএস’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের চূড়ান্ত হিসাবে জিডিপির অনুপাতে মোট বিনিয়োগ কমে দাঁড়িয়েছে ৩০ দশমিক ৭০ শতাংশ, যা প্রাথমিক হিসাবে ছিল ৩০ দশমিক ৯৮ শতাংশ। এছাড়া ২০২২-২৩ অর্থবছরে চূড়ান্ত হিসেবে মোট বিনিয়োগ ছিল ৩০ দশমিক ৯৫ শতাংশ এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে ছিল জিডিপির ৩২ দশমিক ০৫ শতাংশ।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, চূড়ান্ত হিসাবে দেশজ সঞ্চয় কমে দাঁড়িয়েছে ২৩ দশমিক ৯৬ শতাংশে, যা প্রাথমিক হিসাবে ছিল ২৭ দশমিক ৬১ শতাংশ। এছাড়া ২০২২-২৩ অর্থবছরের চূড়ান্ত হিসাবে সঞ্চয় ছিল ২৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ। এদিকে জাতীয় সঞ্চয় কমে দাঁড়িয়েছে ২৮ দশমিক ৪২ শতাংশ, যা প্রাথমিক হিসাবে ছিল ৩১ দশমিক ৮৬ শতাংশ। ২০২২-২৩ অর্থবছরের চূড়ান্ত হিসাবে জাতীয় সঞ্চয় ছিল ২৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ।