অমর একুশে বইমেলা ২০২৫
ছুটির দিনে জমে উঠবে আজ
![Icon](https://cdn.jugantor.com/uploads/settings/icon_2.jpg)
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
![ছুটির দিনে জমে উঠবে আজ](https://cdn.jugantor.com/assets/news_photos/2025/02/07/ezgif-2319199c8e671-67a542d255253.jpg)
বইমেলার প্রথম শুক্রবার আজ। ছুটির দিন হিসাবে বেশ জমে উঠবে। মেলায় থাকবে জনস্রোত। যার রেশ থাকবে পরদিন শনিবারও। শুক্রবার বইমেলা শুরু হবে বেলা ১১টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। এদিন বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত মেলায় থাকবে শিশুপ্রহর। অমর একুশে উদ্যাপনের অংশ হিসাবে সকাল সাড়ে ৮টায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। এর উদ্বোধন করবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের প্রাচ্যকলা বিভাগের অধ্যাপক ড. আবদুস সাত্তার। সকাল ১০টায় বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে শিশু-কিশোর আবৃত্তি প্রতিযোগিতার প্রাথমিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
শুক্রবারের ছুটির আমেজ বইমেলায় শুরু হয়ে যায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই। সাধারণ পাঠকদের পাশাপাশি এদিন অফিস-ফেরত অনেকের গন্তব্য ছিল বইমেলায়। প্রচুর মানুষ বইমেলায় এসেছেন এবং বই কিনেছেন। হাতে হাতে দেখা গেছে বই। অনেকে আবার পরিবার-পরিজন নিয়ে এসেছিলেন বইয়ের এই উৎসবে।
রাজধানীর মিরপুর থেকে বইমেলায় আসা আশরাফ প্রান্ত যুগান্তরকে বলেন, মেট্রোরেলে চেপে খুব সহজে বইমেলায় আসা-যাওয়া করা যায়। এটা উত্তরাসহ আমরা মিরপুরবাসীর জন্য বড় পাওয়া। বই পড়তে ভালোবাসি। আর বইমেলা হলো নতুন নতুন বই সংগ্রহের সবচেয়ে বড় আয়োজন। যখন ছাত্র ছিলাম তখন প্রায় প্রতিদিনই বইমেলায় আসতাম। কিন্তু এখন সেটি হয়ে উঠে না পেশাগত ব্যস্ততার কারণে। বৃহস্পতিবার অফিস শেষ হওয়ামাত্র মেলায় ছুটে এসেছি।
অবসর প্রকাশনীর ব্যবস্থাপক মাসুদ রানা বলেন, মেলার প্রথম শুক্রবার হিসাবে ভালো বিক্রির আশা করছি। শনিবারও মেলায় সত্যিই জনস্রোত থাকবে এবং বই বিক্রি ভালো হবে আশা করি। সামনে পহেলা ফাল্গুন এবং ভ্যালেন্টাইস ডে। এদিনও অনেক পাঠক মেলায় আসবেন।
ঐতিহ্যর ব্যবস্থাপক আমজাদ হোসেন কাজল বলেন, এবার শুরু থেকেই আমাদের বিক্রি মন্দ নয়। তবে প্রথম শুক্রবার হিসাবে আরও বেশি লোকসমাগম ও বিক্রি আশা করছি। মেলা জমবে নিঃসন্দেহে। বই যারা কিনে পড়েন তাদের বড় অংশ মধ্যবিত্ত পরিবারের বা চাকরিজীবী মানুষ। তাদের অনেকের হাতেই ইতোমধ্যে বেতন চলে এসেছে।
বৃহস্পতিবার বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘স্মরণ : মাহবুবুল হক’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তারিক মনজুর। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন মাহবুব বোরহান এবং মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান। সভাপতিত্ব করেন সৈয়দ আজিজুল হক।
প্রাবন্ধিক বলেন, মাহবুবুল হক বাংলাদেশের একজন প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ ও ভাষাবিজ্ঞানী। বাংলা ভাষার ব্যাকরণ প্রণয়ন এবং বাংলা বানান সংস্কারে তিনি নিবিড়ভাবে কাজ করেছেন। দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে তার অবদান যুগান্তকারী। তিনি প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের বাংলা পাঠ্যবই রচনা ও সম্পাদনার কাজ করেছেন। মাহবুবুল হক কার্যকর অর্থেই রাষ্ট্রীয় ও প্রয়োগ-উপযোগী ভাষা হিসাবে বাংলা ভাষাকে দেখতে চেয়েছেন। এর সফলতার জন্য তিনি ভাষার অবয়ব পরিকল্পনায় প্রত্যক্ষভাবে কাজ করেছেন। শিক্ষকতা তার পেশা হলেও তিনি সর্বসাধারণের কাছে একজন ভাষাবিজ্ঞানী ও পাঠ্যবইয়ের লেখক হিসাবেই পরিচিতি লাভ করেন।
সভাপতির বক্তব্যে সৈয়দ আজিজুল হক বলেন, মাহবুবুল হক বাংলা ভাষার উৎকর্ষ সাধনে আজীবন নিবেদিত ছিলেন। প্রগতিশীল রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততার কারণেই তিনি একজন মানবিক, সুশৃঙ্খল এবং সামাজিক দায়বোধসম্পন্ন মানুষ হয়ে উঠতে পেরেছিলেন। তার আলোকিত জীবন ও সৃজন আমাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা জোগাবে।
লেখক বলছি মঞ্চে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন-টোকন ঠাকুর ও জাকির আবু জাফর।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন-কবি সাখাওয়াত টিপু ও কবি জব্বার আল নাঈম। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী শহীদুল ইসলাম ও আশরাফুল হাসন বাবু। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী আজগর আলীম, সৈয়দ আশিকুর রহমান, খায়রুল ওয়াসি, মো. মানিক, অগ্নিতা শিকদার মুগ্ধ এবং আঁখি আলম।
বইমেলার ২ দিনের পরিবর্তিত সময়সূচি : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার কারণে ৮ ফেব্রুয়ারি শনিবার ও ১৫ ফেব্রুয়ারি শনিবার অমর একুশে বইমেলা শুরু হবে বেলা ১১টার পরিবর্তে দুপুর ২টায়। এই ২ দিন মেলায় থাকবে না পূর্বঘোষিত শিশুপ্রহর।