শহিদ পরিবারের শাহবাগ অবরোধ
সারজিসের আশ্বাসে সাত ঘণ্টা পর কর্মসূচি প্রত্যাহার
রোববার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ
![Icon](https://cdn.jugantor.com/uploads/settings/icon_2.jpg)
ঢাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
![সারজিসের আশ্বাসে সাত ঘণ্টা পর কর্মসূচি প্রত্যাহার](https://cdn.jugantor.com/assets/news_photos/2025/02/07/ezgif-63aa881970367-67a5422f4dfd1.jpg)
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহিদ ও আহতদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়াসহ ছয় দফা দাবিতে রোববার শাহবাগ মোড় অবরোধ করা হয়। বেলা সোয়া ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত (৭ ঘণ্টা) এই কর্মসূচি পালন করেন শহিদ ও আহতদের পরিবারের সদস্যরা। পরে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে অবরোধ তুলে নেন তারা।
কর্মসূচি চলাকালে অবরোধকারীরা শহিদদের ছবি এবং ন্যায়বিচারের দাবি সংবলিত প্ল্যাকার্ড বহন করেন। কর্মসূচির ফলে শাহবাগের চারদিকের রাস্তায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। এর আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে সমাবেশ করেন শহিদ পরিবারের সদস্যরা। ৪ আগস্ট মিরপুরে শহিদ হন শাহরিয়ার আলভী। তার বাবা আবুল হাসান সমাবেশে বলেন, ‘গুলি আমার ছেলের পেট ভেদ করে বেরিয়ে যায়। শেষ সময়ে তার সঙ্গে আমি দেখা করতে পারিনি। হত্যাকাণ্ডের ৬ মাস অতিবাহিত হলেও বিচার দেখতে পাচ্ছি না। আমরা আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছি। ওই ট্রাইব্যুনাল রঙ্গমঞ্চে পরিণত হয়েছে। তারা এখনো ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করতে পারেনি।’
২৬ জানুয়ারি ড. ইউনূসের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েও দেখা করতে পারেননি শহিদ পরিবারের সদস্যরা। এ প্রসঙ্গে শহিদ ইমাম হোসেনের ভাই রবিউল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার দেখা করার কথা ছিল। কিন্তু দেখা করেননি তিনি। তাহলে শহিদ পরিবার কোথায় যাবে? আজকে ড. ইউনূস এখানে আসবেন। তা না হলে আমরা শহিদ পরিবার সব মামলা প্রত্যাহার করে নেব।’
বেলা সাড়ে ৩টার দিকে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এসএন মো. নজরুল ইসলাম অবরোধকারীদের বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা রোববার আপনাদের সঙ্গে বসবেন। তাই আপনার অবরোধ তুলে নেন।’ তবে শহিদ পরিবারের সদস্যরা মানেননি। তারা বলেন, ‘আজই প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাই।’
সন্ধ্যা ৬টার দিকে সারজিস আলম এসে রোববার প্রধান উপদেষ্টা তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন-এমন আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। এ সময় সারজিস আলম বলেন, ‘আহত ও শহিদ পরিবারকে জুলাই ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে যে সাহায্য দেওয়া হয়েছে তা পর্যাপ্ত নয়। এটা দিয়ে পরিবারগুলো হয়তো কয়েক মাস চলতে পারবে। শহিদ পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য যত দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দরকার ছিল তা সরকার নিতে পারেনি। শহিদদের অনেকের আয়ে পরিবার চলত। সেই পরিবারগুলো তাদের দাবি নিয়ে এসেছে-এটি আমাদের জন্য লজ্জার।’
তিনি বলেন, ‘রোববার প্রধান উপদেষ্টা শহিদ পরিবারদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার ইচ্ছা পোষণ করেছেন। সেদিন শহিদ পরিবারের পক্ষ থেকে যৌক্তিক সব দাবি তুলে ধরা হবে।’
সারজিস আলম বলেন, ‘যে খুনি হাসিনার নির্দেশে আমার হাজার হাজার ভাইকে খুন করা হয়েছে; সেই হাসিনা ভারতে বসে নির্লজ্জের মতো অনলাইনে ভাষণ দেন। তার বিচার অবশ্যই হবে। দেশে এনে তার বিচার করা হবে। তার বিচারে মঞ্চ হবে ফাঁসির মঞ্চ।’
শহিদ পরিবারের স্বজনদের দাবিগুলো হলো : প্রতিটি হত্যার আসামিদের ১০ দিনের মধ্যে গ্রেফতার করতে হবে। শহিদ ও আহতদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে হবে। শহিদ পরিবারের দ্রুত পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। শহিদ পরিবারগুলোকে ন্যায্য সম্মানি দিতে হবে। শহিদদের বীরের মর্যাদা দিতে হবে।