পঞ্চগড়ে ৭.৯ ডিগ্রি তাপমাত্রা
হাড় কাঁপানো শীতে জবুথবু জনজীবন
পঞ্চগড় প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
পঞ্চগড়ে বইছে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। মাঘের হাড় কাঁপানো শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। দেশের সর্ব উত্তরের এই জেলায় রোববার সকালে তাপমাত্রা নেমেছে ৭ ডিগ্রির ঘরে, যা সারা দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন। উত্তরের হিমালয় থেকে বয়ে আসা হিমশীতল হাওয়া ও ঘন কুয়াশায় পঞ্চগড়ে শীতের তীব্রতা বেড়েই চলেছে দিন দিন। ঘন কুয়াশার সঙ্গে বইছে উত্তরের ঝিরিঝিরি হিমেল বাতাস। রাতভর কুয়াশা থাকায় ভিজছে পিচঢালা পথও। কুয়াশায় সকাল ১১টা পর্যন্ত যানবাহনগুলো চলেছে হেডলাইট জ্বালিয়ে। রোববার সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে এ মৌসুমের দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। তবে এদিন বেলা ১১টার পর সূর্যের দেখা মিললেও আলো তেমন উত্তাপ ছড়াতে পারেনি। সন্ধ্যার পর থেকেই প্রতিদিন শুরু হয় হিমেল হাওয়া আর রাতে বৃষ্টির মতো ঝরছে কুয়াশা। ফলে খুব বেশি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া লোকজন তেমন ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে হাটবাজারগুলোতেও লোকসমাগম কমে আসছে। প্রচণ্ড ঠান্ডায় চরম বিপাকে পড়েছে কর্মজীবী সাধারণ মানুষ। এমন বৈরী আবহাওয়ায় দু’বেলা দুমুঠো খাবার জোগাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। তবে অনেকেই তীব্র শীতকে উপেক্ষা করে গরম কাপড় জড়িয়ে জীবিকার তাগিদে ছুটছেন কাজের সন্ধানে। এদিকে প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্রের অভাবে দরিদ্র ছিন্নমূল মানুষ সীমাহীন কষ্টের মধ্যে দিনাতিপাত করছেন। এখন পর্যন্ত ২ লক্ষাধিক শীতার্তের বিপরীতে জেলায় সরকারিভাবে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে মাত্র ১৫ হাজার পিস। এ ছাড়া বেসরকারিভাবে প্রায় ১৫ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। নিরুপায় হয়ে কনকনে ঠান্ডায় ছিন্নমূল ও অভাবী লোকজন খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। বিশেষ করে তেঁতুলিয়ার মহানন্দা নদীতে তীব্র ঠান্ডার মধ্যে পাথর উত্তোলন কাজে ও চা বাগানগুলোতে কর্মরত প্রায় ৫০ হাজার শ্রমিক অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ রায় বলেন, এ মাসের শেষের দিকে তেঁতুলিয়াসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে আরও ২টি শৈত্যপ্রবাহ আসতে পারে। এ সময় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সেই সঙ্গে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।
এদিকে পঞ্চগড় সদর আধুনিক হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, শীতের তীব্রতা বৃদ্ধির দরুন এলাকায় ঠান্ডাজনিত নানা রোগে প্রতিদিন অসংখ্য শিশু ও বয়স্করা সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। হাসপাতালগুলোর বহির্বিভাগে প্রতিদিন রোগীর ভিড় নজরে পড়ছে। চিকিৎসকরা এ মুহূর্তে বিশেষ করে বয়স্ক ও শিশুদের বাড়তি যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন।