প্রথমবারের মতো ৫ জনের শরীরে শনাক্ত ‘ব্যাট-রিওভাইরাস’
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
দেশে প্রথমবারের মতো মানবদেহে ‘ব্যাট-রিওভাইরাস’ নামে ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। সম্প্রতি নিপা ভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে আসা ৪৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে পাঁচজনের দেহে এ ভাইরাসের অস্তিত্ব পায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। তবে আক্রান্ত সবাই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন বলেও জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। শুক্রবার আইইডিসিআর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রতিষ্ঠানটির এক কর্মকর্তা বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার হচ্ছে যে, দেশে প্রথমবার রিওভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ব্যাপারটি আসলে এরকম নয়। রিওভাইরাসের সাধারণত ৯টি ধরন হয়। এর মধ্যে ৪টি ধরন মানবদেহে পাওয়া যায়। বাকিগুলো অস্তিত্ব এখন পর্যন্ত মানবদেহে পাওয়া যায়নি। আর রিওভাইরাসেরই একটি ধরন ব্যাট-রিওভাইরাস, যা বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো পাওয়া গেছে। তিনি আরও বলেন, রিওভাইরাসের উপস্থিতি দেশে অনেক আগে থেকেই আছে। রোটা ভাইরাসও রিওভাইরাসের একটি ধরন, যেটি আক্রান্তের কথা দেশের সচরাচরই শোনা যায়। তবে ব্যাট রিওভাইরাস দেশে প্রথম। এ ভাইরাসের উপস্থিতি সাধারণত বাদুড়ে পাওয়া যায়। যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে নতুন রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণুর ওপর নিয়মিত গবেষণার অংশ হিসাবে এ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল বলেও তিনি জানান।
আইইডিসিআরের এ কর্মকর্তা বলেন, গণমাধ্যমে বিষয়টি এমনভাবে এসেছে যেন এটি বাংলাদেশে বড় কিছু। কিন্তু যেই পাঁচজনের মধ্যে আমরা ভাইরাসের উপস্থিতি পেয়েছিলাম তারা খুব স্বল্প সময়ের চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। সুতরাং বুঝতেই পারছেন যে এটা খুব বেশি কনসার্নের বিষয় নয়।
এর আগে আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন বলেন, খেজুরের কাঁচা রস খেয়ে প্রতিবছর নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হন অনেকে। তেমন লক্ষণ দেখে সম্প্রতি ৪৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে আইইডিসিআর। এদের মধ্যে নিপা ভাইরাস না মিললেও পাঁচজনের শরীরে পাওয়া গেছে নতুন এ ভাইরাসটি। ব্যাট-রিওভাইরাসের লক্ষণ ও উপসর্গ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ ভাইরাসটি একজন থেকে অন্যজনে ছড়ায় মূলত হাঁচি-কাশির মাধ্যমে। আক্রান্ত হলে শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা, জ্বর, মাথাব্যথা, বমি ও ডায়রিয়া হতে পারে। মারাত্মক হলে নিউমোনিয়া, এমনিক এনকেফালাইটিস বা মস্তিষ্কের প্রদাহও দেখা দিতে পারে। বেশি আক্রান্ত হয় শিশু ও বয়স্করা। দেশে অনেক এনকেফালাইটিস রোগী পাওয়া গেছে। কিন্তু কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। গবেষণা এসব রোগীর চিকিৎসায় কাজে দেবে বলেও জানান আইইডিসিআর পরিচালক।