মজুতদারির কারণে চালের দাম বেড়েছে: বাণিজ্য উপদেষ্টা
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ছবি: সংগৃহীত
মজুতদারির কারণে চালের দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি বলেছেন, প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী বাজারে চালের ঘাটতি নেই। সরকারের চালের মজুত, স্থানীয় উৎপাদন ও সংগ্রহে ঘাটতি নেই। পাশাপাশি আমনের ভরা মৌসুম চলছে। এখন চালের দাম বেড়ে যাওয়া অযৌক্তিক। বুধবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বেগুনবাড়ি এলাকার দীপিকার মোড়ে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) জানুয়ারি মাসের পণ্য বিক্রির কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মোস্তফা ইকবাল ও নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. ফয়সাল আজাদ উপস্থিত ছিলেন।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘চালের দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যাপকভাবে আমদানির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। খুব শিগগিরই বাজার নিয়ন্ত্রণে আসবে। তবে চালের মূল্যবৃদ্ধির সমস্যা স্বীকার করতে হবে। ভোক্তা পর্যায়ে বিশেষ করে নাজিরশাইল ও মিনিকেট এ দুটি চালের দাম বেশ খানিকটা বেড়েছে। পাইকারি পর্যায়ে যে মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে, তার চেয়ে খুচরা পর্যায়ে অনেক বেশি দাম বেড়েছে। এর কারণ খোঁজার চেষ্টা চলছে। সার্বিকভাবে মূল্যবৃদ্ধি অযৌক্তিক মনে হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘চালের মূল্যবৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে সরকার আমদানি উদারীকরণের নীতিতে যাচ্ছে। আমদানি উদার করতে গত দুদিন আমরা গভর্নর, খাদ্য উপদেষ্টা, টিসিবি ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বাজারে সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নতিতে আপাতত আমদানিকেন্দ্রিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘বিপুল পরিমাণে চাল আমদানির প্রস্তুতি চলছে। এতে স্থানীয় বাজারে দাম কমবে। আলুর ক্ষেত্রেও এমন ঘটনা দেখা গেছে। আলুর মূল্যবৃদ্ধির পর আমদানি উদার করায় দাম কমে আসে। বিগত সময়ের অভিজ্ঞতায় আগামী বছরের জন্য সরকারিভাবে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। আমদানি ও দেশে উৎপাদিত আলু সংরক্ষণ করা হবে। আশা করা যাচ্ছে আগামীতে আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে।’
ডলারের কোনো সংকট নেই জানিয়ে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘গত বছর আমাদের সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে। আমাদের রপ্তানি প্রায় ১৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ঘটেছে। ব্যাংকে ডলার সংকট, এই তথ্য সঠিক নয়। ব্যাংকে কোনো ডলার সংকট নেই।’
টিসিবির নতুন স্মার্টকার্ডের (পরিবার কার্ড) নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘কাগজের ব্যবস্থা আজ থেকে বাতিল হলো। নতুন স্মার্টকার্ডেই এখন থেকে টিসিবির পণ্য বিক্রি হবে। আগে টিসিবির কার্ড নিয়ে নৈরাজ্য ও দুর্বৃত্তায়ন হয়েছে। সেই সমস্যা সংশোধনে প্রথম উদ্যোগ হিসাবে স্মার্টকার্ডের মাধ্যমে পণ্য বিতরণ শুরু করেছি। এখন পর্যন্ত মোট ৬৩ লাখ স্মার্টকার্ড বিতরণ করা হয়েছে। আরও ৩৫ থেকে ৪০ লাখ কার্ড দেওয়া যাবে। টিসিবির বিক্রয় কার্যক্রমের পাশাপাশি ক্রয় কার্যক্রমেও স্বচ্ছতা আনার কাজ চলছে।’
প্রসঙ্গত, বুধবার থেকে টিসিবি জানুয়ারি মাসের ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রি কার্যক্রম শুরু করেছে। এতে স্মার্টকার্ডধারী পরিবারের একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ দুই লিটার ভোজ্যতেল (সয়াবিন বা কুঁড়ার তেল), দুই কেজি মসুর ডাল ও এক কেজি চিনি কিনতে পারবেন। এর মধ্যে প্রতি লিটার ভোজ্যতেলের দাম ১০০ টাকা, প্রতি কেজি মসুর ডাল ৬০ টাকা এবং চিনি ৭০ টাকা ধরা হয়েছে। গত বছর টিসিবির পণ্যের তালিকায় চালও ছিল। এবার চাল বিক্রি করছে না সংস্থাটি।