ওয়াসার তাকসিমসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা ওয়াসার অর্গানোগ্রামে পরিচালক (উন্নয়ন) ও পরিচালক (কারিগর) হিসাবে কোনো পদ না থাকলেও সেই দুই পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ এবং এর মাধ্যমে বেতন-ভাতা বাবদ সরকারের এক কোটি ৯৮ লাখ ৬৫ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে একটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মামলায় ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী তাকসিম এ খানসহ ১০ জনকে আসামি করা হয়েছে। বুধবার কমিশনের সমন্বিত কার্যালয় ঢাকা-১ এ দুদকের উপপরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন বলে সংস্থাটির মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন জানিয়েছেন।
এর আগে ২০২৩ সালের এপ্রিলে এ মামলা দায়েরের জন্য কমিশনের কাছে সুপারিশ করলেও অনুমোদন পাননি অভিযোগ অনুসন্ধান কর্মকর্তা সৈয়দ নজরুল। ৫ আগস্টের পর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ফলে দুর্নীতি দমন কমিশনও পরিবর্তন হয়। এরপর এ ধরনের মামলা দায়েরে সুপারিশের জট খুলতে থাকে।
যাদের নিয়োগ দেওয়া হয় তারা হলেন-পরিচালক (উন্নয়ন) মো. আবুল কাসেম ও পরিচালক (কারিগর) একেএম সহিদ উদ্দিন। ওয়াসার ২৫২তম বোর্ডসভায় তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়। ওই বোর্ডসভার সভাপতি ছিলেন সংস্থাটির তৎকালীন চেয়ারম্যান অধ্যাপক প্রকৌশলী মো. হাবিবুর রহমান।
আর বোর্ডের ৭ জন সদস্য হলেন এমডি তাকসিম এ খান, অতিরিক্ত সচিব (অবসর) সুধাংশু শেখর বিশ্বাস, এফসিএ ভাইস প্রেসিডেন্ট মু. মাহমুদ হোসেন, বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের প্রতিনিধি প্রকৌশলী মো. নুরুজ্জামান, বাংলাদেশ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সভাপতি প্রকৌশলী একেএম হামিদ, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সংরক্ষিত আসন-১২ এর কাউন্সিলর আলেয়া সারোয়ার ডেইজী ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. হাসিবুর রহমান মানিক।
মামলায় তাদের সবাইকে আসামি করা হয়েছে বলে দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বোর্ড সদস্যরা মূলত এ অবৈধ নিয়োগের পক্ষে মতামত প্রদান করেছেন।’
নিয়োগপ্রাপ্ত দুজন পরিচালক অবৈধভাবে নিয়োগ পেয়ে সুবিধাভোগী হিসাবে ২০১৮ সালের ৪ এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের আগস্ট পর্যন্ত ১ কোটি ৯৮ লাখ ৬৫ হাজার টাকা আত্মসাৎ করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
২০০৯ সালে ঢাকা ওয়াসার এমডি হিসাবে নিয়োগ পান প্রকৌশলী তাকসিম এ খান। এরপর ধাপে ধাপে সময় বাড়িয়ে এখনো এ পদে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন পর্যন্ত বহাল ছিলেন।
বিতর্কিত এমডি তাকসিম এ খানের পুনর্নিয়োগের ক্ষেত্রেও বিধি অমান্য করার অভিযোগ রয়েছে। ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খানসহ অন্যদের বিরুদ্ধে সংস্থাটির পদ্মা জশলদিয়া প্রকল্পে প্রায় ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা, গন্ধর্বপুর পানি শোধনাগার প্রকল্পে ১ হাজার কোটি টাকা, দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার প্রকল্পে ১ হাজার কোটি টাকা, গুলশান বারিধারা লেক দূষণ প্রকল্পে ৫০ কোটি টাকার অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে দুদকে।
এ ছাড়া প্রকল্প ব্যয় বাড়ানো, ঠিকাদার নিয়োগে সিন্ডিকেট, ঘুস লেনদেন, পছন্দের লোককে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ, অপছন্দের লোককে ওএসডি করা, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনসহ নানা অভিযোগ রয়েছে ওয়াসার এমডিসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে।