চট্টগ্রাম আদালতে সরকারি আইনজীবীর বারান্দা থেকে ১ হাজার ৯১১টি মামলার কেস ডকেট বা সিডি উধাও হয়ে গেছে। এ ঘটনায় রোববার থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, আদালতের অবকাশকালীন ছুটির কারণে ১৩ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মহানগর পিপি কার্যালয় বন্ধ ছিল। কেস ডকেটগুলো এই সময়ের মধ্যে উধাও হয়েছে। সোমবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) উপকমিশনার মো. রইছ উদ্দিন বলেন, ‘কেস ডকেট হারানোর বিষয়ে থানায় একটি জিডি হয়েছে। সেটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ রোববার চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মফিজুল হক ভুঁইয়া কেস ডকেট উধাওয়ের ঘটনায় নগরীর কোতোয়ালি থানায় জিডি করেন। জিডিতে তিনি উল্লেখ করেন, চট্টগ্রাম মহানগর পিপি কার্যালয়ে ২৮ থেকে ৩০টি আদালতের কেস ডকেট রক্ষিত ছিল। জায়গা স্বল্পতার কারণে ২০২৩ সালের ২৪ এপ্রিল থেকে পিপি কার্যালয়ের সামনের বারান্দায় প্লাস্টিকের বস্তায় ১ হাজার ৯১১টি মামলার কেস ডকেট পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় রাখা ছিল। গত ১৩ থেকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে কেস ডকেটগুলো হারিয়ে গেছে। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও সেগুলো পাওয়া যায়নি।

উধাও হওয়া কেস ডকেটগুলোর মধ্যে হত্যা, মাদক, চোরাচালান, বিস্ফোরণসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মামলা রয়েছে। এসব কেস ডকেট বিচারিক কাজের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নথি না থাকলে অপরাধ প্রমাণ করা কঠিন হয়ে যাবে বলছেন আইনজীবীরা।

তবে পিপি মফিজুল হক ভুঁইয়া যুগান্তরকে বলেন, ‘উধাও বা হারানো কেস ডকেটগুলো জুডিশিয়াল নথি নয়। এতে বিচারকাজে কোনো ধরনের বাধা সৃষ্টি হবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘কেস ডকেটগুলো আমাকে কেউ বুঝিয়ে দেয়নি বা আমি বুঝে নেইনি। বারান্দায় বস্তাটি না থাকায় আমি নিজ থেকেই সবাইকে জানিয়েছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবাই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করার কথা রয়েছে।’

সুপ্রিমকোর্ট বার সভাপতির উদ্বেগ : চট্টগ্রাম আদালতে নথি হারানোর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সুপ্রিমকোর্ট বার সভাপতি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। সেই সঙ্গে এ ঘটনা কোনো ষড়যন্ত্র কিনা তা খতিয়ে দেখা উচিত বলেও মনে করেন তিনি। সোমবার দুপুরে হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।

মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, নথি গায়েবের ঘটনায় জিডি করাই সমাধান নয়, এ বিষয়ে মামলা করতে হবে। চট্টগ্রামে আদালতের নথি গায়েবের ঘটনা ষড়যন্ত্র কিনা তা খতিয়ে দেখা দরকার।