Logo
Logo
×

শেষ পাতা

অতীতের ভুল নীতির মূল্য দিতে হচ্ছে: অর্থ উপদেষ্টা

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

অতীতের ভুল নীতির মূল্য দিতে হচ্ছে: অর্থ উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, দুর্নীতি ও অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি অতীতে অনেক ভুল নীতি গ্রহণ করা হয়েছিল এবং এর জন্য আমাদের মূল্য দিতে হচ্ছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে রোববার ‘বাংলাদেশ-সৌদি আরব অর্থনৈতিক এনগেজমেন্ট’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদনের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এখন ভর্তুকি, সস্তা অর্থ এবং কম সুদের দিন শেষ। এগুলো প্রতিযোগিতামূলক অর্থনীতির চিহ্ন নয়। আমরা আর কতদিন শিশু থাকব। তৈরি পোশাকশিল্প ১৯৮০-এর দশকে চালু হয়েছে এবং ৪৫ বছর পরও এটি শিশু অবস্থায় রয়েছে।

তিনি বলেন, বিভিন্ন উৎস থেকে অর্থ সংগ্রহ করা হচ্ছে। গত কয়েক সপ্তাহে আমরা ১৬০ কোটি ডলার পেয়েছি এবং অল্পদিনের মধ্যে আরও ৭০ কোটি ডলার পাব। সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, তবে অর্থ সংগ্রহ করা বড় বিষয় নয়। বড় বিষয় হচ্ছে কোথায় অর্থ ব্যয় হচ্ছে এবং কীভাবে অর্থ পরিশোধ করা হচ্ছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য সহায়তা বা অনুদান বড় বিষয় নয়, বরং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ব্যবসা। সৌদি আরবের সঙ্গে আমাদের ২০০ কোটি ডলারের বাণিজ্য আছে এবং এটি বৃদ্ধির সুযোগ আছে বলে তিনি জানান।

তিনি বলেন, সৌদি কোম্পানি আরামকো বাংলাদেশে এসেছিল, কিন্তু তাকে স্বাগত জানানো হয়নি। একই কথা সত্যি স্যামসাংয়ের ক্ষেত্রেও। তারা এসেছিল, তাদেরও স্বাগত জানানো হয়নি। তারা ভিয়েতনামে চলে গিয়েছিল।

সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আমরা সংস্কারের লক্ষ্যে এক থেকে দেড় বছরের জন্য এসেছি। আমরা বেশিদিন থাকব না। কিছু ভালো কাজের উদাহরণ রেখে যেতে চাই। আমরা একটি মেঠোপথ রেখে যাব, অন্যরা যেন সে পথে এগিয়ে যেতে পারেন। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের বহুমাত্রিক সম্পর্ক। আমাদের জন্য ব্যবসা-বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক বিবেচনায় সৌদির গুরুত্ব অনেক। অনেক দেশ আমাদের সঙ্গে মুক্তবাণিজ্য করার কথা বলছে। আমরা মুক্তবাণিজ্য করার জন্য প্রস্তুত হচ্ছি। বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। সরকারের একার পক্ষে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। বেসরকারি খাতের সহায়তা দরকার।

অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন দেশে-বিদেশে দক্ষ কর্মীর প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আমাদের দক্ষ কর্মীর অভাব। এটা শুধু যে সৌদি আরবের জন্যই, বিষয়টি এমন নয়, সারা বিশ্বে দক্ষ কর্মীর যে চাহিদা সেই অনুযায়ী দক্ষ কর্মী আমরা তৈরি করতে পারছি না। আমরা যত বেশি দক্ষ কর্মী তৈরি করতে পারব তারা তত বেশি দেশের জন্য অবদান রাখতে পারবে। দক্ষ কর্মী তৈরিতে আমাদের দক্ষতার ভিত্তিতে উন্নতি এবং প্রশিক্ষণ দরকার।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে অর্থনৈতিক সুযোগ আকৃষ্ট করার জন্য অনেক কিছু করতে হবে। এই বাস্তবতা আমাদের মেনে নিতে হবে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছি যে, আমাদের দেশ সবচেয়ে ভালো বিনিয়োগবান্ধব, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটি সব সময় সত্যি নয়। বর্তমান সরকার অবস্থার পরিবর্তন করার চেষ্টা করছে এবং বিনিয়োগকারীদের জন্য আমরা ব্যবসা সহজ করার ব্যবস্থা নিচ্ছি। এখন যদি সৌদি বিনিয়োগকারীরা আসেন তবে ভালো একটি পরিবেশ দেখতে পাবেন বলে তিনি জানান। সৌদি রাষ্ট্রদূত ইসা ইউসেফ ইসা আলদুহাইলান বলেন, আরামকো ২০১৬ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল নিয়ে তিনবার বাংলাদেশে এসেছিল, কিন্তু তাদের কেউ অভ্যর্থনা জানায়নি। কিন্তু আমরা অতীত নিয়ে কথা বলব না। আমরা ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলব।

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় তেল কোম্পানি আরামকো বাংলাদেশে আসতে আগ্রহী। তারা বঙ্গোপসাগরে একটি তেল শোধনাগার স্থাপন করতে চায়। যদি এখানে একটি তেল শোধনাগার থাকে এবং তেলজাতীয় পণ্য উৎপাদন করে তবে সেখান থেকে বাংলাদেশও এই অঞ্চলে পণ্য সরবরাহ করতে পারবে। যদি আমরা চিটাগাং থেকে জেদ্দা বা দাম্মামের মধ্যে একটি সমুদ্রপথ তৈরি করতে পারি, তবে সেটি বাংলাদেশ ও এই অঞ্চলে বড় ধরনের পরিবর্তন আনবে। এই তেল শোধনাগারের পণ্য চীন, ভারত ও প্রতিবেশী দেশগুলোতে পাঠানো সম্ভব বলে তিনি জানান।

আমাদের কিছু সফলতার গল্প আছে। আমাদের আন্তর্জাতিক কোম্পানি রেড সি পতেঙ্গা টার্মিনাল অপারেট করছে এবং তারা মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দরে কাজ করতে চায় বলে জানান সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত। অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন, পররাষ্ট্র সচিব (পূর্ব) মো. নজরুল ইসলাম এবং পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ বক্তব্য দেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম